স্রেফ অংশগ্রহণ নয়, জেতার লক্ষ্য নিয়েই বিশ্বকাপে যাব: শারমিন

বাংলাদেশের টপ-অর্ডার ব্যাটার শারমিন আক্তার সুপ্তা পাকিস্তানের আইসিসি নারী বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখিয়ে ২৬৬ রান নিয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোরার হয়েছিলেন। আগামী মাসে শুরু হতে যাওয়া বিশ্বকাপে তিনি দলের অন্যতম ভরসা। বর্তমানে নারী চ্যালেঞ্জ কাপে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি নিচ্ছে মেয়েরা। সেই আসরে অনূর্ধ্ব-১৫ ছেলেদের দলকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যেটা খুব ভালো পদক্ষেপ মনে হচ্ছে শারমিনের।
বিশ্বকাপের জন্য আপনার প্রস্তুতি কেমন চলছে?
শারমিন আক্তার সুপ্তা: ক্রিকেট ঠিক জীবনের মতোই, আপনি ভুল করেন এবং প্রতিদিন সেগুলো থেকে শিখেন। প্রস্তুতির দিক থেকে বিসিবি আন্তর্জাতিক ম্যাচের ব্যবস্থা করার জন্য তাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে। কিন্তু আমাদের এফটিপি-তে (ফিউচার ট্যুরস প্রোগ্রাম) এই সময় ফাঁকা ছিল এবং সেই কারণে তারা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচ আয়োজন করতে পারেনি। সব বড় দলই তখন ব্যস্ত ছিল। আমি মনে করি, অনূর্ধ্ব-১৫ ছেলেদের দলকে নিয়ে নারী চ্যালেঞ্জ কাপ আয়োজনের বিসিবির সিদ্ধান্তটি খুব ভালো ছিল। তারা এই প্রতিযোগিতায় দুর্দান্ত খেলেছে। আমরা এখানে কয়েকটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছি। এই সিরিজের আগে আমরা সিলেট বিভাগের অনূর্ধ্ব-১৭ দলের সঙ্গেও খেলেছি। এছাড়া, কোচিং স্টাফরা নিয়মিত আমাদের সঙ্গে নেটে কাজ করছেন।
দলের ব্যাটিং শক্তি ও গভীরতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। একজন টপ-অর্ডার ব্যাটার হিসেবে, এটা কি আপনার ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে?
শারমিন: টপ-অর্ডার ব্যাটাররা যদি বড় স্কোর করতে না পারে তাহলে মিডল বা লোয়ার-অর্ডারের জন্য কাজটা কঠিন হয়ে যায়। যখন আমরা টপে ভালো খেলি তখন মিডল-অর্ডারের ব্যাটাররা নির্ভার মনে খেলতে পারে। কিন্তু আমার মনে হয় না যে আমাদের ব্যাটিং গভীরতার অভাব আছে। আমাদের ৫, ৬ নম্বর ব্যাটার এবং এমনকি আমাদের লোয়ার-অর্ডারও বাছাইপর্বে সত্যিই ভালো করেছে।
সম্প্রতি পাওয়ার-হিটিং কোচ জুলিয়ান উড পাঁচ দিনের জন্য নারী দলের সঙ্গে কাজ করেছেন। অভিজ্ঞতাটি কেমন ছিল?
শারমিন: তিনি কীভাবে শক্তি তৈরি করা যায় এবং টি-টোয়েন্টির জন্য সঠিক মানসিকতা গড়ে তোলা যায় সে বিষয়ে কাজ করেছেন। তিনি আমাদের বলেছেন যে ৫০ ওভারের ক্রিকেট এবং টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ভিন্ন। তিনি আমাদের বলেছেন কীভাবে একটি ইতিবাচক মানসিকতা ধরে রাখতে হয়। তবে এর আগে আমাদের জানতে হবে কীভাবে পাওয়ার শট খেলতে হয় এবং আমাদের মধ্যে সেই বিশ্বাস তৈরি করতে হবে যে আমরা এই শটগুলো খেলতে পারি। এটি আমাদের জন্য একটি ভালো সেশন ছিল।
২০২২ সালের বিশ্বকাপে বাংলাদেশ আটটি দলের মধ্যে সপ্তম হয়েছিল। এবার কি এরচেয়ে ভালো হতে পারে?
শারমিন: গতবার আমরা একই ধরনের সংকটের মধ্য দিয়ে গিয়েছিলাম। যেহেতু বিশ্বকাপটি কোভিড-১৯ এর সময় হয়েছিল, তাই আমরা এর আগে যথেষ্ট ম্যাচ পাইনি। আগের পারফরম্যান্সকে ছাড়িয়ে যাওয়ার ইচ্ছা মানুষের স্বভাবের অংশ। গতবার আমরা একটি ম্যাচ জিতেছিলাম এবং অবশ্যই এবার আমরা আরও বেশি ম্যাচ জেতার চেষ্টা করব। আমরা টুর্নামেন্টের শেষ দল হিসেবে কোয়ালিফাই করেছি, তাই আমাদের বিশ্বকাপের সেরা সাতটি দলের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে হবে। এটি অবশ্যই খুব কঠিন হবে, কিন্তু আমরা স্রেফ অংশগ্রহণ করতে সেখানে যাব না।
বিশ্বকাপে কোনো ব্যক্তিগত মাইলফলকের দিকে আপনার নজর আছে কি?
শারমিন: আমি মনে করি, হেরে যাওয়া ম্যাচে সেঞ্চুরি করার চেয়ে জেতা ম্যাচে ৩০ রান করা ভালো। বিশ্বকাপে যদি আমি দলকে ম্যাচ জিততে সাহায্য করতে পারি, তাহলে সবাই আমাকে মনে রাখবে এবং এটি আমাকে সর্বোচ্চ সন্তুষ্টি দেবে। এটাই আমার লক্ষ্য।
Comments