ডাকসু নির্বাচন

‘নারীদের আবাসন সংকট নিরসন, ক্যাম্পাসে সুস্থ রাজনৈতিক চর্চা নিশ্চিত করব’

শেখ তাসনিম আফরোজ (ইমি)। ছবি: সংগৃহীত

জয়ী হলে শিক্ষার্থী, বিশেষ করে নারী শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট নিরসন এবং ক্যাম্পাসে সুস্থ রাজনৈতিক চর্চা নিশ্চিতে কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে 'প্রতিরোধ পর্ষদ' প্যানেলের সহসভাপতি (ভিপি) প্রার্থী শেখ তাসনিম আফরোজ (ইমি)।

দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।

বাম গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট সমর্থিত প্যানেলটির ভিপি প্রার্থী শেখ তাসনিম আফরোজ (ইমি) বলেন, আমি ও আমার পর্ষদের সবাই লড়াই-সংগ্রাম করা মানুষ। সবার কাছে আমাদের অবস্থান খুব স্পষ্ট। আমাদের কোনো ধরনের গুপ্ত এজেন্ডা নেই। নিজেরা রাজনৈতিক দলের পদ হোল্ড করে ক্যাম্পাসে বিরাজনীতিকরণ করতে চাওয়া কিংবা নিজেরা ছাত্ররাজনীতি করেও অন্যদের রাজনীতি করার অধিকার কেড়ে নিতে চাওয়া—এগুলো আমরা করি না। আমরা চাই প্রত্যেকে তার নিজের পরিচয়-মর্যাদায় রাজনীতি করার অধিকার পাক এবং এই অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই আমরা দীর্ঘদিন ধরে করছি। সেজন্যই আমার মনে হয় যে শিক্ষার্থীরা আমাদের বেছে নিতে পারেন।

'আমাদের লড়াই-আন্দোলনের যাত্রায় কোনোটায় হেরেছি, কোনোটায় জিতেছি। কিন্তু লড়াই চালিয়ে গেছি। লড়াই চলমান রাখার যে স্পৃহা, আমার মনে হয় শিক্ষার্থীরা আমাদেরকে নির্বাচিত করে ম্যান্ডেট দিয়ে তারাও এই লড়াইয়ে শামিল হবে।'

নির্বাচিত হলে কী করবেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, এক বছর খুব সীমিত সময়। নির্বাচনে জয়ী হলে আমার অগ্রাধিকার তালিকায় আছে আবাসন সংকট নিরসন। বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্ধেক শিক্ষার্থী নারী হলেও তাদের হলের সংখ্যা ছেলেদের হলের অর্ধেকেরও কম। প্রত্যন্ত অঞ্চলসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে নারীরা পড়তে আসেন, যাদের অনেকের ঢাকায় আত্মীয়স্বজনও নেই। সব মিলিয়ে তাদের আবাসনের সংকট নিরসনের উদ্যোগটি যেন প্রশাসন দ্রুত নেয়, তা নিশ্চিত করব।

'অন্যদিকে ডাকসু নির্বাচনের ক্ষেত্রে যে অচলাবস্থা, সেটা দূর করে প্রত্যেক বছর যাতে নির্বাচন হয়, তা নিশ্চিতে কাজ করব। পাশাপাশি ক্যাম্পাসের রাজনৈতিক অস্থিরতা-বিভেদ দূর করে সুষ্ঠু রাজনৈতিক পরিবেশে সুস্থ রাজনৈতিক চর্চা নিশ্চিতে কাজ করব। আমরা কোনো ধরনের সহিংসতা চাই না। তা ছাড়া শিক্ষার্থীদের বসবাস কিংবা খাবারের ন্যূনতম মান বজায় রাখা হচ্ছে না, আমাদের শিক্ষার মান যথাযথ না, ওয়ার্ল্ড র‌্যাঙ্কিংয়ে আমাদের অবস্থান সম্মানজনক স্থানে নেই—এগুলো নিয়েও কাজ করব।'

শেখ তাসনিম আফরোজ (ইমি)। ছবি: সংগৃহীত

ইমি বলেন, আরেকটা জরুরি ব্যাপার হচ্ছে—ছাত্ররাজনীতি নিয়ে অনেক কথা হলেও শিক্ষকরাজনীতি নিয়ে কোনো কথা হয় না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে দায়িত্বপ্রাপ্তরা রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে এই পদগুলোতে এসে দলের এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করেন। সে কারণে যে দলই ক্ষমতায় থাকুক না কেন, শিক্ষার্থীরা সব সময়ই অবহেলিত। আমরা একটি ফ্যাসিবাদী কাঠামো দূর করলেও কিছু কিছু আচরণবিধি অত্যন্ত দুঃখজনক। শিক্ষক নিয়োগ বা তাদের পদায়নের বিষয়টাকে আমরা দলীয় প্রভাব থেকে মুক্ত করতে চাই। অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন হলেও শিক্ষকদের হয় না। তাদের মূল্যায়ন ব্যবস্থা চালু রাখতে হবে এবং এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের গোপনীয়তা রক্ষা করতে হবে। একইসঙ্গে শিক্ষকদের মূল্যায়নে বারবার খারাপ হলে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তার একটা সুস্পষ্ট রূপরেখা থাকতে হবে।

'ছাত্র বা শিক্ষক-রাজনীতির ক্ষেত্রে আমরা দলীয় লেজুড়বৃত্তি চাই না। আমরা চাই, যে যেই রাজনীতিই করুন না কেন, সেটি হতে হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি। এখানে অন্য কোনো দলের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করা যাবে না। এ ছাড়া, শিক্ষার্থীরা যাতে প্রথম বর্ষ থেকেই প্রপার গ্রুমিং পায়, দক্ষতা উন্নয়নে কাজ করতে পারে, এসব নিয়ে আমরা কাজ করব।'

নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে শামসুন্নাহার হল সংসদের সাবেক এই ভিপি বলেন, গতকাল মতবিনিময় সভা ডেকে আমাদের সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনা না করে প্রশাসন তাদের সিদ্ধান্তগুলো আমাদের জানিয়ে দেয়। অথচ আমাদের কনসার্নের কথা তারা শোনেনি।

তার ভাষ্য, 'সেনা মোতায়েনের কথা জানানো হলো। আমি মনে করি, এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য অসম্মানজনক। আমরা তো চোর কিংবা সন্ত্রাসী না। এটা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়। এখানে নির্বাচনের জন্য সেনাবাহিনী মোতায়েনের কোনো প্রয়োজন নেই বলেই মনে করছি।'

সবশেষে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করে ইমি বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে আমরা আন্দোলন-সংগ্রাম করছি। নারী, আদিবাসীসহ সব শিক্ষার্থীর অধিকারের বিষয়ে আমরা সোচ্চার। আমরা বৈচিত্র্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। এসব বিবেচনায় শিক্ষার্থীরা আমাদের বেছে নেবেন বলে আশা করছি।

Comments

The Daily Star  | English
5G network services in Bangladesh

Bangladesh enters 5G era with limited rollout

Bangladesh has finally entered the 5G era, as the country’s top two mobile operators yesterday announced the limited launch of the technology, aiming to provide ultra-fast internet, low latency, improved connectivity, and support for smart services and digital innovation..Unlike previous g

2h ago