ডিপ্লোমেটিক এনক্লেভ গঠনের প্রস্তাব ডিএমপির

সরকারকে চিঠি দিয়ে বলেছে শুধু পুলিশ দিয়ে কূটনীতিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়

কূটনীতিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঢাকা মেট্রপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) বারিধারা ও উত্তর গুলশান এলাকা নিয়ে ডিপ্লোমেটিক এনক্লেভ গঠনের প্রস্তাব করেছে। ডিএমপি সরকারকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে প্রস্তাবিত এলাকায় ইটের দেয়াল বা ধাতব তারের বেস্টনি দিয়ে ঘিরে ফেলা না হলে কূটনৈতিকদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়বে।

গত ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিসানের ঘটনার পর পুলিশ কূটনৈতিকদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়ে। তারা এরইমধ্যে অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করেছে, মটর সাইকেল টহল ও ফুট প্যাট্রল বাড়িয়েছে, চেকপোস্ট বসানোর পাশাপাশি যৌথ প্যাট্রল প্রচলন করেছে এবং সাদা পোষাকে পুলিশী কার্যক্রমও বাড়িয়েছে।

পুলিশ সার্বিক পরিস্থিতি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যালোচনা করে দেখেছে তাদের নেওয়া শুধু পুলিশি কার্যক্রম বাস্তবায়নের মাধ্যমে কূটনৈতিকদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। তার কারণ হিসেবে পুলিশ যুক্তি দিয়ে বলেছে অধিকাংশ কূটনৈতিক দপ্তর গুলশানের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। কূটনৈতিক সংশ্লিস্ট এলাকায় ব্যাংক, বীমা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রেস্টুরেন্ট, হোটেল এবং রিক্রুটিং এজেন্সির অফিসসহ নানা ধরনের বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠান থাকায় তাতে প্রচুর মানুষের আগমন ঘটে। পুলিশ বলছে শুধু চেকপোস্ট তল্লাশী বা ফুট প্যাট্রলের মাধ্যমে এত সংখ্যক মানুষের গতিবিধি পর্যবেক্ষেনে রাখা কঠিন কাজ। তাই পুলিশের আশঙ্কা যে কোন সময় সন্ত্রাসীরা পুলিশের দৃস্টি ফাকি দিয়ে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড ঘটানোর চেস্টা করতে পারে। এক্ষেত্রে নিরাপত্তা অধিকতর জোরদার ও নিশ্চিত করার জন্য গুলশানের কূটনৈতিক এলাকাকে একটি সুনির্দিস্ট বেস্টনির মধ্যে আনা জরুরী প্রয়োজন মনে করছে ডিএমপি।

পুলিশের প্রস্তাব করেছে গুলশানের আবাসিক এলাকায় বারিধারা এবং উত্তর গুলশান এলাকা অর্থাৎ গুলশান দুই গোল চত্বর থেকে ইউনাইটেড হাসপাতাল পর্যন্ত এভিনিউ রাস্তার দুই পাশ এবং আমেরিকান ও ভারতীয় হাইকমিশনের সংলগ্ন এলাকা নিয়ে এই কূটনৈতিক এলাকা গঠন করা যেতে পারে। এজন্য গুলশান-কালাচাঁদপুর সংযোগ সড়ক (ইউনাইডেট হাসপাতালের পেছনে), গুলশান–বনানী সংযোগ সড়ক (৬২/৬৩) ক্রসিং, গুলশানের ৫০, ৫১, ৫৩, ৯১ ও ৯২ সড়ক বন্ধ করে দিতে হবে। এ সকল রাস্তার বিকল্প থাকায় এলাকাবাসীর তেমন কোন সমস্যা হবে না বলে মনে করে পুলিশ।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র, স্বরাস্ট্র, পররাস্ট্র ও স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিবের কাছে পাঠানো ওই চিঠিতে আরো যুক্তি তুলে ধরে বলা হয়েছে, কূটনৈতিক এলাকায় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং হোটেল রেস্তোরা থাকায় বিপুল সংখ্যক তরুণ প্রতিদিন এই এলাকায় প্রবেশ করে। এর একটি বড় অংশ প্রয়োজনের কারণেই ব্যাকপ্যাক সাথে রাখে। পুলিশের আশঙ্কা তাদের সাথে মিশে যে কোন তরুণ উক্ত এলাকায় প্রবেশ করে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাতে পারে। এছাড়াও ওই এলাকার বাসিন্দাদের কারো কারো ফ্ল্যাটে ব্যক্তিগত গাড়িচালক, গৃহপরিচারিকা ও কাজের লোক মিলে ৫ জন বা তারও বেশি মানুষ নিয়োজিত আছে। এদের ছদ্মবরণেও যে কেউ সন্ত্রাসী কাজ চালাতে পারে। পুলিশ বলছে এত অধিক সংখ্যক তরুণ, নারী এবং অন্যান্য ব্যক্তিবর্গকে প্রতিদিন তল্লাশীর আওতায় আনা প্রায় অসম্ভব। তাই রাস্ট্রীয় স্বার্থে কূটনৈতিকদের নিরাপত্তা নিষ্চিত করতে যত দ্রুত সম্ভব এই প্রস্তাব বাস্তবায়ন জরুরী, নয়তো কূটনৈতিকদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ সম্ভব হবে না বলেই মনে করে ডিএমপি।

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh smash 7 past Turkmenistan

Bangladesh team had reserved their celebration of clinching Asian Cup berth till the last match of the campaign. On Saturday, against Turkmenistan, they celebrated the epic achievement with a resounding 7-0 victory, ending the Asian Cup Qualifiers campaign with an all-win record at the Thuwunna Stadium in Yangon.

3h ago