সতেরোর সাজ

মার্বেল পাথর আর চকচকে পিতল তামার শো পিসেই ঘর সাজাবেন ভাবছেন? তাহলে এই সতেরোতে নতুন করে ভাবতে হবে আপনাকে। এ কাজটি সহজ করতে চলুন ঝালাই করে নিই নতুন বছরের ধারা।

মার্বেল পাথর আর চকচকে পিতল তামার শো পিসেই ঘর সাজাবেন ভাবছেন? তাহলে এই সতেরোতে নতুন করে ভাবতে হবে আপনাকে। কেননা নতুন বছরের ঘর সাজের পরিকল্পনায় মেতে আছে পুরো ইন্টেরিয়ার দুনিয়া। কী হবে এবার? কোন রং প্রাধান্য পাবে? কোটেশন মার্ক করা শো পিসগুলো কী এবার দেয়ালে ঝুলবে নাকি পঞ্চ রত্নের রং দিয়ে সাজাতে হবে?

উত্তর খুঁজে পাওয়া একেবারেই কঠিন নয়। অন্তর্জালের কল্যাণে পৃথিবীর যে কোনো প্রান্তের নতুন ভাবনার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে ঘরের কাছের বিপণিগুলোতেও এবং প্রতিবছরেই বিগত বছরের চাইতেও বেশি পরিমাণে সুযোগ তৈরি হচ্ছে ক্রেতাদের জন্য। তাই চেনা চৌহদ্দি একটু বদলে নিতে দোষ কী। এ কাজটি সহজ করতে চলুন ঝালাই করে নিই নতুন বছরের ধারা।

আদি টেরাকোটা

এ বছর সাদা ও সাদাটে রংয়ের শীতলতা কাটাবে টেরাকোটার বাদামি মেটে উপস্থিতিতে। ঘরের দেয়ালে বা মেঝেতে চারকোণা করে বর্ডার তৈরি করার দরকার নেই। একটু খসখসে নিখুঁত ফিনিশিং থাকবে ঘরের মেঝেতে কিংবা সোফার পেছনের একা দেয়ালে, কিংবা বাথরুমের চেকোণা দেয়ালের কাঠামোতে। যারা নতুন করে ঘর সাজাবেন বা পুরনো ঘরে নতুন সাজ দেবেন-তারা টেরাকোটার আশ্রয় নিতে পারেন। এটি ঘরের সাজে প্রিয় আবহ নিয়ে আসবে।

 

বাদামি হলুদ কর্ক

এবছরই গুঞ্জন শুরু হয়েছে কর্ক ব্যবহার নিয়ে। হবেই বা না কেন, কর্ক খুবই স্টাইলিশ সাজ উপকরণ। এটি ঘরে আলাদা টেক্সচার আনে। রংয়ের বৈচিত্র্যও আসে। তাছাড়া কর্ক এমন একটি উপকরণ যা শব্দদূষণ কমায়। নগরবাসীর জন্য তাই কর্ক এর ব্যবহার চমৎকার সংযোজন। পাশাপাশি যারা অফিস কাম আবাস হিসেবে ঘরখানা সাজাবেন, তারা অনায়াসে একটি দেয়ালে কর্কশিট বসিয়ে নিয়ে জরুরি কাগজ বা নোট পিন করার কাজ করতে পারেন।

যারা সাদা আর অফ হোয়াইটেই এবার থাকতে চান, তারা সোফাসেটের সামনে বাদামি মাদুর পেতে তাতে বসাতে পারেন কর্কশিটের কফি টেবিল। চলতি ধারা এবং পুরনো সাত্বিকতা-একইসঙ্গে।

 

ঘরে প্রকৃতির ছোঁয়া

মধ্যরাতের নীল চাঁদোয়া কিংবা গাঢ় নেভি ব্লু রং আর নয়। গাঢ় সবুজ হবে নতুন বছরের রং। ট্যান করা চামড়া, নরম ফার, কাঠের প্যানেলের পাশাপাশি গাঢ় সবুজ রং পেইন্ট করে শোবার ঘরের বিছানার পেছনের দেয়ালে লাগাতে পারেন। কিংবা এই রং ব্যবহার করতে পারেন ঘরের কুশনে কিংবা আরাম কেদারার কাপড়ে। মনে হবে সবুজ প্রকৃতির রং ঠাঁই করে নিয়েছে আপনার ঘরের মাঝে।

 

শোবার ঘরের হালচাল

মাথা রেখে শোয়ার স্থানে এবার আর নকশাবিহীন সমতল কাঠ থাকবে না। বছর মাতাবে ‘মাথা জাগানো খাটের প্রান্ত’ অর্থাৎ আপনি বালিশে হেলান দিয়ে আধশোয়া হয়ে বসার জায়গা পাবেন শোবার ঘরে। উঁচু খাটের প্রান্তে পরানো থাকবে নরম তুলতুলে প্যাড। হয়তো ধূসর ভেলভেট কিংবা অন্য কোনো কাপড়ের।

দূরে থাক যন্ত্রের যন্ত্রণা

আজকের পৃথিবী যন্ত্রনির্ভর। তাই যন্ত্রণাও বেশি। কমানোর জন্য সতেরোর ঘরে থাকবে উন্মুক্ত গবাক্ষ। আপনাকে হাতছানি দিয়ে ডাকবে মুক্ত আকাশের কাছে, পাখির কাছে, ফুলের গাছে। বুকভরে শ্লাস নেয়ার কথা মনে করিয়ে দেবে। মানুষের মন যা সবসময়ই চায়। আগামী পৃথিবীর ডাকে সাড়া দিতে যন্ত্র কেড়ে নিচ্ছে সারাদিনে আটটি কর্মঘণ্টা। তাই নতুন বছরের গৃহকোণে থাকবে যন্ত্রহীন নির্ভার জীবনের আঁচ। আসবারের নকশায় থাকবে সরলতা। বেছে নেয়া সোফাসেটে জমকালো জরি নয় বরং থাকতে পারে লিলেন কাপড়ের গভীরতা।

এছাড়াও ঘরের আনাচে-কানাচে ব্যবহৃত হবে কোয়ার্টাজ, ওপেল, মেটালিক ইত্যাদি রং, হালকা গোলাপি বা নীল নয়। এই রংয়ের সঙ্গে গৃহসজ্জাকারীদের খেরো খাতা থেকে বিদায় নেবে আরো অনেক কিছু। যেমন কপারের তৈজসপত্র। অন্য অনেকভাবে এর ব্যবহার হতে থাকলেও গৃহসজ্জায় আর ব্যবহার নয়। ২০১৬ সালের শীত বসন্তে কপারের ওপর জোর দিয়ে ঘর সাজালেও, ২০১৭ সালের গ্রীষ্মে চকচকে পিতল তামা কাঁসার চাকচিক্য কমবে।

কাঠ কিংবা মাটির মেঠো ছোঁয়ায় তৈরি হবে নতুন বছরের সাজ উপকরণ। বিদায় প্রিয় পরিচিত মার্বেলের ব্যবহার। দীর্ঘ সময়ের পর এই পরিবর্তন গৃহপ্রেমীদের কেনাকাটায় নতুন জোয়ার আনবে।

এক বছরের সরব উপস্থিতির পর নিরবে বিদায় নেবে উদ্ধৃতি দিয়ে তৈরি করা দেয়াল সাজগুলো। জায়গা করে নেবে ঘরের বাইরের কিছু, যা একেবারেই মাটির কাছাকাছি। এমনকি বাথরুম বা কিচেনে সাজানো চৌকো সাবওয়ে টাইলসগুলোর ব্যবহার কমবে, কারণ বিশ্বব্যাপী ক্রেতারা এই ধরনের টাইলস আর কিনছেন না। প্রায় সব জায়গাতেই একই টাইলস দেখতে দেখতে একটু ক্লান্ত সবাই। উদ্যোম নিয়ে আসতে নতুন করে লাগাতে পারেন-‘ফিংগার’ বা ‘কিট ক্যাট টাইলস’, পাতলা ও লম্বাটে টাইলগুলো আড়াআড়ি বা লম্বালম্বি দুভাবেই ভালো লাগে সবমিলিয়ে এ বছরের ধারা আমূল বদলে দেবে আপনার ইন্টেরিয়র ভাবনা। যান্ত্রিকতা সরিয়ে ভরে দেবে মেঠো ফুলের গন্ধে।

 

ছবি: সংগ্রহ

Comments

The Daily Star  | English
pharmaceutical industry of Bangladesh

Pharma Sector: From nowhere to a lifesaver

The year 1982 was a watershed in the history of the pharmaceutical industry of Bangladesh as the government stepped in to lay the foundation for its stellar growth in the subsequent decades.

16h ago