প্রতিদিন সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাচ্ছেন ৬৪ জন

জরিপ বলছে, আঘাতজনিত মৃত্যুর ৪ শীর্ষ কারণ হলো আত্মহত্যা, সড়ক দুর্ঘটনা, পানিতে ডোবা ও উঁচু স্থান থেকে পতন

দেশে প্রতিদিন গড়ে ৬৪ জন মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাচ্ছেন। সরকারি তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এক জরিপে এই তথ্য উঠে এসেছে।

সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিনই এতো মানুষ প্রাণ হারালেও এর মধ্যে খুব অল্প ঘটনা গণমাধ্যমে উঠে আসে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এসব নিয়ে কোন সংবাদ প্রকাশিত হয়না।

সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে বাংলাদেশ হেল্‌থ ইনজুরি সার্ভে-২০১৬ তে এসব তথ্য উঠে এসেছে। জরিপের ফলাফল আগামীকাল আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হবে। তবে তার আগেই দ্য ডেইলি স্টার এর কাছে জরিপের একটি কপি এসেছে।

এ ধরনের প্রথম জরিপ ২০০৩ সালে করা হয়েছিল। তবে সেবার শুধুমাত্র শিশুদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল।

২০১৬ সালে ১৬ জেলার তিন লাখ মানুষকে আওতায় রেখে জরিপ পরিচালনা করা হয়েছে। এতে দেখা যায় আঘাতজনিত মৃত্যুর শীর্ষ কারণগুলো হলো আত্মহত্যা, সড়ক দুর্ঘটনা, পানিতে ডোবা ও উঁচু স্থান থেকে পতন।

বাংলাদেশে প্রতিদিন সড়ক দুর্ঘটনায় ৫০ জন প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তি মারা যাচ্ছেন। প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে আঘাতজনিত মৃত্যুর মধ্যে এটাই প্রধান কারণ।

আর ১৮ বছরের কম বয়সীদের মধ্যে প্রতিদিন ১৪ জন সড়কে প্রাণ হারাচ্ছে। ২০০৩ সালের জরিপে এই সংখ্যা ছিলো নয় জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনার আলোকে সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চ বাংলাদেশ (সিআইপিআরবি) সর্বশেষ জরিপটি পরিচালনা করেছে।

জরিপে দেখা যায় প্রতিদিন গড়ে ৩০০ মানুষ বিভিন্ন ধরনের আঘাতজনিত কারণে মারা যায়, ৬৬০ জন পঙ্গু হয় ও ৫৫ হাজার মানুষ কোন না কোনভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়। রিপোর্ট অনুযায়ী সব বয়সীদের মধ্যেই আত্মহত্যা, সড়ক দুর্ঘটনা ও পানিতে ডুবা আঘাতজনিত মৃত্যুর প্রধান তিন কারণ। তবে প্রাপ্তবয়স্ক ও শিশুদের আলাদাভাবে বিবেচনা করলে দেখা যায়, সড়ক দুর্ঘটনা রয়েছে শীর্ষে (প্রতিদিন ৫০ জন), এর পর রয়েছে আত্মহত্যা (৪০ জন প্রতিদিন) ও উঁচু জায়গা থেকে পতন (প্রতিদিন ৩৫ জন)।

শিশুদের মধ্যে পানিতে ডুবে মরার হার সবচেয়ে বেশি (প্রতিদিন ৪০ জন), এর পর রয়েছে আত্মহত্যা (প্রতিদিন ২৬ জন) ও সড়ক দুর্ঘটনা (প্রতিদিন ১৪ জন)।

নয় বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের ডুবে মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি। তবে ১০-২৪ বছর বয়সীদের মধ্যে আঘাতজনিত মৃত্যুর দিক থেকে সবচেয়ে এগিয়ে আত্মহত্যা।

অন্যদিকে ২৫-২৯ বচর বয়সীদের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় অধিক মৃত্যু হয় বলে উঠে এসেছে। আর বৃদ্ধ বয়সে পড়ে গিয়ে মৃত্যুর ঘটনা বেশি ঘটে।

রিপোর্ট অনুযায়ী, সব বয়সীদের মধ্যে মোট মৃত্যুর ১২ দশমিক ০২ শতাংশই ঘটে আঘাতের কারণে। মনে করা হচ্ছে প্রতি বছর এক লাখ আট হাজার মানুষ বিভিন্নভাবে আঘাত পেয়ে মারা যান। নিহতদের মধ্যে ৩৯ হাজারই শিশু বয়সী যা ২০০৩ সালে পরিচালিত জরিপের তুলনায় নয় হাজার বেশি।

রিপোর্টে বলা হয়, দুই কোটি শিশু ও প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি আহত হন। এর মধ্যে দুই লাখ ৪১ হাজারের বেশি প্রতি বছর পঙ্গুত্ব বরণ করেন। তড়িৎ স্পৃষ্ট হওয়া, হত্যা, প্রাণীর আঘাত, অনিচ্ছাকৃতভাবে বিষ গ্রহণ, আগুনে পোড়া, ভোতা জিনিসের আঘাত, কেটে যাওয়া ও যন্ত্রপাতির মাধ্যমে আঘাত এতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

Click here to read the English version of this news

Comments

The Daily Star  | English

No price too high for mass deportations

US President-elect Donald Trump has doubled down on his campaign promise of the mass deportation of illegal immigrants, saying the cost of doing so will not be a deterrent.

7h ago