শাকিব খান ‘রাজনীতি’-তে নামতে বাধ্য হলেন

অয়ন (শাকিব খান) একজন প্রবাসী বাংলাদেশি। দক্ষিণ আফ্রিকায় পড়াশোনা শেষ করে দেশে ফিরে একটি আইটি ফার্ম খোলার স্বপ্ন দেখেন। তাঁর বাবা (আলীরাজ) একজন বিখ্যাত রাজনীতিবিদ। তিনি অয়নকে কোনোভাবেই রাজনীতিতে জড়াতে চান না।
Shakib Khan with Apu Biswas_Rajniti
“রাজনীতি” চলচ্চিত্রের একটি দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত

চলচ্চিত্র: রাজনীতি

পরিচালক: বুলবুল বিশ্বাস

অভিনয়: শাকিব খান, অপু বিশ্বাস, আনিসুর রহমান মিলন, সাবেরি আলম, আলীরাজ, সাদেক বাচ্চু

সময়: ২ ঘণ্টা ১০ মিনিট

 

কাহিনী: অয়ন (শাকিব খান) একজন প্রবাসী বাংলাদেশি। দক্ষিণ আফ্রিকায় পড়াশোনা শেষ করে দেশে ফিরে একটি আইটি ফার্ম খোলার স্বপ্ন দেখেন। তাঁর বাবা (আলীরাজ) একজন বিখ্যাত রাজনীতিবিদ। তিনি অয়নকে কোনোভাবেই রাজনীতিতে জড়াতে চান না।

অয়ন যখন মাইক্রোসফটের চাকরি ছেড়ে বাংলাদেশে ফেরত আসেন, তখন তাঁর বাবা এবং মা (সাবেরি আলম) খুবই চিন্তিত হন। বড়ভাই শাকিল (আনিসুর রহমান মিলন) অয়নের ভীষণ ভালোবাসে এবং তাঁকে আপন করে নেয়। অয়ন যখন এলাকা ভ্রমণে বের হয় তখন সে অর্ষাকে (অপু বিশ্বাস) দেখে প্রেমে পড়ে যায়, অর্ষাও তাঁকে ভালোবেসে ফেলে। অর্ষার বাবা (সাদেক বাচ্চু) বিরোধী দলীয় চেয়ারম্যান। ফলে অর্ষার ভাই পাপ্পুর (ডি জে সোহেল) সঙ্গে তাঁর মারামারি হয় এবং এর প্রতিশোধ নিতে শাকিল পাপ্পুকে মারধর করে। এর ফলে শাকিলও অর্ষার প্রেমে পড়ে যায়। দুর্ঘটনাবশত শাকিলকে পাপ্পুর বন্দুকের আঘাত থেকে বাঁচানোর জন্য অয়ন পাপ্পুকে খুন করে ফেলে। শাকিল এর ফায়দা লুটে অয়নকে খুনি হিসেবে চিহ্নিত করে যাতে সে অর্ষাকে পেতে পারে। এ খবর শুনে অয়নের বাবার হার্ট অ্যাটাক হয়। ফলে অয়ন তাঁর বাবার জায়গায় রাজনীতিতে নামতে বাধ্য হন। অয়নের উন্নতি দেখে শাকিল রাগে দল ছেড়ে দিয়ে বিরোধীদের দলে যোগ দেন।

শাকিব ও অপু বিশ্বাসের জুটি বরাবরই দর্শকপ্রিয়। এবারও তাঁদের রসায়নটি ভালোই লেগেছে। তবে শাকিবের চুলের গেটআপের বিষয়ে একটু মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন ছিল। অভিনয় খুব একটি মন্দ করেননি তিনি। একটুখানি মনোযোগী হলে কোন ক্ষতি হতো না।

অপু বিশ্বাস অনেকদিন পর পর্দায় ফিরলেন। তাঁকে দেখতে অনেক সুন্দর লেগেছে। সিনেমার চরিত্র অর্ষা হয়ে ওঠার চেষ্টা ছিলো অপুর মধ্যে। এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখলে আগামীতে সিনেমায় তাঁর নিয়মিত হওয়ার একটি সম্ভাবনা থাকছে।

ছবির গান এবং কোরিওগ্রাফিতে অনেক বাংলা সিনেমার চেয়ে নতুনত্ব ছিল। বিশেষ করে “ও আকাশ বলে দে না রে” গানটাতে কিছুটা নতুনত্ব পাওয়া গেছে।

ছবির মূল আকর্ষণ ছিল আনিসুর রহমান মিলনের অভিনয়। ছবির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তিনি ভীষণ মনোযোগী ছিলেন অভিনয়ে। শাকিল হয়ে উঠেছিলেন ছবি জুড়ে। সিনেমার অভিনয় জীবনে সেরা অভিনয় শাকিল চরিত্রটি। আদরের বড় ভাই থেকে হিংসাত্মক খলনায়ক হয়ে ওঠাটা খুবই নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন তিনি।

এছাড়াও, মিলনের মৃত্যুর অভিনয় দৃশ্যটা দর্শকদের চোখে গেঁথে থাকবে অনেকদিন। মায়ের চরিত্রে সাবেরি আলম নতুন একটি স্বাদ দিয়েছেন। এমন ‘অন্যরকম’ মায়ের চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি সিনেমায় নিয়মিত হতে পারলে ভালো হয়।

পরিচালক বুলবুল বিশ্বাসের প্রথম সিনেমা “রাজনীতি”; তবে দেখে বোঝা যায়নি যে এটিই তাঁর প্রথম নির্মাণ। মেধার পুরোটি ঢেলে দিয়েছেন তিনি। কিছু ভুল ছিল এতে, কিন্তু প্রথম সিনেমা হিসেবে সব ক্ষমা করা যায়। দর্শকরা তাঁর আগামী ছবি দেখার অপেক্ষায় থাকবেন।

সব মিলিয়ে “রাজনীতি” একটি ভালো প্রচেষ্টা ছিল। প্রযোজক হিসেবে আশফাক আহমেদের আবির্ভাব মন্দ নয়। ভবিষ্যতে আরও ভালো এবং মনোরম ছবি তিনি দর্শককে উপহার দেবেন তা আশা করতে পারি।

আরও পড়ুন: দেড়শো টাকার ‘নবাব’!

Comments

The Daily Star  | English
Psychological consequences of childhood physical punishment

Int'l day to end corporal punishment: The children grow but the scars remain

A few days ago, a post went viral on Facebook, saying “Today’s children may not comprehend why we were beaten in our childhoods”.

14h ago