বন্যার কবলে দক্ষিণ এশিয়ার ১ কোটি ৬০ লাখ মানুষ
ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চলসহ মধ্যাঞ্চলের ২০টি জেলায় এখন বন্যার পানি থৈ থৈ করছে। শুধু বাংলাদেশই নয় হিমালয়ের পাদদেশে পশ্চিমবঙ্গের উত্তরাঞ্চলসহ ভারতের বেশ কয়েকটি রাজ্য ও নেপালেও সৃষ্টি হয়েছে ভয়াবহ বন্যা। আন্তর্জাতিক রেড ক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি (আইএফআরসি) বলছে, বাংলাদেশ, নেপাল ও ভারতের এক কোটি ৬০ লাখের বেশি মানুষ বন্যার কারণে মানবিক সংকটে পতিত হয়েছে।
বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষকে উদ্ধৃত করে আইএফআরসি প্রেস বিবৃতিতে বলেছে, বাংলাদেশে বন্যা ইতিমধ্যে রেকর্ড ছুঁয়েছে। যমুনার মত প্রধান নদীগুলো ১৯৮৮ সালের পানির উচ্চতাও পার করে গেছে। ১৯৮৮ সালের বন্যাকে বাংলাদেশে স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা হিসেবে ধরা হয়।
আইএফআরসি গতকাল আরও বলেছে, গত ১১ ও ১২ আগস্ট ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসের পর থেকে নেপালের অনেক এলাকা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে। আর ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর এক কোটি দশ লাখের বেশি মানুষ সাম্প্রতিক এই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আইএফআরসি’র এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ডেপুটি আঞ্চলিক পরিচালক মার্টিন ফ্যালার বলেছেন, খুব দ্রুত এই বন্যা গত কয়েক বছরের মধ্যে ভয়াবহতম মানবিক বিপর্যয়ে পরিণত হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত লাখো মানুষের জরুরি প্রয়োজন মেটানোর জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।
তিনি আরও বলেন, নেপাল, বাংলাদেশ ও ভারতের লাখো মানুষ খাবারের তীব্র সংকট ও বন্যার দূষিত পানির কারণে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে দিনাতিপাত করছেন। বাংলাদেশ ও নেপালের এক তৃতীয়াংশের বেশি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। আমাদের আশঙ্কা সামনের দিন ও সপ্তাহগুলোতে এই মানবিক সংকট আরও তীব্র হবে।
বাংলাদেশে উত্তরাঞ্চলীয় জেলাগুলোতে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও ভারত থেকে আসা অনেকগুলো নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে থাকায় দেশের মধ্যাঞ্চলে নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে। দেশে এখন পর্যন্ত ৩০ লাখ ৯০ হাজার মানুষ বন্যার কবলে পড়েছে। মারা গেছে ৮৯ জন।
নেপালে বিভিন্ন গ্রামে খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও বিদ্যুৎ বিহীন অবস্থায় বহু মানুষ অসহায় হয়ে রয়েছেন। দেশটি থেকে একজন রেডক্রস কর্মকর্তা জানান, মর্মান্তিক এই দুর্যোগে ১২৮ জন নিহত ও এখনো ৩৩ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে ভারতের আবহাওয়া অফিসগুলো। তারা বলছে সামনের দিনগুলোতে এই অঞ্চলে ভারি বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে।
Comments