বন্যা দুর্গতরা আগামী ৩ মাস খাদ্য সহায়তা পাবেন: প্রধানমন্ত্রী

pm-Dinajpur
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ (২০ আগস্ট) দিনাজপুরে বন্যা দুর্গতদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেন। ছবি: পিআইডি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ (২০ আগস্ট) দেশের বন্যা দুর্গতদের আশ্বস্থ করে বলেছেন, তারা নতুন ফসল ঘরে তোলার আগ পর্যন্ত আগামী তিন মাস ত্রাণ পাবেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বন্যা দুর্গতদের নতুন ফসল ঘরে তোলার আগ পর্যন্ত আগামী তিন মাস খাদ্য সাহায্য চলবে। দুর্গতরা সবাই যেন খাদ্য সহায়তা পেতে পারে সেজন্যই এই ব্যবস্থা চালু হচ্ছে এবং এটি অব্যাহত থাকবে।”

১০ টাকা কেজি দরে ৫০ লাখ পরিবারের মধ্যে চাল বিতরণের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “প্রত্যেকের কাছেই ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছাবে। আপনাদের একটু ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে হবে এবং আমাদের ওপর আস্থা রাখতে হবে।”

বন্যা দুর্গত এলাকা পরিদর্শনের জন্য বিমানবাহিনীর একটি হেলিকপ্টারে প্রধানমন্ত্রী আজ (২০ আগস্ট) সকালে দিনাজপুর এসে পৌঁছেন।

প্রধানমন্ত্রী পরে দিনাজপুর জেলা সদরের দিনাজপুর জেলা স্কুল এবং বিরল উপজেলার তেঘাড়া হাই স্কুল ত্রাণ শিবিরে স্থানীয়দের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, বন্যায় ফসলের ক্ষতি হওয়ায় যদিও পর্যাপ্ত খাদ্য মজুদ আছে তথাপি সতর্কতার অংশ হিসেবে সরকার বিদেশ থেকে খাদ্য আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

অন্যান্যের মধ্যে অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান, দলের যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, হুইপ ইকবালুর রহিম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি বক্তৃতা করেন।

এছাড়া, পানি সম্পদ মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী মোফাজ্জ্বল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম, খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

বন্যার পানি নামার সাথে সাথে নানারকম রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট সকলকে এই বিষয়টি খেয়াল রাখার নির্দেশ দেন।

তিনি বলেন, এখনও কোন কোন ক্ষেতে পানি জমে আছে, ইতোমধ্যে আমি নির্দেশ দিয়েছি এই সমস্ত ক্ষেতের আইল কেটে দিয়ে অথবা পানিটা নিষ্কাশনের জন্য প্রয়োজনীয় রাস্তা বা যা যা প্রয়োজন করে পানিটা বের করে দিতে হবে। আর সেই সাথে সাথে পরবর্তীতে আমরা তা মেরামত করে দেব।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক ক্ষেত্রে রাস্তা-ঘাট নষ্ট হয়েছে। রেল লাইনে পানি ঢুকে গিয়েছিল, আমাদের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় যেমন সড়ক এবং সেতু মন্ত্রণালয় এবং আমাদের এলজিইডি, ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয় আগে থেকেই তৈরি হয়ে আছে। বন্যার পানি নেমে গেলেই রাস্তা মেরামতের কাজ ইনশাল্লাহ আমরা শুরু করে দেব এবং নিজেরা যাতে নিজেদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও করতে পারেন সেই সুযোগ আমরা করে দেব।

ভেঙ্গে যাওয়া বাঁধ সংস্কারে সেনাবাহিনী এবং প্রশাসন, পুলিশ বাহিনী, আনসার-ভিডিপির সদস্যদের নিয়োজিত করার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাছাড়া আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বিভিন্ন গ্রুপ তৈরি করেও সেখানে পাঠানো হয়েছে এবং নেতৃবৃন্দও বিভিন্ন গ্রুপে ভাগ হয়ে বন্যা দুর্গত এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, “আজকে জাতির পিতা নেই। তবু আমরা আশা করবো সেই ভরসা আমাদের ওপর আছে এবং থাকবে।”

তিনি বলেন, “আমার ব্যক্তিগত জীবনে চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। আমি চাই বাংলার মানুষ যেন ভালো থাকে। আপনাদের জীবন যাতে উন্নত হয়। আপনাদের ছেলে-মেয়েরা যেন লেখাপড়া শিখতে পারে, আপনারা যেন ভালোভাবে বাঁচতে পারেন এবং যেকোন প্রাকৃতিক দুর্যোগে আমরা আপনাদের পাশে গিয়ে দাঁড়াতে পারি - সেটাই আমাদের দায়িত্ব।”

পর্যাপ্ত পরিমাণ ত্রাণ ব্যবস্থা রয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রত্যেকেই যেন ত্রাণ পান তার ব্যবস্থা করা হবে।

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh transition from autocracy to democracy

Transitioning from autocracy to democracy: The four challenges for Bangladesh

The challenges are not exclusively of the interim government's but of the entire political class.

11h ago