পরাজয় 'ভাইরাসের চক্রে' পড়েছে বাংলাদেশ
দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে গিয়ে একটা ম্যাচও জিততে পারেনি বাংলাদেশ। এমনকি দেখাতে পারেনি লড়াই করার সামর্থ্য। দুই টেস্ট, তিন ওয়ানডের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজেও একই ফল- হোয়াইটওয়াশড। সংক্ষিপ্ততম সংস্করণের অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের মতে এটা ভাইরাসের চক্র।
প্রথম টি-টোয়েন্টিতে তাও ২০ রানে হেরেছিল বাংলাদেশ। পরেরটিতে তো ৮৩ রানের বিশাল হার। নতুন অধিনায়ক, আলাদা সংস্করণ কিছুই বদলাতে পারেনি দলের হাল। ম্যাচ শেষে ভাইরাস চক্রের কথাই মাথা এল অধিনায়কের, 'এটা ভাইরাসের মতো, একটা থেকে আরেকটায় এসেছে। যদি আমরা টেস্টে ভালো করতাম তাহলে আমি নিশ্চিত ওয়ানডেতে আরও অনেক ভালো করতাম। আমার মনে হয়, একটা বড় কারণ ছিল আমাদের টেস্টে ভালো না করা। ওয়ানডেতে টেস্টের সেই রেশটাই হয়তো বেশিরভাগ খেলোয়াড়ের মনে থেকেছে। তারপর যখন ওয়ানডেও ভালো হল না, তার রেশ টি-টোয়েন্টিতে এলো।'
ঘরের মাঠে দাপট দেখিয়ে গেল কবছর বেশ নাম কামিয়েছে বাংলাদেশ। সবাই বলছি আসল পরীক্ষা হবে দেশের বাইরে। নিউজিল্যান্ডের পর দক্ষিণ আফ্রিকাতেও জয় বঞ্চিত থাকায় সে পরীক্ষার ফল বড়ই করুন, 'দেশের বাইরে অন্তত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আমরা পারিনি। আমার মনে হয়, এটা আমাদের হতাশার দিক। গত দুই তিন বছর দেশে এত ভালো করে আসছি যে আমরা আশা করেছিলাম যে অন্তত ভালো কিছু করব।'
টি-টোয়েন্টিতে প্রোটিয়া দলে ছিলেন না কাগিসো রাবাদা, ইমরান তাহির, ফাফ ডু প্লেসি। শেষ ম্যাচটি খেলেননি কুইন্টেন ডি কক। এত বড় মওকা পেয়েও লড়াই-ই করতে পারল না সাকিবের দল। হতাশ অধিনায়ক বলছেন, 'এই সিরিজে আরও প্রতিদ্বন্দ্বিতা হওয়া উচিত ছিল। আমি বলব না যে আমরা হয়তো জিততে পারতাম কিংবা অন্য কিছু। কিন্তু যে ধরনের উইকেটগুলোতে আমরা খেললাম, আমাদের সবাই সামর্থ্য ছিল ভালো করার।'
টেস্ট সিরিজ থেকেই ব্যাটিং উইকেট। অন্তত স্বাগতিকদের ব্যাটিং দেখলে তাই মনে হয়। উইকেটে বোলারদের বিশেষ কিছু ছিল না মানছেন সাকিবও, 'এটা ঠিক দক্ষিণ আফ্রিকার উইকেট ছিল না। খুবই ব্যাটিং সহায়ক উইকেট ছিল। বিশেষ করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিগুলোতে। টিভিতে দেখে মনে হয়েছে, টেস্টেও ভালো উইকেট ছিল। অনেক জিনিসই আমাদের পক্ষে ছিল। কিন্তু তারপরও আমরা ভালো করতে পারিনি।'
নিউজিল্যান্ডেও সব ম্যাচ হেরেছিল বাংলাদেশ। তবে সেখানে দেখা গিয়েছিল লড়াইয়ের ঝাঁজ, জেগেছিল জেতার সম্ভাবনা। এবার একদম তাও হয়নি, 'নিউজিল্যান্ডে তিনটি ওয়ানডেতে হয়তো আমরা জেতার সুযোগ তৈরি করেছি, কিন্তু জিততে পারিনি। ওখানে যে ধরনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা কিছু জায়গায় আমরা করেছিলাম, তা এখানে আমরা করতে পারিনি। এটাই আসলে হতাশার দিক।'
ওয়ানডে মুশফিক রান পেয়েছেন। টি-টোয়েন্টি দিয়ে রানে ফিরেছেন সৌম্য সরকার। রঙিন পোশাকে এর বাইরে বলার মত কিছুই নেই, 'এই জায়গায় ইতিবাচক কিছু খুঁজে বের করা একটু কঠিন। কোনো কোনো জায়গায় অনেকে ভালো করেছে। কিন্তু ধারাবাহিকতার ব্যাপারটা আমাদের কারোর মধ্যে ছিল না। আমরা সেভাবে করতেও পারিনি। মুশফিক ভাই ওয়ানডেতে ভালো ব্যাটিং করেছে। রুবেল আজকের ম্যাচ বাদ দিয়ে সব দিনই ভালো বোলিং করেছে। ছোটো ছোট এই রকম অনেক অবদানের দরকার হয় দল জিততে হলে।'
রব উঠছে দলে অদল বদলের। যার ব্যর্থ তাদের বাদ দিয়ে দলের বাইরে থাকাদের সুযোগ দেওয়া নিয়েও কথা উঠছে জোরালোভাবে। এতে একমত না সাকিব, 'আমি বলবো না, একটা সিরিজে হারের জন্য খুব বেশি ওলট-পালট চিন্তার দরকার আছে। কারণ, বাইরে আসলে এই ধরনের ফল হবে- এটা একটু স্বাভাবিক। ফলের কথা বলছি, আমরা যে হারব এটা হয়তো একটু অনুমিতই ছিল যে ধরনের ক্রিকেট খেলে আমরা হেরেছি সেটা আমার প্রত্যাশিত নয়।'
Comments