কষ্টে আছেন ‘নখ’ পাগল মুরারী আদিত্য

নখ রাখা তাঁর প্রধান সখ। সেই দীর্ঘ নখের কারণে ‘গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস’- এ নামও লিখিয়েছিলেন তিনি। উনিশশো আশির দশকে জাপানের রাষ্ট্রীয় টিভিতে দীর্ঘতর ‘নখ’ কাটার অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে আবারো দেশ-বিদেশে আলোচনার কেন্দ্রে আসেন তিনি। সেই নখ পাগল মানুষটির নাম মুরারী আদিত্য।
Murari Aditya
নখ পাগল মুরারী আদিত্য। ছবি: স্টার

নখ রাখা তাঁর প্রধান সখ। সেই দীর্ঘ নখের কারণে ‘গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস’- এ নামও লিখিয়েছিলেন তিনি। উনিশশো আশির দশকে জাপানের রাষ্ট্রীয় টিভিতে দীর্ঘতর ‘নখ’ কাটার অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে আবারো দেশ-বিদেশে আলোচনার কেন্দ্রে আসেন তিনি। সেই নখ পাগল মানুষটির নাম মুরারী আদিত্য।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দক্ষিণ কলকাতার বিজগড়ের বাড়ি হলেও তাঁর জন্ম দেশভাগের আগে অবিভক্ত বাংলার কুমিল্লা শহরে।

বছর পঁচাত্তরের এই মানুষটি এখন চরম অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছেন, এমন কি নানা রোগেও আক্রান্ত তিনি। এক বেলা খেয়ে না খেয়ে নখ বড় করে চলেছেন।

শুধু নিজের নখ বড় করা ছাড়াও চুল কাটার দোকান থেকে ‘নখ’ সংগ্রহ করে গত দশ বছরে কয়েকশো ‘নখচিত্র’-ও তৈরি করেছেন আদিত্য।

নখ রাখার সখ, তাই জীবনে বিয়ে করা হয়নি। এই মুহূর্তে তাঁর নখ ৩৩৯ সেন্টিমিটার দীর্ঘ হয়েছে। নখ রাখার জন্য রোজ এক-কাত হয়ে বিছানায় ঘুমাতে হচ্ছে তাঁর। নিয়মিত স্নান করতে পারেন না। এর ফলে শরীরে নানা উপসর্গ দেখা দিয়েছে। ঘুমের সমস্যা প্রকট হচ্ছে। রয়েছে অনিন্দ্রাজনিত অনেক সমস্যাও- দ্য ডেইলি স্টারকে জানালেন নখ সৌখিন মানুষ মুরারী আদিত্য।

মুরারী আদিত্যের কথায়, “রোগের ওষুধ, চিকিৎসকের খরচের কথা বাদ দিলাম। নখের যত্ন করতে মাসে বেশ কিছু টাকা খরচ হয়ে যাচ্ছে। ওই টাকার যোগান দিতে পারছি না।”

তিনি বলেন, “বাংলাদেশ আমার মাতৃভূমি, জন্মভূমি। বাংলাদেশ সরকার চাইলে আমি সরকারি যাদুঘরে আমার নখ শিল্প দান করতে পারি।” জীবনের শেষলগ্নে বাংলাদেশ একবার ঘুরে দেখতে চান মুরারী আদিত্য।

কোনও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান উদ্যোগ নিলেও যাবেন বাংলাদেশে- যোগ করেন মুরারী।

১৯৬২ সাল থেকেই তিনি নখ রাখতে শুরু করেন। সাড়ে পঞ্চান্ন ইঞ্চি দীর্ঘ নখরে কারণে ১৯৭৫ সালে প্রথম গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নাম উঠে মুরারী আদিত্যের। জাপানের সরকারি টিভিতে সেই নখ কাটার অনুষ্ঠান হয় ১৯৮৬ সালে। সেই কাটা নখ কাচ বন্দি হয়ে আজও শোভা পাচ্ছে দক্ষিণ কলকাতার যাদপুর বিজগড়ের বাড়িতে।

সেই কারণে তাঁর আক্ষেপ, “১৯৭৫ যখন রেকর্ড গড়লাম হাজার হাজার মানুষ আসতো আমায় দেখতে। ১৯৮৬ সালে যখন জাপানে গিয়ে নখ কেটে সেই নখ নিয়ে আসলাম তখনই মানুষের ঢল ছিল। আজ আমায় দেখতে আসা তো দূরের কথা, আমার নখ দেখতেও কেউ আসছেন না।”

দৃঢ় কণ্ঠে দ্য ডেইলি স্টারকে তিনি জানালেন, “নখ দীর্ঘ করার সখ যখন, প্রয়োজনে না খেতে পেয়ে মরে যাবো তবুও নখ রাখা ছাড়বো না।”

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

5h ago