সিলেটের তিনে তিন দান

সিলেটের পাহাড় ডিঙানোর তাগদ একটা সময় পর্যন্ত দেখিয়েছিল রাজশাহী, কিন্তু শেষ পর্যন্ত গিয়ে আর দমে কুলোয়নি। ২০৬ রানের টার্গেটে ছুটে হেরেছে ৩৩ রানে। এবার বিপিএলে নতুন দল সিলেট সিক্সার্স পেয়েছে টানা তিন জয়।
শতরানের ওপেনিং জুটি গড়ে সিলেটকে এবারও উপরে তুলেছেন দুই ওপেনার। ছবি: ফিরোজ আহমেদ

সিলেটের পাহাড় ডিঙানোর তাগদ একটা সময় পর্যন্ত দেখিয়েছিল রাজশাহী, কিন্তু শেষ পর্যন্ত গিয়ে আর দমে কুলোয়নি।   ২০৬ রানের টার্গেটে ছুটে হেরেছে ৩৩ রানে। এবার বিপিএলে নতুন দল সিলেট সিক্সার্স পেয়েছে টানা তিন জয়।

বিশাল টার্গেট তাড়ায় ঝড়ো শুরুও পেয়েছিল রাজশাহী। দুই ওপেনার লুক রঙ্কি আর মুমিনুল হক পাঁচ ওভারেই তুলে নেন পঞ্চাশ রান। কিন্তু রান তাড়ার পুরোটা পথ ধরে রাখতে পারেনি গতি, হারিয়েছে উইকেট। ২০ ওভার শেষে তাই থেমেছে ৮ উইকেটে ১৭২ রানে। 



এদিন আবারও সিলেট সিক্সার্সের দুই ওপেনার এনেছেন উড়ন্ত সূচনা। উপুল থারাঙ্গা আর আন্দ্রে ফ্লেচার নামলেই যেন ভুরি ভুরি রান। আগের দুবার তান্ডব দেখিয়েছিলেন রান তাড়ায়। এবার আগে ব্যাট করেও সেই  একই অগ্নিমূর্তি। শুরুতেই দুজনে নেমে বাছ বিচার না করে বল পিটাচ্ছেন। টানা তিন ম্যাচে গড়লেন পঞ্চাশ পেরুনো জুটি, এরমধ্যে দুটোই থেমেছে একশো রান ছাড়িয়ে।

ইনিংসের একাদশ ওভারে ৩০ বলে ৪৮ রান করে ফ্লেচার যখন আউট হন ততক্ষণে সিলেটের বোর্ডে উঠে গেছে ১০১ রান। টুর্নামেন্টে টানা তিন ফিফটি করে থেমেছেন থারাঙ্গা। ফরহাদ রেজার ফুলটস পেয়ে গ্যালারিতে পাঠিয়েছিলেন সাব্বির। পরের লং অফ দিয়ে আরেকটি ছয় হাঁকাতে গিয়ে ক্যাচ সিলেটের আইকন ক্রিকেটার। এ ম্যাচেও ব্যর্থ সাব্বির করেছেন ১৬ রান। তবে লঙ্কান গুনাতিলেকা ছিলেন তেতে। ২২ বলে ৪২ রান করে তিনিই পূরণ করেছেন রান উৎসবের বাকিটা। ম্যাচ সেরাও হয়েছেন গুনাতিলেকা। 

আগের ম্যাচে শেষ ওভারে নেমে বাজিমাত করেছিলেন নুরুল হাসান সোহান। তবে এই ম্যাচেও তার আগে নামানো হয়েছে লিয়াম প্লাঙ্কেটকে।  শেষ দিকে অবশ্য ব্যাটে ঝড় তুলেন রস হোইটলি। ফরহাদ রেজাকে মারেন এ পর্যন্ত টুর্নামেন্টের সবচেয়ে বড় দুই ছক্কা। তার ১২ বলে ২৫ রানে টুর্নামেন্ট সর্বোচ্চ ২০৫ রানের পাহাড় দাঁড় করায় সিলেট।



বিশাল রান তাড়ায় ওপেনিংয়ে নেমে লুক রাইটের সঙ্গে  মুমিনুল খেলছিলেন দারুণ।  দুই ছক্কা আর এক চারে ১৫ বলেই করে ফেলেছিলেন ২৪ রান। এরপরই গড়বড়। লিয়াম প্লাঙ্কেটকে উড়াতে   গিয়ে মিড অনে নাসিরকে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান। এক উইকেট যেন ডেকে আনল আরেকটি। দেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে এখনো ফিফটি পাননি কেউ। প্রথম দিনে সবচেয়ে বেশি ৪৭ রান করেছিলেন রনি তালুকদার। এবার কোন রান করার আগেই ফেরেন এই ডানহাতি। লিয়াম প্লাঙ্কেটকে পুল করে বাউন্ডারিতে পাঠাতে চেয়েছিলেন। টাইমিংয়ে গড়বড়। বল সোজা যায় মিড উইকেটে সাব্বিরের হাতে।

জেতার পর সিলেটের উল্লাস। ছবি: ফিরোজ আহমেদ
লুক রাইট তবু  এক প্রান্তে টিকে রান বাড়াচ্ছিলেন। অন্যপ্রান্তে চলছিল একের পর এক উইকেট পতন। আবুল হাসান রাজু এক ওভারেই তুলে নেন মুশফিকুর রহিম ও সামিথ প্যাটেলকে। রাজুর ফুলটস বল আকাশে তুলে দেন মুশফিক। লং অন থেকে ছুটে সহজ ক্যাচ হাতে জমান সাব্বির। এর এক বল পরই সামিথ প্যাটেল রাজুর বল স্টাম্পে টেনে আনেন। ১০ ওভারের আগেই চার উইকেট খুইয়ে ব্যাকফুটে চলে যায় ড্যারেন স্যামির দল। এরপরই কিংসদের খেলায় ফেরান জেমস ফ্রাঙ্কলিন ও লুক রাইট। শিশিরের কারণে স্পিনাররা বল হাতে নিতে পারছিলেন না। মওকা পেয়ে চলে চার ছয়ের মিছিল। কামরুল ইসলাম রাব্বির উপর দিয়েই গেছে বেশিটা। প্রথম তিন ওভারেই এই পেসার দেন ৪৫ রান। তবে শেষ ওভার করতে এসে কপাল খুলে রাব্বির। পর পর দুই ছয় মারতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে ক্যাচ দেন ৫৬ রান করা লুক রাইট। পথের কাঁটা দূর করে তখন স্বস্তির আনন্দ  ক্রমশ চড়া হতে থাকা আস্কিং রান রেইট  বাড়িয়েছে চাপ। সিলেটের হোয়াইটলির মতো রাজশাহীর ইনিংসের শেষ দিকে তান্ডব চালাতে পারেননি কেউ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

সিলেট সিক্সার্স:২০৫/৬ (থারাঙ্গা ৫০, ফ্লেচার ৪৮, সাব্বির ১৬, গুনাতিলেকা ৪২,  হুইটলি ২৫*, প্লাঙ্কেট ৬, সোহান ০, রাজু ৫*; উইলিয়ামস ২/২৭, ফ্রাঙ্কলিন ১/৩৮, রেজা ১/৪১) 

রাজশাহী কিংস: ১৭২     (রাইট ৫৫ , মুমিনুল ২৪, রনি ০, মুশফিক ১১,  সামিথ ১, ফ্রাঙ্কলিন ৩৫, স্যামি ৯, ফরহাদ ১৫ মিরাজ ৮*   ; রাজু ৩/২২, প্লাঙ্কেট ৩/২৯)

টস: রাজশাহী কিংস

ফল: সিলেট সিক্সার্স ৩৩ রানে জয়ী। 

ম্যান অব দ্যা ম্যাচ: দানুশকা গুনাথিলেকা 

Comments

The Daily Star  | English

3 quota protest leaders held for their own safety: home minister

Three quota protest organisers have been taken into custody for their own safety, said Home Minister Asaduzzaman Khan

23m ago