মুমিনুলের ব্যাটে রাজশাহীর কাছে পাত্তা পেল না রংপুর

তৃতীয় ওভারে মাশরাফির শর্ট বল ঘুরালেন মুমিনুল। ডিপ স্কোয়ার লেগে সোজা ক্যাচ গেল। লোপ্পা ক্যাচটি হাতে জমিয়েও ফেলে দেন নাজমুল ইসলাম অপু। সেই মুমিনুলই পরের স্পেলে ফেরা মাশরাফিকে এক ওভারে এক ছয় আর দুই চার মেরে মোমেন্টাম নিজেদের দিকে নিয়ে যান। বোলিং এসেই অপুও ছক্কা খেয়েছেন মুমিনুলের হাতে। ক্যাচ মিসের আফসোস আরও দ্বিগুন করে মুমিনুল তখন দুর্বার। লাসিথ মালিঙ্গাকে উড়িয়ে পৌঁছান ফিফটিতে। আর থামানো যায়নি তাকে। ১৩৫ রানের মামুলি টার্গেট রাকশাহী পেরেছিয়ে ২ উইকেট হারিয়ে।
ছোট লক্ষ্য তাড়ায় ধীরস্থির শুরু হলেই চলত রাজশাহীর। ওদের দুই ওপেনার শুরুতে নড়বড়ে থাকলেও সময়ের সঙ্গেই ছেড়েছেন খোলস। ফিফটি পেয়েছেন ওপেনিংয়ে মুমিনুলের সঙ্গী লেন্ডল সিমন্সও। কিছুটা শ্লথ গতিতে ৫০ বলে ৫৩ রান করে তিনি যখন রান আউট হন দল তখন জয়ের কিনারে। দুজনের ওপেনিং জুটিতেই এসেছে ১২২ রান। ৪৩ বলে ৬২ রান করে অপরাজিত থেকে যান মুমিনুল। তাতে চারটি চারের সঙ্গে আছে তিনটি ছক্কা।
সিলেটে সব দলই টস জিতে আগে নিচ্ছিলো ফিল্ডিং। ঢাকায় ফিরেই প্রথম ম্যাচ টস জিতে ব্যাটিং নিয়েছিলেন মাশরাফি মর্তুজা। তবে তার ব্যাটসম্যানরা এই সিদ্ধান্তকে বুমেরাং করেছেন ম্যাচ শুরুর পরই। প্রথম ওভার থেকেই উইকেট হারানো শুরু। পাওয়ার প্লের ভেতরেই পড়েছে তিন উইকেট। সবচেয়ে বড় কথা রান উঠেছে মন্থর গতিতে। ২০ ওভার খেলেও ৫ উইকেটে তাই তারা করতে পেরেছে ১৩৪। যাতে রবি বোপারার একারই ৫১ বলে ৫৪ রান। ওই রানে কাউকে আটকে রাখা মুশকিল। পারেননি মাশরাফিরাও। দুদলের প্রথম দেখায় জিতেছিল রংপুর। এবার শোধ নিল কিংসরা।
মিরপুরের উইকেট এমনিতেই স্লো। তাতে খাপ খাওয়াতে পারেননি রংপুরের দুই ওপেনার। মেহেদী হাসান মিরাজের প্রথম ওভারেই জনসন চার্লস ওয়াইড লং অনে ক্যাচ তুলে দেন। চতুর্থ ওভারে ফরহাদ রেজা এসে পরপর তুলে নেন অ্যাডান লেইথ ও মোহাম্মদ মিঠুনকে। টাইমিংয়ে গড়বড় করে দুজনেই ক্যাচ তুলে দেন আকাশে।
পাওয়ার প্লের প্রথম ছয় ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে রাইডার্সের স্কোরবোর্ডে জমা হয় মাত্র ৩৮ রান। পরের ছয় ওভারে উইকেট পড়েনি। ধীরস্থির খেলে থিতু হতে চেয়েছেন শাহরিয়ার নাফীস ও রবি বোপারা। রান আসে আরও ৩৬। অর্থাৎ ১২ ওভারে ৩ উইকেটে ৭৪। পরে থিতু হয়ে রান বাড়াতে গিয়েই কাটা পড়েন নাফীস। ৩১ বলে ২৩ রান করে কেসরিক উইলিয়ামসের বলে লং অনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। দ্রুত রান উঠাতে গিয়ে টাইমিংয়ে গড়বড় হয়ে ফেরেন থিসিরা পেরেরাও। শেষ পর্যন্ত বোপারা ঠিকে ছিলেন রক্ষা। শুরুতে উইকেটে বেশখানিকটা সময় কাটিয়েছেন ইংলিশ ব্যাটসম্যান। উইকেটের ভাষা পড়ে পরে খেলেছেন বড় কয়েকটি শট। তাতে অবশ্য চ্যালেঞ্জ জানানো যায়নি রাজশাহীকে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
রংপুর রাইডার্স:১৩৪/৫ (চার্লস ২, লেইথ ৪, মিঠুন ১৮, বোপারা ৫৪*, শাহরিয়ার নাফীস ২৩, পেরেরা ৪, জিয়া ১১*; রেজা ২/২৮, ফ্র্যাঙ্কলিন ১/১৪)
টস: রংপুর রাইডার্স ( সিমন্স ৫৩, মুমিনুল ৬২*, উলার ৪, রনি ১০*; পেরেরা ১/১২)
ফল:রাজশাহী কিংস ৮ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: মুমিনুল হক
Comments