জাপানে ভাড়ায় মিলছে বন্ধু ও পরিবার
কথায় আছে টাকা দিয়ে ভালোবাসা কেনা যায় না। কিন্তু দেশটি যদি জাপান হয় তাহলে এই কথাটিই দ্বিতীয়বার ভাবতে হবে। সত্যিকারের ভালোবাসা হয়ত পাওয়া যায় না তবু ভালোবাসার অভিনয় করে এমন মানুষ ভাড়া দেওয়ার ব্যবসা এখন রমরমাভাবে চলছে সূর্যোদয়ের দেশে। শুধু কি ভালোবাসার মানুষ, পরিবারের সদস্য থেকে বন্ধুবান্ধব, সবই ভাড়া পাওয়া যাচ্ছে সেখানে।
জাপানি তরুণ তরুণীরা যৌনতায় আগ্রহ হারাচ্ছে এটি পুরনো খবর। জনগণের প্রেমবিমুখতা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে দেশটির সরকারও। গবেষণায় দেখা যাচ্ছে কখনোই শারীরিক সম্পর্কে জড়াননি বা এখন কোন সম্পর্ক নেই, এ রকম তরুণের সংখ্যা দিনে দিনে বাড়ছে। সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, ১৮ থেকে ৩৪ বছরের তরুণদের ৪৫ শতাংশ জানিয়েছে, তাদের কখনোই কোন শারীরিক সম্পর্ক হয়নি। ৬৪ শতাংশ বলছে, তারা কোন প্রেম বা সম্পর্কে নেই। এর ফলে ঘর বাধার স্বপ্নও দেখাও যেন ভুলে গেছে কাজপাগল এই জাতিটি। পরিবারের ওপরও এর নেতিবাচক প্রভাব প্রকট হয়ে উঠছে।
জাপানে এরকমই একটি কোম্পানি ‘ফ্যামিলি রোমান্স’। উইচি নামের ৩৬ বছরের যুবক গত আট বছর ধরে তার এই কোম্পনির মাধ্যমে ভাড়াটে বন্ধু ও পরিবারের সদস্য সরবরাহ করছেন। একবার ফোন করলেই হল- বন্ধু, স্বামী, বাবা যেভাবে চাওয়া হবে সেই রূপ ধরেই তার কর্মীরা গ্রাহকের দোরগোড়ায় হাজির হয়ে যায়। এমনকি শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে কান্নাকাটি করার জন্যও লোক ভাড়া দেয় প্রতিষ্ঠানটি।
কর্মঠ জাতি হিসেবে জাপানিদের সুখ্যাতী বিশ্বজোড়া। সেই খ্যাতির কারণটাই তাদের বিড়ম্বনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। উদয়াস্ত পরিশ্রমের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে তৈরি হওয়া মানসিক ক্লান্তি ও অবসাদে অনেক জাপানিই সামাজিকতা রক্ষা করতে পারেন না। অর্থনৈতিক উন্নতি যতই হোক তা দিয়ে তো আর মনের খোরাক মেলে না। সেই চাহিদা পূরণ করতেই তারা এখন ভাড়াটে বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সদস্য খোঁজ করছেন। সূত্র: দ্য আটলান্টিক
Comments