কলকাতায় প্রশংসা পেয়ে অনুপ্রাণিত নির্মাতা আবু সাঈদ

Abu Sayeed
‘এক কবির মৃত্যু’ চলচ্চিত্রের নির্মাতা আবু সাঈদ। ছবি: স্টার

মঙ্গলবার বিকেল চারটায় কলকাতার নজরুল তীর্থের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন বাংলাদেশের ‘এক কবির মৃত্যু’ চলচ্চিত্রের নির্মাতা আবু সাঈদ। এর আগের শো-এ তেমন দর্শক না দেখে কিছুটা হতাশ হয়েছিলেন তিনি।

রাজধানী কলকাতা থেকে একটু দুরে নতুন উপ-শহর নিউটাউন-রাজারহাট। সেখানে হয়তো কলকাতার মূল স্রোতের দর্শকদের অভাব হবে- সেটিই ভেবে কিছুটা হলেও তাঁর কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছিলো বৈকি।

কিন্তু, ঘড়ির কাঁটা যখন চারটে ছুঁইছুঁই করছে, ঠিক তখনই পিঁপড়ের মতো দল বেঁধে দর্শক ঢুকতে শুরু করলেন নজরুল তীর্থে। পাঁচ মিনিটের মধ্যেই মনে হলো সব চিন্তা ধুয়ে-মুছে দিয়ে গেলো কলকাতার দর্শকদের উৎসাহ। কারণ, একটু পরেই শুরু হবে ‘এক কবির মৃত্যু’ চলচ্চিত্রটি- টেলিফোনে দ্য ডেইলি স্টারকে এভাবেই বলছিলেন ছবিটির নির্মাতা আবু সাঈদ।

২৩তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে এবার একমাত্র বাংলাদেশি ছবি এটিই। সেটিও আবার বিশেষ প্রতিযোগিতামূলক বিভাগে। আর তা নিয়েও ভীষণ খুশি আবু সাঈদ।

এর আগে সোমবার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে কলকাতার ইস্টার্ন কালচারাল সেন্টার এবং আগের দিন রবিবার নন্দনে দেখানো হয়েছিলো ‘এক কবির মৃত্যু’ চলচ্চিত্রটি। সেখানেও কয়েকশ দর্শক চলচ্চিত্রটি দেখেছেন বলে জানান পরিচালক।

গত সন্ধ্যায় নন্দন-১ প্রেক্ষাগৃহের সামনে দাঁড়িয়ে কথা হয় আবু সাঈদের সঙ্গে। তিনি তখন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, “এই ছবিটি নিয়ে আমি পরীক্ষা করেছি। বাংলাদেশে এখনও ছবিটি দেখানো হয়নি। কলকাতার এই উৎসবে ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার হলো। আর এখানে দর্শকরা ছবিটিকে যেভাবে নিয়েছেন, তাতে এই ধরণের পরীক্ষা করার সাহস আরো পাচ্ছি।”

তিনি বিশ্বাস করেন, কলকাতার চলচ্চিত্র উৎসবটি একটু আলাদা। কেননা, কলকাতার এই উৎসবে স্থানীয় দর্শকরাই বেশি অংশ গ্রহণ করে থাকেন। এমনকি, কলকাতার দর্শকরা ছবির গভীরতাকে ছুঁয়ে দেখতে পারেন।

তিনি মনে করেন, ‘বাংলা ভাষার’ প্যাকেজ শিরোনামে কলকাতার মতো এ ধরণের চলচ্চিত্র মহোৎসবে বাংলাদেশ কিংবা বাংলা ভাষার আরো ছবির জন্যে জায়গা দেওয়া প্রয়োজন।

ছবিটির অন্যতম অভিনেতা জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় বললেন, “যে ছবি নিয়ে আমরা এখানে এসেছি সেটি খুবই পরীক্ষামূলক। নির্মাতা আবু সাঈদ অনেক মেধা-সাহস নিয়ে চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেছেন। এই চলচ্চিত্র কলকাতার দর্শকরা খুবই ইতিবাচকভাবে নিয়েছেন বলেই আমরা মনে করছি।”

তবে তিনি এও বলেন, “কলকাতার এই আন্তর্জাতিক আয়োজনটি এখন অনেক বেশি উৎসবমুখর মনে হচ্ছে। এখানে যাঁরা আসেন, সবাই হয়তো সব চলচ্চিত্র দেখেন না। কিন্তু, অংশ গ্রহণ করেন। এটিও কম নয়। এক সময় এই উৎসব দেখতে আসা মানুষরা একটি-দুটো করে ছবি দেখতে দেখতেই অনেক বেশি চলচ্চিত্রের মধ্যে ঢুকে পড়েন।”

অভিনেত্রী আইরিন সুলতানা মনে করেন, “কলকাতায় এসে আমরা দর্শকদের কথা শুনে, প্রতিক্রিয়া পেয়ে সত্যিই মুগ্ধ হয়েছি। আমরা অনুপ্রেরণা পাচ্ছি। এই ধরণের ভিন্নধারার ছবি নির্মাণ করতে এমন অনুপ্রেরণার ভীষণ প্রয়োজন।”

বাংলাদেশ ছাড়াও ৫৩ দেশের মোট ১৪৩টি চলচ্চিত্র এই উৎসবে দেখানো হচ্ছে। এছাড়াও, রয়েছে ৬৭টি স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবি। ৫১টি তথ্যচিত্রও দেখানো হবে ২৩তম এই আয়োজনে। কলকাতার নন্দন প্রেক্ষাগৃহ ছাড়াও কলকাতা ও শহরতলীর ১২টি সিনেমা হলে এই চলচ্চিত্রগুলোর প্রদর্শনের আয়োজন করেছেন আয়োজকরা।

Comments

The Daily Star  | English

Hamas responds to Gaza ceasefire proposal, it's 'positive': Palestinian official

US President Donald Trump earlier announced a "final proposal" for a 60-day ceasefire in the nearly 21-month-old war between Israel and Hamas, stating he anticipated a reply from the parties in coming hours

1h ago