রোহিঙ্গা নির্যাতন নিয়ে বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত দাবি টিলারসনের
মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের ব্যাপারে বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত দাবি করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন। বুধবার দেশটির বেসামরিক ও সামরিক নেতৃবৃন্দের সাথে সাক্ষাতের পর তিনি অভিযোগ তদন্তের আহ্বান জানালেন।
গত আগস্ট মাসে রাখাইনে নিরাপত্তা বাহিনীর ৩০টি চৌকিতে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার ঘটনার পর নির্বিচার নিধনযজ্ঞ থেকে বাঁচতে এখন পর্যন্ত ছয় লাখের বেশি রোহিঙ্গা সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এই নিপীড়নকে ‘জাতিগত নিধনের প্রকৃষ্ট উদাহরণ’ বলেছে জাতিসংঘ। অন্যদিকে মিয়ানমারের দাবি রাখাইনে ‘ক্লিয়ারেন্স অপারেশন’ চালিয়েছে তারা।
মিয়ানমারের নেতাদের সাথে বৈঠকের পর টিলারসন ও অং সাং সু চি একটি যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন। সেখানে টিলারসন বলেন, “যা হয়েছে সেই দৃশ্যগুলো এক কথায় ভয়াবহ ছিল।”
মিয়ানমারের সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইয়াং –এর সাথেও পৃথক বৈঠক করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
রোহিঙ্গা নির্যাতনে যুক্ত থাকার ব্যাপারে দেশটির সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ রয়েছে অভ্যান্তরীণভাবে তার তদন্ত হয়েছে বলে তারা দাবি করছে। সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইয়াং সোমবার তার ফেসবুক পেজে এরকম একটি প্রতিবেদনও প্রকাশ করেন। তাতে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের গ্রামে গুলি চালিয়ে মানুষ হত্যা, ধর্ষণ বা বন্দীদের নির্যাতনের যেসব অভিযোগ করা হচ্ছে তার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। রোহিঙ্গাদের গ্রামে আগুন দেওয়া ও মাত্রাতিরিক্ত বল প্রয়োগের অভিযোগও অস্বীকার করা হয়েছে প্রতিবেদনটিতে।
এই তদন্তের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে ইতিমধ্যে প্রশ্ন তুলেছে মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। মঙ্গলবার তারা একে “হোয়াইটওয়াশ” আখ্যা দিয়ে জাতিসংঘের মাধ্যমে নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করার সুযোগ দিতে দেশটির প্রতি আহ্বান জানায়।
বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা রাখাইনে তাদের ওপর নির্মম হত্যাযজ্ঞ, ধর্ষণ ও গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়ার বিবরণ দিয়েছেন। নির্যাতন বন্ধে আন্তর্জাতিক মহল থেকে সু চি’র সরকারের ওপর অব্যাহত চাপ থাকলেও দেশটির সেনাবাহিনী নিজেদের নির্দোষ দাবি করছে। সেনাবাহিনীর সাথে ক্ষমতা ভাগাভাগি করে সরকারে রয়েছেন অং সাং সু চি।
Comments