ধর্ষণকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছে মিয়ানমারের সেনারা: এইচআরডব্লিউ
রোহিঙ্গা নারীদের ওপর ধর্ষণকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের জন্য মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে অভিযুক্ত করেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। মানবাধিকার সংস্থাটি বলছে, রোহিঙ্গাদের জাতিগতভাবে নির্মূল করতে গত তিন মাস ধরে রাখাইনে ব্যাপক মাত্রায় ধর্ষণ চালিয়েছে সেনাবাহিনী।
গত সপ্তাহেও যৌন সহিংসতাবিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত প্রমীলা প্যাটেন যৌন নিপীড়নের জন্য দেশটির সেনাবাহিনীকে দায়ী করছিলেন। তিনি বলেন, মিয়ানমারের সেনারা পরিকল্পিতভাবে যৌন নিপীড়ন চালিয়েছে। এবার তার কথারই প্রতিধ্বনি করল নিউইয়র্ক ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থাটি।
তবে রোহিঙ্গা নির্যাতনের সকল অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে দেশটির সেনাবাহিনী। তাদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ রয়েছে অভ্যন্তরীণভাবে তার তদন্ত হয়েছে বলে তারা দাবি করেছে। সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইয়াং সোমবার তার ফেসবুক পেজে এরকম একটি প্রতিবেদনও প্রকাশ করেন। এতে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের গ্রামে গুলি চালিয়ে মানুষ হত্যা, ধর্ষণ বা বন্দীদের নির্যাতনের যেসব অভিযোগ করা হচ্ছে তার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। রোহিঙ্গাদের গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া ও মাত্রাতিরিক্ত বল প্রয়োগের অভিযোগও অস্বীকার করা হয়েছে প্রতিবেদনটিতে।
প্রতিবেদন প্রকাশের পর রাখাইনে সেনা অভিযানে নেতৃত্বদানকারী জেনারেলকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে এর কোনো ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি।
গত আগস্ট মাসে রাখাইনে নিরাপত্তা বাহিনীর ৩০টি চৌকিতে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার পর নির্বিচার নিধনযজ্ঞ থেকে বাঁচতে ছয় লাখের বেশি রোহিঙ্গা সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। একে ‘জাতিগত নিধনের প্রকৃষ্ট উদাহরণ’ বলেছে জাতিসংঘ।
বাংলাদেশে পালিয়ে আসা ৫২ জন রোহিঙ্গা নারীর সাথে কথা বলেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। এদের মধ্যে ২৯ জন বলেছেন তাদেরকে ধর্ষণ করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি বাদে সবগুলোই ছিল দলগত ধর্ষণ।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের নারী অধিকার বিষয়ক গবেষক ও এই প্রতিবেদনের লেখক স্কাইয়ি হুইলার এক বিবৃতিতে বলেন, “রোহিঙ্গাদের নির্মূল করতে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর অন্যতম বড় অস্ত্র ছিল ধর্ষণ। তাদের বর্বরতায় অসংখ্য নারী ক্ষতিগ্রস্ত ও ভয়াবহ অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন।”
যে সেনাকর্মকর্তাদের নির্দেশে ও অংশগ্রহণে এই বর্বরতা চলেছে তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা ও মিয়ানমারের ওপর সামরিক অবরোধ আরোপের জন্য জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।
Comments