চিঠিতে অপহরণের ঘটনা জানালেন অনিরুদ্ধ

আড়াই মাস নিখোঁজ থাকার পর ব্যবসায়ী অনিরুদ্ধ কুমার রায় (৫৩) ফিরে এসে চিঠি লিখে অপহরণের কারণ জানিয়েছেন। তবে এই সময় তিনি কোথায় ছিলেন বা অপহরণকারীদের পরিচয়র নিয়ে চিঠিতে কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি। তার ধারণা ব্যবসায়িক শত্রুতার কারণে তাকে অপহরণ করা হয়েছিল।
নিজের প্রতিষ্ঠান আরএমএম গ্রুপের প্যাডে লেখা চিঠিতে বলা হয়, “আমি অনিরুদ্ধ কুমার রায়, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আরএমএম গ্রুপ। আমি ব্যবসায়িক প্রতিহিংসার শিকার। আমার ব্যবসায়িক অংশীদার মহিউদ্দিন আহমেদ মাহিন গং আমার প্রতিষ্ঠিত তিনটি প্রতিষ্ঠান আরএমএম লেদার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, আরএমএম নিট ক্লথিং লিমিটেড ও আরএমএম সোয়েটার লিমিটেড (যার সম্পদের মূল্য ১৫০ কোটি টাকার অধিক) হস্তগত করার জন্য হেন কোনো কাজ নেই, যা করেননি। ২৭ আগস্ট গুলশান-১-এর ইউনিয়ন ব্যাংক থেকে মিটিং শেষে ফেরার পথে বিকেল সাড়ে ৪টায় ওই বিল্ডিংয়ের নিচ থেকে আমাকে অপহরণ করা হয়। সম্ভবত ব্যবসায়িক প্রতিহিংসার কারণে এমনটা হয়েছে বলে আমি আশঙ্কা প্রকাশ করি।”
চিঠির নিচে আজকের তারিখ দিয়ে অনিরুদ্ধের স্বাক্ষর রয়েছে। তিনি চিঠিতে আরও লিখেছেন, “আমার অবর্তমানে আমাকে বিভিন্নভাবে ক্ষতি করার চেষ্টা করে। যার মধ্যে
ক) আমার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান এলআইবি-এর শিপমেন্ট সার্টিফিকেট প্রদানে বিএফএলএলএফইএ এর চেয়ারম্যান হিসেবে অনৈতিকভাবে বাধা প্রদান
খ) নিয়ম বহির্ভূতভাবে অন্য কোম্পানি থেকে পাওনা ৫ কোটি টাকা কোম্পানির অ্যাকাউন্টে জমা দেওয়ার পরিবর্তে নিজের নামে গ্রহণ
গ) ফ্যাক্টরির শ্রমিকদের হুমকি দেওয়াসহ বিরূপ পরিস্থিতির সৃষ্টি করা
ঘ) আমার অনুপস্থিতিতে আমার অনুমতি ব্যতিরেকে আমার অফিস কক্ষ থেকে জরুরি নথিপত্র অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া উল্লেখযোগ্য।”
অপহরণ করার পর সমুদয় সম্পত্তি লিখে দেওয়ার জন্য তাকে নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করা হয় বলেও অভিযোগ করেছেন অনিরুদ্ধ। এর জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে ন্যায়বিচার চেয়েছেন তিনি।
২৭ আগস্ট রাজধানীর গুলশানে একটি ব্যাংক থেকে বের হওয়ার পর অনিরুদ্ধ অপহরণের শিকার হন। একটি সাদা মাইক্রোবাসে করে তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। ভুয়া নাম্বারপ্লেটের গাড়ি ব্যবহার করে তাকে অপহরণ করা হয় বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হলেও এই আড়াই মাসে তার কোনো হদিস দিতে পারেনি আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
অনিরুদ্ধকে গত রাত সাড়ে ৩টায় গুলশানে তার বাসার সামনে রেখে যাওয়া হয়। এখন পর্যন্ত তিনি গণমাধ্যমের সামনে কথা বলেননি।
Comments