মিয়ানমারের সাথে চুক্তিতে বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষা হয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেওয়ার চুক্তিতে সন্তোষ প্রকাশ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী বলেছেন, চুক্তিতে বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার মিয়ানমারের রাজধানী নেপিডোতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন চুক্তি স্বাক্ষরের পর আজ ঢাকায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার দপ্তরে চুক্তির বিভিন্ন দিক নিয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হল রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো। ‘যৌক্তিক সময়ের মধ্যে’ তাদের প্রত্যাবাসন সম্পন্ন হবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, বাঁধাধরা সময়ের মধ্যে রোহিঙ্গাদের ফেরানোর কাজ শেষ করা সম্ভব নয়। মিয়ানমার ও বাংলাদেশ দুপক্ষই জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর-কে এই কাজে যুক্ত করতে সম্মত হয়েছে। এছাড়াও চুক্তি অনুযায়ী জাতিসংঘের অন্যান্য সংস্থা ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এই কাজে যুক্ত হওয়ার সুযোগ রয়েছে বলেও জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
বাংলাদেশ ও মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের রাখাইনে প্রত্যাবাসনের জন্য গত বৃহস্পতিবার সমঝোতা স্মারক সই করেছে। ওই অনুযায়ী দুই মাসের মধ্যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের প্রক্রিয়া শুরু করার কথা রয়েছে। চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার তিন সপ্তাহের মধ্যে একটি যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ চুক্তি বাস্তবায়নের কাজ শুরু করবে। এক্ষেত্রে কোনো জটিলতা তৈরি হলে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার আলোচনার মাধ্যমে তার সমাধান করবে বলেও জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, গত ২৫ আগস্টের পর যেসব রোহিঙ্গা এসেছে তাদেরকে প্রথমে ফেরত পাঠানো হবে। এর পর ২০১৬ সালের ৯ অক্টোবরের পর আসা রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে পাঠানো হবে। এসময় চুক্তির একটি কপি তিনি সাংবাদিকদের দেন।
গত ২৫ আগস্ট রাখাইনে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর ৩০টি চৌকিতে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির হামলার পর মিয়ানমারের সেনাবাহিনী নির্বিচারে রোহিঙ্গা নিধন শুরু করে। নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচতে গত তিন মাসে ছয় লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলোর বলছে, রোহিঙ্গাদের শত শত গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখানে ধর্ষণকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া গেছে বলেও তারা জানিয়েছে।
এর আগে গত বছর ৯ অক্টোবরের পর তিন থেকে পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে বলে ঢাকা দাবি করে।
বৃহস্পতিবার মিয়ানমারের রাজধানী নেপিডোতে স্টেট কাউন্সেলরের দপ্তরে সু চি’র সাথে বৈঠক করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী। বৈঠকের পর স্টেট কাউন্সেলরের দপ্তরের মন্ত্রী চ টিন্ট সোয়ে ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিজ নিজ দেশের পক্ষে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন। তবে এর শিরোনামে ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়নি।
Comments