চালকের প্রাণ বাঁচাবে স্মার্ট হেলমেট

হেলমেট ছাড়া মোটরসাইকেল চালানোর বিপদ সম্পর্কে পুলিশের পক্ষ থেকে সচেতনতা সৃষ্টির শত চেষ্টার পরও বাড়তি ঝামেলা মনে করে অনেকেই হেলমেট ছাড়াই মোটরসাইকেল চালান। এই সমস্যার একটি উপায় খুঁজে বের করেছেন কুড়িগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের এক ছাত্র। তরুণ এই উদ্ভাবক এমন একটি হেলমেট তৈরি করেছে যা চালক মাথায় না পরা পর্যন্ত মোটরসাইকেলের ইঞ্জিনই চালু হয় না।
Smart helmets with Motorcyclists
নিজের উদ্ভাবিত স্মার্ট হেলমেট হাতে মতিউর।

হেলমেট ছাড়া মোটরসাইকেল চালানোর বিপদ সম্পর্কে পুলিশের পক্ষ থেকে সচেতনতা সৃষ্টির শত চেষ্টার পরও বাড়তি ঝামেলা মনে করে অনেকেই হেলমেট ছাড়াই মোটরসাইকেল চালান। এই সমস্যার একটি উপায় খুঁজে বের করেছেন কুড়িগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের এক ছাত্র। তরুণ এই উদ্ভাবক এমন একটি হেলমেট তৈরি করেছে যা চালক মাথায় না পরা পর্যন্ত মোটরসাইকেলের ইঞ্জিনই চালু হয় না।

দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ উপজেলার ছাতিয়ল গ্রামের ছেলে মতিউর রহমান ব্লুটুথ প্রযুক্তি ব্যবহার করে তার স্মার্ট হেলমেট তৈরি করেছেন। কুড়িগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ইলেক্ট্রনিক টেকনোলজি বিভাগের এই ছাত্র গত অক্টোবরে তার প্রতিষ্ঠানে আয়োজিত স্কিল কম্পিটিশন ২০১৭-তে স্মার্ট হেলমেট প্রদর্শন করে প্রথম পুরস্কার জিতে নিয়েছেন।

স্মার্ট হেলমেট তৈরির কারণ সম্পর্কে মতিউর বলেন, “অনেক মোটরসাইকেল চালকই হেলমেট পরতে আগ্রহী না। সড়ক দুর্ঘটনায় মাথায় আঘাত লেগে প্রচুর মানুষ মারাও যায়। তখনই আমার মাথায় চিন্তা আসে এমনটা করলে কেমন হয় যেন হেলমেট ছাড়া মোটরসাইকেলই না চালু হয়।”

মতিউর তার এই ভাবনার কথা তার শিক্ষক ও সিনিয়র ছাত্রদের জানান। তাদের সাহায্য নিয়েই তিনি ইনস্টিটিউটের ল্যাবরেটরিতে স্মার্ট হেলমেট বানানোর কাজ শুরু করেন। পাঁচ মাসের খাটুনির পর শিক্ষক ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সামনে তিনি তার হেলমেট প্রদর্শন করেন।

স্মার্ট হেলমেট কিভাবে কাজ করে জানাতে গিয়ে মতিউর বলেন, “মোটরসাইকেল ও হেলমেট দুই জায়গাতেই একটি করে ওয়্যারলেস ডিভাইস বসানো হয়। ব্লুটুথ ব্যবহার করে ডিভাইস দুটির মধ্যে সংযোগ হয়। হেলমেট থেকে সবুজ সংকেত না পাওয়া পর্যন্ত মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন চালু হয় না। হেলমেট মাথায় পরা হলেই কেবল এটি সম্ভব।”

 “হেলমেট ছাড়া ইঞ্জিন চালুর চেষ্টা করা হলে হেলমেট পরার অনুরোধ জানিয়ে ড্যাশবোর্ডে একটি বার্তা প্রদর্শিত হয়। হেলমেট না পরে যদি সাথে রাখা হয় তবুও মোটরসাইকেল চালু হবে না,” জানান এই তরুণ উদ্ভাবক।

শুধু তাই না মোটরবাইক আরোহী মদ্যপ অবস্থায় রয়েছেন কি না সেটাও সনাক্ত করতে পারে মতিউরের স্মার্ট হেলমেট। এর জন্য হেলমেটে তিনি এমন একটি সেন্সর বসিয়েছেন যা আরোহীর নিঃশ্বাস পরীক্ষা করে এলকোহলের উপস্থিতি ধরতে পারে। নিঃশ্বাসে এলকোহল শনাক্ত হলেও মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন চালু হয় না।

তিনি জানান, হেলমেটের এসব সেন্সরের জন্য যে বিদ্যুতের প্রয়োজন তা ব্যাটারি এমনকি সৌরবিদ্যুতের মাধ্যমে সরবরাহ করা সম্ভব।

মতিউরের উদ্ভাবন সম্পর্কে কুড়িগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ইলেক্ট্রনিক টেকনোলজি বিভাগের প্রধান জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “স্মার্ট বাইক-স্মার্ট হেলমেট তৈরি একটি অসাধারণ কাজ। এর কিছু সীমাবদ্ধতার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, সরকারের সহায়তা পেলে এসব সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।” স্মার্ট হেলমেটের ব্যবহার বাস্তবায়ন করা গেলে সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহত উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় কমে যাবে বলে তার আশা।

Click here to read the English version of this news

Comments