রাজশাহীকে গুড়িয়ে প্লে অফে ঢাকা

সুনিল নারিন, কাইরন পোলার্ডদের তাণ্ডব আর রাজশাহী বোলারদের ক্যাচ মিসের মহড়ায় ২০৫ রানের পাহাড় পেয়েছিল ঢাকা। মন্থর পিচে ওই রান তাড়ায় কখনই ম্যাচে থাকেনি রাজশাহী
Shakib Al Hasan
৮ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ঢাকার নায়ক সাকিব। ছবি: ফিরোজ আহমেদ

সুনিল নারিন, কাইরন পোলার্ডদের তাণ্ডব আর রাজশাহী বোলারদের ক্যাচ মিসের মহড়ায় ২০৫ রানের পাহাড় পেয়েছিল ঢাকা। মন্থর পিচে ওই রান তাড়ায় কখনই ম্যাচে থাকেনি রাজশাহী।  পুরোটা  সময় ধুঁকে ধুঁকে থেমেছে  ১০৬ রানে। বল হাতে কিংসদের ধসিয়ে নায়ক সাকিব আল হাসান।  বড় জয়ে পরের রাউন্ড নিশ্চিত করেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।

শনিবার মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে রাজশাহী কিংসকে   ৯৯  রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে ঢাকা ডায়নামাইটস। ১১ নম্বর ম্যাচে ৬ষ্ঠ জয় নিয়ে প্লে অফ নিশ্চিত করেছে সাকিবের দল। সমান ম্যাচে সপ্তম হারে টুর্নামেন্ট থেকে অনেকটা ছিটকেই পড়েছে রাজশাহী কিংস।

মাথার সামনে ২০৬ রানের লক্ষ্য। অথচ রাজশাহীর শুরুটা হলো বিভীষিকাময়। নয় রানেই পড়ল তিন উইকেট। তিনটাই নিলেন সাকিব আল হাসান।  দ্বিতীয় ওভারে বল করতে এসে সিমন্সকে বোল্ড করে শুরু, দুই বল পর বোল্ড করে দেন লুক রাইটকেও। পরের ওভারে এসেই ফের সাফল্য। এবার তার বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরত যান মুশফিক।

১০ রান পর পড়েছে আরেকটি। এই টুর্নামেন্টে নজরকাড়া জাকির হাসান মোসাদ্দেককে বেরিয়ে এসে মারতে গিয়ে হয়েছেন স্টাম্পিং। মুমিনুল তবু টিকে ছিলেন এক প্রান্তে। ১৯ রান করে থামল তার দৌঁড়ও। পোলার্ডকে উড়াতে গিয়ে পার করতে পারেননি মিড অফ। উসামা মির এসে চার-ছয়ে ১০ রান করেই ফিরে যান। স্কোরবোর্ডে ৬৬ রানে নেই ৬ উইকেট। ওভার বাকি আরও ১০টি। ম্যাচের ফল নিয়ে তখনই আর কোন সংশয় নেই। পরের স্পেলে ফিরে সামিথ প্যাটেলকেও আউট করে চার নম্বর উইকেট পেয়ে যান সাকিব। টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারেও ছাপিয়ে যান আবু জায়েদ রাহিকে। চার ওভার বল করে মাত্র ৮ রান দিয়ে নিয়েছেন ৪ উইকেট। করেছেন একটি মেডেন ওভারও।

জো ডেনলি ও সুনিল নারিনের ওপেনিং জুটিতেই আসে শতরান। ছবিঃ ফিরোজ আহমেদ
আগের ম্যাচে রান করতে মাথা খুটে মরেছেন ব্যাটসম্যানরা। সন্ধ্যায় টস জিতে এমন পিচেই আগে ব্যাটিং নেন সাকিব। অন্ধকার নামতেই যেন ভোজবাজির মতো  উইকেটের চরিত্রও গেল পালটে। তবে তাতে বড় অবদান আছে রাজশাহীর ফিল্ডারদের। তিন তিনবার আউট হতে পারতেন সুনিল নারিন। প্রথমে ৮ রানে কাভারে তার লোপ্পা ক্যাচ ছেড়ে দেন মুমিনুল হক, ১১ রানে বাউন্ডারি লাইনে আরেকটি সহজ ক্যাচ ছাড়েন উসামা মির। পরে আরেকবার ক্যাচ দিয়েছিলেন নারিন, ওই ক্যাচও ফেলে দেন সামিথ প্যাটেল।

বারবার জীবণ পেয়ে ‘বোনাস’ রানের জন্য নির্ভার খেলতে না থাকা নারিন আরও তেতে উঠেন। চার-ছয়ের ফুলঝুরিতে কঠিন পিচকেও বানিয়ে দেন সহজতম। চারটা বাউন্ডারির সঙ্গে মেরেছেন ছয়খানা ছক্কা।  নারিনকে থামিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তবে ততক্ষণে ৩৪ বলে ৬৯ রান করে ফেলেছেন তিনি। ওভারপ্রতি প্রায় ১০ করে রান নিয়ে ম্যাচের লাগাম নিয়ে নিয়েছেন নিজেদের হাতে।

ক্যাচ মিসের মহড়া চলেছে রাজশাহী কিংস ফিল্ডারদের। ছবিঃ ফিরোজ আহমেদ
নারিনের পর বেশিক্ষণ টেকেননি ডেলপোর্ট। সামিথ প্যাটেলের বলে তার ক্যাচও ছাড়তে ছাড়তে ধরেছেন মোস্তাফিজুর রহমান। ৫৪ বলে ৫৩ করা জো ডেনলিকে নিজের বলেই ক্যাচ বানান কাজি অনিক। মজার কথা ওই ক্যাচটিও পড়তে পারত, দুবারের চেষ্টা হাতে জমাতে পারেন তিনি।

বাদবাকি সময় রাজশাহী কিংস বোলারদের উপর ‘জুলুম’ চালিয়েছেন কাইরন পোলার্ড। বিশাল বিশাল সব ছক্কায় রান বাড়িয়েছেন তরতর করে। আফ্রিদির আউটের পর পোলার্ডের সঙ্গে শেষ ওভারে যোগ দেন সাকিব। চার-ছয়ে দল পেরিয়ে যায় দুশো রান। ১৪ বলে চার ছক্কায় ৩৩ রান করে আউট হন পোলার্ড। রাজশাহীর বোলারদের বেদম পিটুনি খাওয়ার দিনে ব্যতিক্রম ছিলেন মোস্তাফিজ। চার ওভার বল করে কোন উইকেট না পেলেও মাত্র ২২ রান দেন তিনি।

ইনিংস বিরতিতেই ম্যাচের গতিবিধি আঁচ করা যাচ্ছিলো। পরে সেই ধারণা ভুল প্রমাণ করতে পারেননি কিংস ব্যাটসম্যানরা। ঢাকার রানের নিচে চাপা পড়ে কেবল খাবি খেয়েছেন তারা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ঢাকা ডায়নামাইটস:  ২০৫/৫ (ডেনলি ৫৩, নারিন ৬৯, ডেলপোর্ট ০, পোলার্ড ৩৩  ,আফ্রিদি ১৪, সাকিব ১৩*, জহুরুল ০* ;  সামি ১/২৯  , মোস্তাফিজ ০/২২,  অনিক ২/৫২, মিরাজ ১/২০, মির ০/৩৮, সামিথ ১/২৪)

রাজশাহী কিংস:১০৫/১০ (সিমন্স ১, মুমিনুল ১৯, রাইট ০, মুশফিক ০, সামিথ ২৮, মির ১০, মিরাজ ১৬, অনিক ৭*, সামি ১,  মোস্তাফিজ ৭   ; মোসাদ্দেক ২/৯, সাকিব ৪/৮  ,  নারিন ০/১১, পোলার্ড ১/১৯, আফ্রিদি ১/৩৭, হায়দার ০/১০, সাদ্দাম  ২/৩ )

টস: ঢাকা ডায়নামাইটস

ফল: ঢাকা ডায়নামাইটস ৯৯ রানে জয়ী। 

ম্যান অ দ্য ম্যাচ: সুনিল নারিন 

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

7h ago