রফতানি বাড়ছে স্যুট ও ব্লেজারের

স্থানীয় উদ্যোক্তাদের হাত ধরে স্যুট ও ব্লেজার এখন রফতানি ক্ষেত্রে সম্ভাবনায় ও শক্তিশালী তৈরি পোশাক হয়ে উঠছে। ৫২০ কোটি ডলারের এই টেইলরিং খাতে ধীরে ধীরে নিজেদের অবস্থান তৈরি করছেন বাংলাদেশের স্যুট ও ব্লেজার ব্যবসায়ীরা।
রফতানি বাড়ছে স্যুট ও ব্লেজারের
ঢাকার তেজগাঁওয়ে এনার্জিপ্যাক ফ্যাশনস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমায়ুন রশিদ তার প্রতিষ্ঠানে উৎপাদিত কোট দেখাচ্ছেন। ছবি: সংগৃহীত

স্থানীয় উদ্যোক্তাদের হাত ধরে স্যুট ও ব্লেজার এখন রফতানি ক্ষেত্রে সম্ভাবনায় ও শক্তিশালী তৈরি পোশাক হয়ে উঠছে। ৫২০ কোটি ডলারের এই টেইলরিং খাতে ধীরে ধীরে নিজেদের অবস্থান তৈরি করছেন বাংলাদেশের স্যুট ও ব্লেজার ব্যবসায়ীরা।

বাংলাদেশ এখন প্রায় ২০ কোটি ডলারের পুরুষদের টেইলরিং পণ্য রফতানি করে। তিন-চার বছর আগে এই অংক ছিল মাত্র দুই কোটি।

পাঁচ বছর আগেও বাংলাদেশে মাত্র একটি প্রতিষ্ঠান ছিল যারা রফতানির জন্য স্যুট তৈরি করতো। বর্তমানে এই সংখ্যা ছয়ের বেশি বলে জানিয়েছেন এনার্জিপ্যাক ফ্যাশনস এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমায়ুন রশিদ। বাংলাদেশের স্যুট রফতানিকারী অন্যতম প্রতিষ্ঠানটির এই কর্মকর্তা বলেন, ‘২০২১ সালের মধ্যে ১০ কোটি ডলারের পণ্য রফতানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি। বর্তমানে ২ কোটি ৬০ লাখ ডলারে পণ্য রফতানি করে এনার্জিপ্যাক।’

পাশ্চাত্যের বাজারের চাহিদা পূরণে তার কর্মীরা খুবই ব্যস্ত বলে জানান হুমায়ুন রশিদ। তাই নতুন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে নতুন পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন তিনি। হুমায়ুন জানান, বর্তমানে ৩ হাজার ১০০ কর্মী তার কারখানায় কাজ করেন। সামনের বছর এই সংখ্যা হবে চার হাজার।

স্যুটগুলো ছয় থেকে আট ডলারে বিক্রি হয়। আর বাংলাদেশে তৈরি টি-শার্ট বিক্রি হয় ছয় ডলারে। রশিদ বলেন, রিটেইলররা একটি স্যুটের জন্য ১৫ থেকে ৩০ ডলার দাম দেয়। চীন, ভারত, তুরস্ক ও ইতালি, ফ্রান্স, পর্তুগাল, বুলগেরিয়া ও রোমানিয়ার মতো ইউরোপীয় দেশগুলো ইন্ডাস্ট্রিয়াল মাত্রায় স্যুটের অর্ডার দেয়।

রফতানিকারকরা জানান, ‘আমাদের এই খাতে বিশেষ পণ্য রয়েছে। তাই আমরা কর্মীদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দিয়ে রাখি।’

যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র জাপান আর জার্মানিতেই সবচেয়ে বেশি রফতানি করা হয়। আর সুইডিশ প্রতিষ্ঠান ‘এইচ এন্ড এম’ ও ব্রিটিশ রিটেলার মার্কস এন্ড স্পেন্সার বাংলাদেশের বড় ক্রেতা।

নিউ এজ গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম তিন বছর আগে তার হংকংয়ের ব্যবসায়িক সহযোগীকে নিয়ে আশুলিয়ায় ব্লেজার কারখানা গড়ে তোলেন। বর্তমানে নিউ এজ শীর্ষস্থানীয় রফতানিকারক কোম্পানি। সেখানে এখন কাজ করে ১২০০ কর্মী। আর মাসে প্রায় এক লাখ পিস উৎপাদন হয়।

আসিফ বলেন, ‘আমি মূলত ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রেই স্যুট রফতানি করি। প্রত্যেক ব্লেজারের জন্য ১০ থেকে ১২ ডলার লাভ করি আমরা।’

হুমায়ুন রশিদের মতো তিনিও ব্যবসার পরিধি বড় করার চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন, ‘চীন ব্যবসা থেকে সরে যাওয়ায় বাংলাদেশের জন্য সুযোগ তৈরি হয়েছে। তবে দক্ষ কর্মীর অভাবই এখন বড় বাধা।’

অনন্ত গ্রুপের পরিচালক আসিফ জাহিরও জানান, আদমজী এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোনে প্রতিমাসে এক লাখ স্যুট তৈরি করেন তারা। দেশের শীর্ষস্থানীয় এই রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা বলেন, ‘স্যুট তৈরি শিল্প এখন বিশেষ ক্ষেত্র। যদিও আমাদের প্রযুক্তি ও ক্রেতা রয়েছে তারপরও এর বিকাশে আরও সময় লাগবে।’

জাহির বলেন, একটি টি-শার্টে ২০ ডলার লাভ সম্ভব না। কিন্তু একটি স্যুটে এর চেয়েও বেশি সম্ভব।   সম্ভাবনাময় এই খাতটি ডেনিমসহ অন্যান্য বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর মতো ব্যবসা করার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছে।

আরেকটি শীর্ষস্থানীয় তৈরি পোশাক রফতানিকারক এনভয় গ্রুপের চেয়ারম্যান কুতুবুদ্দিন বলেন, তারা এখনই স্যুট তৈরিতে যাচ্ছেন না। বরং ডেনিম উৎপাদনেই বেশি মনোযোগ দিতে চান তারা।

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

9h ago