কলকাতায় মেগা ট্রেড ফেয়ার ২০১৭

জমে উঠছে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নের বেচাকেনা

ভারতের কলকাতার সায়েন্স সিটির মাঠে জমে উঠেছে ‘মেগা ট্রেড ফেয়ার ২০১৭’ নামের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। দুটি বড় প্যাভিলিয়নে সবচেয়ে বেশি ৮২টি স্টল নিয়ে বসেছে বাংলাদেশ।
Kolkata Mega Trade Fair 2017
ভারতের কলকাতার সায়েন্স সিটির মাঠে আয়োজিত ‘মেগা ট্রেড ফেয়ার ২০১৭’ এ বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে আগত ক্রেতারা। ছবি: স্টার

ভারতের কলকাতার সায়েন্স সিটির মাঠে জমে উঠেছে ‘মেগা ট্রেড ফেয়ার ২০১৭’ নামের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। দুটি বড় প্যাভিলিয়নে সবচেয়ে বেশি ৮২টি স্টল নিয়ে বসেছে বাংলাদেশ।

মেলায় অংশ নিয়েছে ভারতের ২০টি রাজ্য ছাড়াও এর অন্য প্রতিবেশী দেশ নেপাল, ভুটান ও পাকিস্তান। এছাড়াও, অংশ নিচ্ছে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রসহ আরো ১৬টি দেশ।

১৬তম মেগা ট্রেড ফেয়ার নামে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলাটি শুরু হয়েছে গত ১৫ ডিসেম্বর এবং চলবে আগামী ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। স্বাভাবিকভাবে যতই এগিয়ে আসছে সমাপ্তির দিন, পছন্দের পণ্য কিনতে কলকাতার ক্রেতাদের ভিড়ও বাড়ছে তত বেশি।

তবে এ বছর লাল-সবুজের বাংলাদেশের উপস্থিতি সবার নজর কাড়ছে। বাংলাদেশের মেলামাইন, তৈরী পোশাক, কোমলপানীয়, বিস্কুট, চামড়া, পাট ও পাটজাত সামগ্রী ছাড়াও এক ছাদের তলায় বাংলাদেশের হরেক রকম পণ্যের সমাহার রয়েছে। তাই অন্য প্যাভিলিয়ন থেকে বাংলাদেশের প্যাভিলিয়নের দিকে ক্রেতাদের লম্বা লাইন চোখে পড়ছে।

মেলায় এবার বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে রয়েছে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী নকশী কাঁথা এবং ঢাকাই জামদানির। এগুলোর স্টলের ভিড় ঈর্ষার কারণ হতে পারে অন্য স্টলের বিক্রেতাদের কাছে। জামালপুরের নকশী কাঁথা বিক্রেতা মোহম্মদ শাহনূর আলম বলছেন, একটি কাঁথার দাম রাখা হচ্ছে ভারতীয় মূল্যে নয় হাজার থেকে ১২ হাজার রুপি পর্যন্ত। মেলার তিন দিনেই দামি এই ‘সংগ্রহ’ শেষ হয়ে গিয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

কলকাতার ক্রেতাদের কাছে বরাবরই পছন্দের শীর্ষে রয়েছে ঢাকাই জামদানি। এবারও স্থানীয় নারীদের খোঁজ ছিল নতুন কি ধরণের জামদানি তৈরি করেছে বাংলাদেশের শিল্পীরা।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক-ছাত্রী রুচিতা নাথ বললেন, “দেখুন, আমার বাবা-মায়ের বাড়ি বাংলাদেশে। দেশটির প্রতি তাঁদের আকর্ষণ কমেনি। বিশেষ করে, বাংলাদেশের শাড়ি ও মেলামাইনের প্রতি। কলকাতার যেখানেই মেলা হোক, বাংলাদেশের স্টল থাকলে আমরা সেখানে যাবোই।”

ঢাকা থেকে আসা একজন জামদানি বিক্রেতা আরিফুল ইসলাম কাশেম জানালেন, তারা পাঁচ হাজার থেকে শুরু করে ১৫ হাজার রুপির জামদানি শাড়ি নিয়ে এসেছেন মেলায়। প্রথম তিন দিনেই দামি শাড়িগুলো বিক্রি হয়ে গিয়েছে। কলকাতার নারীরা আসলে ঢাকাই জামদানির প্রতি খুবই দুর্বল। তাই আমরাও তাদের প্রত্যাশা ও বিশ্বাস অটুট রেখে ব্যবসা করছি।”

কলকাতার এই মেলায় বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নের প্রধান এবং এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরো (ইপিবি)-র সহকারী পরিচালক আব্দুল মোতালেব দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, কলকাতায় বাংলাদেশি পণ্যের চাহিদা বাড়ায় বাংলাদেশ সরকারও এমন মেলায় অংশ গ্রহণ বাড়িয়েছে। ভারতে যতগুলো বড় বাণিজ্য মেলা হয়, কলকাতার ‘মেগা ট্রেড ফেয়ার’ এর অন্যতম। তাই এখানে এবার ৮২টি প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্য নিয়ে এসেছে।

তিনি বলেন, “গত বছর জামদানির একটি বড় রফতানি চুক্তি হয়েছিল এই মেলায়। এবারও বাংলাদেশের বহু পণ্যের ক্ষেত্রেই স্থানীয়রা আগ্রহ দেখাচ্ছেন।” মেলা শেষ হওয়ার পর এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করা হবে বলেও জানান তিনি।

মেলার পর্যবেক্ষক ও বাংলাদেশ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব কর্মকর্তা শফিকুল আলম খানও বললেন একই কথা। “শুধু বাণিজ্য করাই লক্ষ্য নিয়ে নয়; কলকাতায় আসলে আমরা দুই দেশের মানুষের সঙ্গে পণ্যের যোগাযোগ তৈরির কাজ করছি,” মন্তব্য করেন তিনি।

Jute made product
কলকাতার ‘মেগা ট্রেড ফেয়ার ২০১৭’ এ বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে একটি পাটজাত পণ্য। ছবি: স্টার

মেলায় এবার নজর কাড়ছে বাংলাদেশের পাটজাত পণ্যও। হাত ব্যাগ, অফিস ব্যাগ থেকে গহনার বাক্সও তৈরি হচ্ছে পাট দিয়ে। সেসব পণ্য মিলছে মেলায়। “এ মেলায় পাটজাত পণ্যগুলো হট কেকের মতো বিক্রি হচ্ছে,”- দ্য ডেইলি স্টারকে বললেন ময়মনসিংহ থেকে আসা শিল্পী ও বিক্রেতা আইনুন নাহার।

বাংলাদেশের ৮২টি স্টলের মধ্যে এবার ১৮টি স্টলেই রয়েছে পাটজাত পণ্য। প্রতিটি স্টলই নিজস্ব শৈলী নিয়ে হাজির হয়েছে বলে জানালেন এক বিক্রেতা সোহেল রানা।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

5h ago