রংপুরে ভোট গ্রহণ শেষ, গণনা চলছে
রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচনের জন্য ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে এখন ভোট গণনা চলছে। আজ (২১ ডিসেম্বর) সকাল ৮টা থেকে চার স্তরের নিরাপত্তার মধ্যে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোট গ্রহণ চলে।
ভোট গ্রহণের পরিবেশ নিয়ে মেয়র প্রার্থীদের সবাই সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণ হয়েছে।
আজ দুপুরে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী শরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদ দুজনেই নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে ইতিবাচক মনোভাবের কথা জানিয়েছেন।
অন্যদিকে, বিএনপির প্রার্থী কাওসার জামান বাবলা সব ভোটকেন্দ্রেই শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণের কথা বললেও দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা তাঁদের প্রার্থীর পোলিং এজেন্টদের ক্ষমতাসীন দলের লোকেরা ভোটকেন্দ্র থেকে বের করে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন।
রংপুর সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা দুপুর ১২টার দিকে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, সব ভোটকেন্দ্রেই কোনো ধরনের সহিংসতা ছাড়াই সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোট চলছে। দিনের প্রথমার্ধে অন্তত ৩০ শতাংশ ভোট পড়েছে বলেও তিনি যোগ করেন।
এবার রংপুর সিটির ১৯৩টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ১২৮টিকে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করার জন্য মোট সাড়ে পাঁচ হাজার নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন রয়েছেন। এর মধ্যে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তায় ২২-২৫ জন দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও, ১১ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও ৩৩ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্বে থাকবেন বলে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
মেয়র পদের জন্য এবার সাত জন প্রার্থী নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আর ওয়ার্ড কাউন্সিলরের জন্য ২১১ জন ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৬৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এবার মোট ভোটার সংখ্যা তিন লাখ ৯৩ হাজার ৯৯৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার এক লাখ ৯৬ হাজার ৩৫৬ জন ও নারী ভোটার এক লাখ ৯৭ হাজার ৬৩৮ জন। তারা একজন মেয়র, ৩৩জন ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ১১ জন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর নির্বাচিত করবেন।
রংপুরের ভোটাররা মনে করছেন, মেয়র পদের জন্য আওয়ামী লীগের সরফুদ্দিন আহমেদ (ঝন্টু), জাতীয় পার্টির মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও বিএনপির কাওসার জাহান বাবলার মধ্যে মূল লড়াই হবে। দেশের সর্ব উত্তরের এই সিটি করপোরেশনটিতে এবারই প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
২০১২ সালের ২০ ডিসেম্বর রংপুরের প্রথম সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থক সরফুদ্দিন আহমেদ (ঝন্টু) মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান।
ওই নির্বাচনে সরফুদ্দিন এক লাখ ছয় হাজার ২৫৫ ভোট পেয়েছিলেন। মোস্তাফিজ ও জাতীয় পার্টি সমর্থিত একেএম আব্দুর রৌফ মানিক পেয়েছিলেন যথাক্রমে ৭৭ হাজার ৮৩৫ ও ৩৭ হাজার ২০৮ ভোট। অন্যদিকে, বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী কাওসার জাহান আটকে ছিলেন মাত্র ২১ হাজারের কিছু বেশি ভোটে।
এবার জাতীয় পার্টির তরফ থেকে মোস্তাফিজকে মনোনীত করায় দলটির চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদের ভাইপো হোসেইন মকবুল শাহরিয়ার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে লড়াই করছেন।
Comments