নিজের দল গড়ে রাজনীতিতে নামছেন রজনীকান্ত

​নতুন বছর ২০১৮ শুরুর আগে ‘সারপ্রাইজ স্পিচ’ দিয়ে ভারতের রাজনীতিতে আসার কথা জানালেন শিবাজি রাও গায়েকোয়াদ, যাকে সবাই চেনেন রজনীকান্ত নামেই।
রজনীকান্ত

নতুন বছর ২০১৮ শুরুর আগে ‘সারপ্রাইজ স্পিচ’ দিয়ে ভারতের রাজনীতিতে আসার কথা জানালেন শিবাজি রাও গায়েকোয়াদ, যাকে সবাই চেনেন রজনীকান্ত নামেই।

বললেন, তামিলনাড়ু রাজ্যকে নিয়ে অন্য রাজ্যগুলো হাসাহাসি করছে। গণতন্ত্র এখনে উপেক্ষিত; লুণ্ঠিত। রাজনীতি মনে হচ্ছে ভোগ-দখল। এখনই উত্তরণের সময়, সময় নৈতিক পরিবর্তনেরও। 

আসছে বিধানসভা ও লোকসভা নির্বাচনে তার গড়া নতুন দলের প্রার্থীরা ‘গণতন্ত্র রক্ষা’ স্বার্থে নির্বাচনী লড়াইয়ে অবতীর্ণ হবে।

রজনীকান্ত আরও বললেন, ১৯৯৬ সাল থেকে রাজনীতির সঙ্গে সম্পর্ক। সরাসরি রাজনীতিকে প্রবেশে কিছুটা বিলম্ব হল। কিন্তু এখনও সময় আছে পরিবর্তনের।

দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ুর বাসিন্দা ও ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যতম সুপার স্টার রজনীকান্ত বছরের শেষ দিনে এইভাবেই রাজনীতিতে আসার কথা জানালেন।

দক্ষিণ ভারতের রাজনীতির প্রধান মুখ জয়ললিতাও সিনেমা জগতের মানুষ। রিলের সেই মুখগুলো রিয়েল লাইফে মানুষের প্রতিনিধি হয়ে রাজ্য রাজনীতির শেষ কথা হতে পারেন-সেটা জয়ললিতা প্রমাণ করে গিয়েছেন। যদিও তার জীবনযাপন নিয়ে রয়েছে বহু আলোচনা-সমালোচনা। এমনকি মৃত্যুর পরও নানা প্রশ্নে বিদ্ধ তার জীবদ্দশার কর্মকাণ্ড। 

২০১৬ সালে ৫ ডিসেম্বর এআইডিএমকে’র সর্বময়ী জয়ললিতার মৃত্যুর পর সেখানে রাজনীতিতে বিভাজনের দৃশ্য গোটা ভারতে একটা নেতিবাচক দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। ক্ষমতায় যাওয়ার নোংরা কৌশলে জয়ললিতার এক সময়ের ঘনিষ্ঠরা দল এবং সরকারের কর্তৃত্ব কায়েম করতে তৎপর হয়ে ওঠেন। সেটা নিয়েই শুরু হয় দলীয় কোন্দল। যদিও মুখ্যমন্ত্রীর গদিতে বসার আগেই জেলে যেতে হয়েছে শশিকলাকে। কিন্তু তার ঘনিষ্ঠ পলানিস্বামীকে মুখ্যমন্ত্রী করে যান শশি। এইসব ঘটনায় তামিলনাড়ুর শাসক দল কার্যত দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। 

রাজনীতির শুদ্ধিকরণের প্রশ্নে সুপার স্টার রজনীকান্ত রাজনীতিকে নামুক; কোটি কোটি ভক্ত রাস্তায় নেমে সেই দাবি তোলেন। এ কারণেই ২০১৭ সাল জুড়ে রজনীর রাজনীতিতে আসার গুঞ্জন চলে। গুঞ্জনের থলে থেকে বিড়াল বেড় করতে কয়েক বার সংবাদ মাধ্যমের কাছে মুখ খুলতেও হয়েছে দক্ষিণী সুপার হিরোকে। প্রতিবারই তিনি বলেছিলেন, রাজনীতিতে আসার কোনো ইচ্ছা তার নেই।

কিন্তু ভারতের কিছু প্রভাবশালী গণমাধ্যম বরাবরই রজনীকান্তের রাজনীতিতে আসার খবর গুরুত্বের সঙ্গে দিয়ে আসছিল। সংবাদ মাধ্যমের দৃঢ়তায় রাজনীতিতে আসছেন কি আসছেন না ৩১ ডিসেম্বর সেই ঘোষণা দেওয়ার তারিখ চূড়ান্ত করেছিলেন সুপারস্টার নিজেই। 

পূর্ব-ঘোষণা অনুযায়ী এদিন সকালে রাজ্যটির রাজধানী চেন্নাইতে কদমবাক্কামের রাঘবেন্দ্র ম্যারেজ হলে আয়োজিত সুধী সমাবেশে রজনীকান্ত তার রাজনীতিতে আসার কারণ ব্যাখ্যা করেন। 

রজনী বলেন, আমি পদের জন্য রাজনীতিতে আসছি না। সেটা হলে আমি ১৯৯৬ সালে যখন আমার বয়স ৪৫ ছিল তখনই আসতে পারতাম। আজ যখন আমার বয়স ৬৮ তখন রাজনীতিকে আসতে চাইছি- এটার কারণ আপনারা বুঝতেই পারছেন।

রজনীকান্ত আরও বলেন, আমি আদর্শের রাজনীতি করতে চাই। কোনও জাতি কিংবা ধর্ম নিয়ে রাজনীতি নয়।

বর্তমানে রাজনীতি কুলসিত, পদ্ধতিতেও ভেজাল ঢুকে গেছে- গণতন্ত্রও লুণ্ঠিত; এখনই সময় উত্তরণের। তাই রাজনীতিতে এলাম। আমার দল আগামী বিধানসভা ও লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের সব আসনে প্রার্থী দেবে। পরিবর্তনের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে আমার দলের প্রার্থীরা।

গুঞ্জন ছিল রজনীকান্ত বিজেপি শিবিরে নাম লেখাবেন। কিন্তু এদিন তার ঘোষণায় পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে তিনি কোনও রাজনৈতিক দলে যোগ দিচ্ছেন না। নিজেই একটা পৃথক দল গড়বেন। তবে কবে, কি তার নাম হবে সেসব কিছুই এদিন না বললেও রজনীকান্ত দৃঢ়ভাবে বলেছেন, ‘এটা রাজনীতি, চলচ্চিত্র নয়। রাজনীতির অলিগলিতে হেঁটে চলাই আমার লক্ষ্য।’

Comments

The Daily Star  | English

How Islami Bank was taken over ‘at gunpoint’

Islami Bank, the largest private bank by deposits in 2017, was a lucrative target for Sheikh Hasina’s cronies when an influential business group with her blessing occupied it by force – a “perfect robbery” in Bangladesh’s banking history.

8h ago