পাচারকারীর খপ্পরে পড়ে ভারতে আটক রফি শেখ দেশে ফিরল
পাচারকারীর খপ্পর থেকে উদ্ধার হওয়া খুলনার কিশোর রফি শেখ ২১ মাস পর বাংলাদেশে নিজের বাড়ি ফিরেছে। তবে তার সহোদর দুই বোন এখনোও ভারতের মালদা জেলায় নিরাপত্তা হেফাজতে আটক রয়েছে। কবে ফিরবে তারা, সেটি এখনও অনিশ্চিত।
আজ ২ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) সকাল সাড়ে এগারোটার দিকে ভারত-বাংলাদেশের হিলি সীমান্ত দিয়ে ভারতের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ হোমে আশ্রিত ওই রফিকে তার বাবার বাড়ির স্বজনদের হাতে তুলে দেয়।
খুলনা জেলার দৌলতপুর থানার দেওয়ানা মোল্লাপাড়া গ্রামের মৃত ফেরদৌস শেখের ছেলে রফি শেখ এতো দিন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার শুভায়ন হোমে আশ্রিত ছিল।
রফিকে নিজের পরিবারের কাছে তুলে দেওয়ার সময় হিলি সীমান্তে উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ দিনাজপুরের আইসিপি বিকাশ মণ্ডল, একই জেলার চাইল্ডলাইনের কো-অর্ডিনেটর সূরজ দাশ, শুভায়ন হোম কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি পরেশ হাজরাসহ হিলির ওসি আফতাব হোসেন এবং বিএসএফ ও বিজিবির কর্মকর্তারা।
চাইল্ডলাইন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কো-অর্ডিনেটর সূরজ দাশ দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, ২০১৬ সালে ২০ মে রফি শেখ ও তার পরিবারে সদস্যসহ মোট সাতজন বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীকে বালুরঘাট থানার পুলিশ আটক করে। তাদের মধ্যে চারজনই ছিল শিশু।
আদালতের নির্দেশে, উদ্ধার হওয়া চার শিশুর যত্ন ও সুরক্ষা এবং তাদের সঠিক কাউন্সিলিংয়ের জন্য দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট থানা চাইল্ডলাইনের হেফাজতে তুলে দেওয়া হয়। চার শিশুর মধ্যে তিন কন্যা শিশুকে পাঠানো হয় মালদা চিলড্রেন হোমে।
সেফ হোম শুভায়ন কর্তৃপক্ষ মনে করছে, নাবালক রফিকে মহারাষ্ট্রের পুনেতে বিক্রির উদ্দেশ্যেই নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। রফির দুই বোন মালদা জেলা চিলড্রেন হোমে রয়েছে।
কিন্তু, কেন দুই বোনসহ রফি শেখকে ভারতের নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, এর পেছনে কোন চক্র জড়িত আছে- এর তদন্ত করতে গিয়ে সংশ্লিষ্টরা এমন তথ্য খুঁজে পেয়েছে।
তারা জানান, বছর সাতেক আগে রফি শেখের বাবা মারা যাওয়ার পর রফির মা প্রতিবেশী এক মহিলার সহযোগিতায় ভারতের পুনে চলে যায়। সেখানে তিনি দেহব্যবসার জড়িয়ে পড়েন এবং স্থানীয় এক ব্যক্তিকে বিয়েও করেন। রফি শেখের মা রুপা সরকারের নির্দেশেই দুই বোনসহ তাকে সীমান্ত পার করে ভারতের নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। পুনেতে নিয়ে তাদেরকে বিক্রি করে দেওয়ার ছক কষেছিল রুপা সরকার, মন্তব্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের।
Comments