‘মধুময় চরিত্রটি শুভ ছাড়া আর কেউ হতে পারেন না’

কলকাতার পরিচালক অরিন্দম শীল। বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ প্রযোজনায় এবার তিনি নির্মাণ করতে যাচ্ছেন 'বালিঘর'। বাংলাদেশের বেঙ্গল ক্রিয়েশনস-এর সঙ্গে থাকছে ভারতের নাথিং বিয়ন্ড সিনেমা। ‘বালিঘর’ চলচ্চিত্রে কলকাতার অভিনেতাদের পাশাপাশি থাকবেন বাংলাদেশের অভিনয় শিল্পীরাও।...
Arindam Sil
পরিচালক অরিন্দম শীল। ছবি: সংগৃহীত

কলকাতার পরিচালক অরিন্দম শীল। বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ প্রযোজনায় এবার তিনি নির্মাণ করতে যাচ্ছেন 'বালিঘর'। বাংলাদেশের বেঙ্গল ক্রিয়েশনস-এর সঙ্গে থাকছে ভারতের নাথিং বিয়ন্ড সিনেমা। ‘বালিঘর’ চলচ্চিত্রে কলকাতার অভিনেতাদের পাশাপাশি থাকবেন বাংলাদেশের অভিনয় শিল্পীরাও। আগামী মার্চ থেকে ‘বালিঘর’-এর কাজ শুরু হবে। গত ২০ জানুয়ারি ঢাকায় প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান দুটির আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অংশ নিয়েছিলেন পরিচালক অরিন্দম শীল। সেসময় সাক্ষাৎকারটি নেন জাহিদ আকবর

 

স্টার অনলাইন: প্রায় এক বছর আগে থেকে ‘বালিঘর’ নির্মাণের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন…

অরিন্দম শীল: তা ঠিক প্রায় এক বছর ধরে ভাবনা কিংবা কথাবার্তার চূড়ান্ত আনুষ্ঠানিক রূপ পেল আজ। বছর খানেক আগে জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক সুচিত্রা ভট্টাচার্য রচিত ‘ঢেউ আসে ঢেউ যায়’ উপন্যাসটি পড়ছিলাম। তখন মনে হলো কাহিনিটি নিয়ে দুই দেশের জন্য সব থেকে যোগ্য একটি ছবি হতে পারে। অনেক শিল্পীকে একসঙ্গে নিয়ে কাজ করা যেতে পারে। সেখান থেকেই পরিকল্পনার বাস্তবায়ন। এরপর, একটু একটু করে এগিয়ে যাওয়া।

স্টার অনলাইন: বাংলাদেশে যৌথ প্রযোজনা নিয়ে একটি অস্থিরতা চলছে। এরইমধ্যে যৌথ প্রযোজনায় সিনেমাটি নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কোন সমস্যা হবে না তো?

অরিন্দম শীল: ছবিটি যৌথ উদ্যোগের হলেও এর ৯৫ ভাগ শুটিং বাংলাদেশে হবে। সেটি একটি বিরাট কথা। আমার মনে হয় যখন দুটি দেশ মিলে কাজ করে তখন সেটির মধ্যে যদি সুস্থ ভাবনা থাকে, সততা থাকে তখন সেটি আরেক ধাপ অনায়াসেই এগিয়ে যেতে পারে। তা না হলে হয় না। আমি যৌথ উদ্যোগের নামে সেটিকে একটি প্রহসন করতে পারি না। আজকে আমার দেশে দাঁড়িয়ে আমার মতো করে একটি চলচ্চিত্র করতে পারি। কিন্তু দুটো দেশ মিলিয়ে যখন একটি চলচ্চিত্র হচ্ছে, সেটি তো একটি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র হবে।

আমাদের এ যৌথ উদ্যোগের ভাষা এক। একটি উদ্যোগের ভাষা যখন এক হয়, তখন এর পরিধি বিশাল আকার ধারণ করে। এই পরিধি যখন এ দেশ ভাগ হয়নি তখন ছিল। এরপর যখন ভাগ হয়েছে, তারপরও রয়েছে। কিন্তু, এই পরিধির ব্যাপ্তি আমরা স্বীকার করতে অস্বীকার করেছি। আমার বারবার মনে হয়েছে চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে এই সময়টি আসা প্রয়োজন। যার ফলে বিষয়টি স্বীকার করে নেওয়া যাবে। সে কারণে বেঙ্গল ক্রিয়েশনের মতো একটি প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন- যে জোরে এ ধরনের কাজ করা যেতে পারে। দুই দেশের ভালোটিকে নিয়ে আরও ভালো কিছু করার স্বপ্ন দেখা যেতে পারে।

স্টার অনলাইন: ‘বালিঘর’ নির্মাণের ক্ষেত্রে আপনার আগ্রহ বোধের কারণটা কী?

অরিন্দম শীল: আমি এ গল্পটি নিয়ে কাজ করতে চেয়েছি এ কারণে যে, আমাদের শুধু যে ভাষা এক, তা নয়। আমাদের সংস্কৃতিও এক। আমাদের আচার-ব্যবহার অনেক কিছু এক। সব থেকে বড় ব্যাপার আমাদের ইমোশন এক। আমরা এক ভাষায় কাঁদতে পারি, এক ভাষায় হাসতে পারি। এ রকম ইমোশন নিয়ে যদি চলচ্চিত্র করা যায়, হয়তো মন্দ হয় না। এই ছবিটি সম্পূর্ণভাবে একটি রিলেশনশিপ ভিত্তিক। মূল কাহিনি একটি রিইউনিয়নকে ঘিরে।

স্টার অনলাইন: অনেক তারকা শিল্পীই তো রয়েছেন ‘বালিঘর’ ছবিতে?

অরিন্দম শীল: চলচ্চিত্রে চরিত্র নির্বাচনের ক্ষেত্রে সাধারণ যে ধারা, সেটিকে ভেঙে কাজ করতে আমি ভালোবাসি। আরিফিন শুভ মূলত বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রে কাজ করেন। কিন্তু, আমি দুরকম চলচ্চিত্রে বিশ্বাস করি- একটি ভালো চলচ্চিত্র অন্যটি খারাপ। এর বাইরে কোন চলচ্চিত্র হয় বলে আমি মনে করি না। একটি ভালো চলচ্চিত্র করতে গেলে তো ভালো শিল্পী দরকার। শুভর মধ্যে সে জায়গাটি রয়েছে। অনেক উঁচু মানের শিল্পী তিনি। তিশাও অনেক বড় মাপের শিল্পী। নওশাবাও  অনেক ভালো অভিনেত্রী। আমরা কলকাতা থেকে যাঁদের সিলেক্ট করেছি তাঁরা প্রত্যেকেই আদতে শিল্পী। সেই জায়গাটিতেই বেশ জোর দিই সব সময়।

স্টার অনলাইন: বাংলাদেশের শিল্পীদের নিয়ে ছবিটি করবেন এমন ভাবনা কী শুরুতে ছিলো?

অরিন্দম শীল: বাংলাদেশ থেকে কোন শিল্পীকে নিয়ে কাজ করবো তা প্রথমে ভাবিনি। সবার প্রতি সম্মান নিয়েই কথাটি বলছি। এরইমধ্যে আমি আরিফিন শুভর কাজ দেখলাম। যোগাযোগ হলো, কথা বার্তা হলো। ত্রিশ মিনিটের মধ্যে মনস্থির করে ফেলেছি মধুময় চরিত্রটি শুভ ছাড়া আর কেউ হতে পারেন না। তাঁর মধ্যে এক অসম্ভব সম্ভাবনা রয়েছে।

স্টার অনলাইন: বাংলাদেশের সিনেমায় যতগুলো সংকট রয়েছে, এর মধ্যে একটি হলো প্রেক্ষাগৃহের সংকট। আপনার ছবি নিয়ে কীভাবে এগোবেন?

অরিন্দম শীল: একটি বিষয় দেখুন, বাংলাদেশে সিনেমা হলের সংখ্যার পরিমাণ অনেক কম। সে দিক থেকে একটি সমস্যা রয়েছে। তবে আরেকটি বিরাট সুবিধা রয়েছে- সেটি হচ্ছে সারা পৃথিবী জুড়ে এতো বাঙালি! দুই বাংলার বাঙালিদের একত্রিত করলে পৃথিবীতে পঞ্চম বৃহত্তর জাতি হিসেবে আমরা রয়েছি। সেই জায়গা থেকে যদি সমস্ত বাঙালিদের কাছে আমরা পৌঁছতে পারি তাহলে তো বিশাল একটি বাজার পাওয়া যাবে।

স্টার অনলাইন: আপনার পরিচালনায় প্রথম ছবি ‘আবর্ত’-তে সম্পর্কের বেশ টানাপোড়েন দেখিয়েছেন, অন্য ছবিগুলোতেও গল্পের ভিন্নতা ছিল, ‘বালিঘর’ নিয়ে কিছু বলবেন কি?

অরিন্দম শীল: যে সম্পর্ক আমাদের দৈনন্দিন, যে সম্পর্ক আমাদের প্রতিদিনের বাস্তব জীবনে, যেমন- স্বামী, স্ত্রী, বন্ধু- এর বাইরেও অনেক সম্পর্ক রয়েছে। এ ধরণের সম্পর্ক নিয়েই ‘বালিঘর’।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

7h ago