৫৭ ধারার বিধান রেখেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের খসড়া অনুমোদন
মন্ত্রিসভায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আইনের এই খসড়াতেও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের বিতর্কিত ৫৭ ধারার বিভিন্ন অপরাধকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে রাখা হয়েছে।
প্রস্তাবিত নতুন আইনে যেকোনো ডিজিটাল মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে নেতিবাচক প্রচারণা চালানো হলে সর্বোচ্চ ১৪ বছরের কারাদণ্ড, ৫০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রাখা হয়েছে। আইনটির এর আগের খসড়াই অনুরূপ অপরাধের জন্য আজীবন কারাদণ্ড, এক কোটি টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রাখা হয়েছিল।
অপরাধের মাত্রা ও সাজা বিবেচনায় কিছু অপরাধের জন্য “জামিন অযোগ্য” ধারাও রাখা হয়েছে প্রস্তাবিত নতুন আইনে।
আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ডিজিটাল নিরপত্তা আইনের খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয় বলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. শফিউল আলম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
এর আগে গত আগস্টে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের একটি খসড়া অনুমোদন করেছিল মন্ত্রিসভা। তখন আইনের বিভিন্ন ধারার পুনরাবৃত্তি, স্ববিরোধিতা ও ঘটতি সংশোধন করতে আইন মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী।
আইসিটি আইনের ৫৭ ধারায় বলা হয়, কোনো ব্যক্তি যদি ইচ্ছাকৃতভাবে ওয়েবসাইটে বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক বিন্যাসে এমন কিছু প্রকাশ বা সম্প্রচার করেন, যা মিথ্যা ও অশ্লীল বা সংশ্লিষ্ট অবস্থা বিবেচনায় কেউ পড়লে, দেখলে বা শুনলে নীতিভ্রষ্ট বা অসৎ হতে উদ্বুদ্ধ হতে পারেন অথবা যার দ্বারা মানহানি ঘটে, আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটে বা ঘটার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়, রাষ্ট্র ও ব্যক্তির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে বা করতে পারে বা এ ধরনের তথ্যাদির মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি বা সংগঠনের বিরুদ্ধে উসকানি প্রদান করা হয়, তাহলে এ কাজ অপরাধ বলে গণ্য হবে। এই অপরাধে সর্বোচ্চ ১৪ বছর ও সর্বনিম্ন ৭ বছর কারাদণ্ড এবং সর্বোচ্চ এক কোটি টাকা অর্থদণ্ড দেওয়ার বিধান আছে।
আইনের এই ধারা অপব্যবহার করে সাংবাদিকসহ বহু মানুষকে হয়রানি করার অভিযোগ রয়েছে। আইনটির অপপ্রয়োগ এমন পর্যায়ে পৌছেছিল যে, এই ধারায় মামলা করার আগে সংসদ সদস্য, মন্ত্রী থেকে শুরু করে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের কেন্দ্র থেকে অনুমতি নেওয়ার নির্দেশ দিতে হয়েছিল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে।
Comments