শীর্ষ খবর

একজন মানবিক পুলিশের জন্য পরীক্ষা দিতে পারলো মেয়েটি

এসএসসি পরীক্ষার্থী এক মেয়ে ভুলক্রমে নিজ কেন্দ্রে না গিয়ে দুই কিলোমিটার দুরের আরেক কেন্দ্রে গিয়ে যখন জানতে পারলো এটি তার কেন্দ্র নয়, তখন হতবিহবল হয়ে পড়ে সে।
Police constable Shariful Islam
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর ট্রাফিক বিভাগের পরিদর্শক (টিআই) মো. মুজিবুর রহমান। ছবি: স্টার

এসএসসি পরীক্ষার্থী এক মেয়ে ভুলক্রমে নিজ কেন্দ্রে না গিয়ে দুই কিলোমিটার দুরের আরেক কেন্দ্রে গিয়ে যখন জানতে পারলো এটি তার কেন্দ্র নয়, তখন হতবিহবল হয়ে পড়ে সে।

গতকাল (১ ফেব্রুয়ারি) এসএসসি পরীক্ষার প্রথম দিনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের সামনে ওই মেয়েটিকে ঘিরে লোকজনের জটলা তৈরি হয়। তখন সকাল নয়টা ৪৫ মিনিট। সেসময় প্রতিটি হলে খাতা বিতরণ করা শেষ। ওই মুহূর্তে উপায়ান্তর না দেখে কান্না শুরু করে মেয়েটি। বিষয়টি নজরে আসে অন্নদা স্কুলের প্রধান শিক্ষক ফরিদা নাজমীনের। তিনি ওই ছাত্রীর প্রবেশপত্র দেখে জানতে পারেন তার কেন্দ্র শহরের আরেক প্রান্তের নিয়াজ মুহম্মদ উচ্চ বিদ্যালয়ে।

এসময় কেন্দ্রের পাশের সড়কে দায়িত্বরত একজন ট্রাফিক পুলিশ সদস্যকে তিনি ডেকে মেয়েটিকে সহায়তা করতে বলেন। এরপর ওই পুলিশ সদস্য নিজের মোটরসাইকেলে করে সাইরেন বাজাতে বাজাতে কান্নারত ছাত্রীটিকে পৌঁছে দেন নিয়াজ স্কুলে। আর এতেই পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ পায় মেয়েটি।

ওই মেয়েটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার রামরাইল ইউনিয়নের উলচাপাড়া মালেকা সাহেব আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী। তবে তার নাম-পরিচয় জানা যায়নি।

এমন প্রশংসনীয় কাজ যিনি করেছেন তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর ট্রাফিক বিভাগে কর্মরত এটিএসআই এবং খুলনার তেরখাদা উপজেলা সদরের বাসিন্দা মো. শরিফুল ইসলাম (৩৭)। তিনি গত ২০০১ সালে পুলিশ বিভাগে কনস্টেবল পদে যোগ দেন। প্রায় দুই বছর আগে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর ট্রাফিক বিভাগে যোগ দেন।

মেয়েটিকে মোটরসাইকেলে করে নিয়ে যাওয়ার আগ মুহূর্তে সে সময়কার অবস্থা মুঠোফোনের ক্যামেরায় ধারণ করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান শাওন। পরে এই ছবির সঙ্গে ঘটনার বর্ণনা লিখে ফেসবুকে পোস্ট করার পর তা ভাইরাল হয়ে যায়। এরপর অনলাইনে ওই পুলিশ সদস্যকে সাধুবাদ জানানোর হিড়িক পড়ে।

এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানায় গিয়ে কথা হয় ওই পুলিশ সদস্য শরীফুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, “পুলিশের পোশাক পড়ে তো সবসময় পুলিশি দায়িত্ব পালন করি। কিন্তু মানবিক দায়িত্ববোধ থেকে মেয়েটিকে কেন্দ্র পৌঁছে দেই। তবে হতবিহবল হয়ে পড়া ওই মেয়েটিকে কেন্দ্রে পৌঁছে দিতে পেরে যে আনন্দ পেয়েছি, তা অন্য শত কাজেও পাওয়া যায় না।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর ট্রাফিক বিভাগের পরিদর্শক (টিআই) মো. মুজিবুর রহমান জানান, এটিএসআই শরীফ যে কাজ করেছে তা প্রশংসনীয়। তার এমন কাজের জন্য পুলিশ সম্পর্কে সাধারণ মানুষের গতানুগতিক ধারণা কিছুটা হলেও পাল্টে যাবে।

Comments

The Daily Star  | English
expediency

Expediency triumphs over principle in electoral politics

It appears that all of the ruling party’s efforts revolve around the next election, not considering longer-term ramifications for the itself.

4h ago