খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলার রায়

যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হতে পারে ঢাকা

খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায়
রংপুর থেকে আসা একটি বাসে উঠে যাত্রীদের রাজধানীতে আসার কারণ জিজ্ঞাসা করছেন একজন পুলিশ সদস্য। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে গাবতলী এলাকা থেকে ছবিটি তোলা হয়। ছবি: পলাশ খান, আমরান হোসেন

খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায়ের দিন আগামীকাল বিএনপির নেতাকর্মীদের যেন রাজধানীতে প্রবেশ না করতে পারে তার জন্য একগুচ্ছ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো।

পরিকল্পনার অংশ হিসেবে রাজধানীতে প্রবেশের আটটি পথেই অতিরিক্ত চেকপোস্ট বসানোর কাজ শেষ করেছে পুলিশ। বাহিনীর সূত্রগুলো বলেছে, বিএনপির নেতাকর্মীদের রাজধানীতে প্রবেশ ঠেকাতে প্রয়োজনে সারা দেশের সাথে ঢাকার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হতে পারে।

এর মধ্যেই আগামীকাল বৃহস্পতিবার ভোর ৪টা থেকে সব ধরনের মিছিল সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কথা জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। নাশকতার চেষ্টা হতে পারে এমন গোয়েন্দা তথ্য থাকার কথা জানিয়ে গতকাল ডিএমপির পক্ষ থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বলা হয়, পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত রাজধানীতে মিছিল-সমাবেশ নিষিদ্ধ থাকবে।

অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে রাজপথে প্রচুর সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডিএমপি। প্রতিদিন যেখানে আট হাজারের মত পুলিশ সদস্য ঢাকার রাস্তায় দায়িত্ব পালন করেন সেখানে আগামীকাল তার কয়েকগুণ বেশি পুলিশ মোতায়েন থাকবে। ডিএমপির মোট ৩৫ হাজার পুলিশ সদস্যের বেশিরভাগ সদস্যকেই মোতায়েনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

ডিএমপির একজন উপ কমিশনার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, “আমরা কঠোর অবস্থানে থাকব। কাউকেই রাস্তায় জড়ো হয়ে মিছিল করতে দেওয়া হবে না।”

রাজশাহীর তানোরে থানার নিরাপত্তা বাড়াতে গেটের পাশে বালুর বস্তা ফেলা হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বলেছে, বিএনপির নেতাকর্মীরা যেন কোনো রকম হামলা চালাতে না পারে সে জন্য আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা মাঠে থাকবে।

ঢাকা ও সাতক্ষীরার মধ্যে চলাচলকারী বেসরকারি একটি বাস সংস্থার মালিক বলেছেন, বুধবার রাতে কম সংখ্যক বাস চালাতে বলেছে পুলিশ। সেই সাথে রিজার্ভ যাত্রীদের জন্য বাস ভাড়া না দেওয়ার নির্দেশনা থাকার কথাও তিনি উল্লেখ করেন। আর বেসরকারি পরিবহন সংস্থাগুলোর মধ্যে অন্যতম বৃহৎ শ্যামলী পরিবহনের একজন কর্মচারী বলেছেন, তাদেরকে এ ধরনের কোনো নির্দেশনা দেওয়া না হলেও তারা আগামীকাল বাস না চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

পুলিশ বলেছে, ঢাকার আটটি প্রবেশপথ পোস্তগোলা সেতু, সদরঘাট, আব্দুল্লাহপুর সেতু, আশুলিয়ার ধাউর সেতু, বাবুবাজার সেতু, গাবতলী, যাত্রাবাড়ী ও ডেমরায় সুলতানা কামাল সেতুতে অতিরিক্ত তল্লাশি চৌকি থাকবে। এসব প্রবেশপথগুলোতে আগে থেকেই এক থেকে দুটি করে তল্লাশি চৌকি রয়েছে।

ডিএমপির লালবাগ ডিভিশনের উপ কমিশনার ইবরাহিম খান বলেন, রাজধানীতে প্রবেশ করা সব যানবাহনকে নিরাপত্তা তল্লাশির ভেতর দিয়ে যেতে হবে যেন কেউ নাশকতা করা যায় এমন কিছু নিয়ে প্রবেশ করতে না পারে।

পাশাপাশি রাজধানীর হোটেলগুলোতে অবস্থানকারী অতিথিদের জাতীয় পরিচয়পত্র ও বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে প্রতিদিন তা গোয়েন্দাদের সরবরাহ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইবরাহিম বলেন, দেড় বছর আগে হোটেল মালিকদের এরকম একটি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। সে অনুযায়ী তারা কাজ করছেন।

এছাড়াও কেউ যেন অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরক বহন করতে না পারে সে লক্ষ্যে গত কয়েক দিনে ঢাকার সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল ও কমলাপুর রেল স্টেশনে আইন প্রয়োগকারীরা নজরদারি বৃদ্ধি করেছেন। নজরদারি বাড়াতে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, বাস ও লঞ্চ টার্মিনাল ও রেল স্টেশনে সিসিটিভি স্থাপন করা হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

What are the five charges against Hasina at ICT?

Former home minister Kamal and ex-IGP Mamun have also been accused

7m ago