সবার দৃষ্টি আদালতের দিকে

​বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে নজিরবিহীন নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে রাজধানী ঢাকা।
খালেদা জিয়ার দুর্নীতি মামলার রায়

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে নজিরবিহীন নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে রাজধানী ঢাকা।

যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ ও র‍্যাবের পাশাপাশি গতকাল থেকেই ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় আধা সামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। শুধুমাত্র ঢাকাতেই গতকাল সন্ধ্যা থেকে ২০ প্লাটুন (প্রতি প্লাটুনে ১০-২০ জন সদস্য) বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন রয়েছে। এছাড়াও সারাদেশে ২৩ প্লাটুন বিজিবি প্রস্তুত রাখা হয়েছে। নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে স্থাপন করা সিসিটিভির মাধ্যমে গোয়েন্দা নজরদারিও বৃদ্ধি করা হয়েছে।

ঢাকায় প্রবেশের সবগুলো পথেই বাড়তি তল্লাশি চৌকি স্থাপন করেছে পুলিশ। এছাড়াও বিভিন্ন মেস, হোটেল ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের বাসাবাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়েছে। বিএনপির কেউ যেন বাইরে থেকে ঢাকায় আসতে না পারে সে লক্ষ্যে আন্তঃজেলা বাসগুলোতেও তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকার আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, কোনো বাস ঢাকায় প্রবেশ করছে না। বাইরের জেলাগুলোর উদ্দেশেও কোনো বাস ছাড়ছে না।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ বলেছে, র‍্যাব ও অন্যান্য বাহিনীর পাশাপাশি তারা তাদের ৩৫,০০০ সদস্যের বেশিরভাগকেই আজ মোতায়েন রাখবে। যেখানে সাধারণ পরিস্থিতিতে ডিএমপির আট হাজার সদস্য দৈনিক মোতায়েন থাকে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পুলিশের আইজিপি ও ডিএমপি কমিশনার বলেছেন, মানুষের জান মালের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হলে পুলিশ কঠোর অবস্থান গ্রহণ করবে।

অনাথ শিশুদের সহায়তার জন্য বিদেশ থেকে পাঠানো প্রায় ২ কোটি ১০ লাখ টাকা ক্ষমতার অপব্যবহার করে ও দুর্নীতির মাধ্যমে আত্মসাৎ করার অভিযোগে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এই মামলা করে।

তদন্ত শেষে ২০০৯ সালের ৫ আগস্ট খালেদা জিয়া, তার বড় ছেলে তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।

৭২ বছর বয়সী খালেদা জিয়া তাঁর ৩৫ বছরের রাজনৈতিক জীবনে বেশ কয়েকবার কারাগারে গিয়েছেন তবে তিনি এর আগে কখনো কোনো মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হননি। ৮০’র দশকে এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় তিনি বেশ কয়েকবার আটক হয়েছিলেন। ২০০৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর বিগত সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় দুর্নীতির অভিযোগে তিনি গ্রেফতার হয়েছিলেন। সেসময় তাকে প্রায় এক বছর সংসদ ভবন এলাকার স্থাপন করা বিশেষ কারাগারে রাখা হয়েছিল।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর ১৯৮৩ সালে খালেদা জিয়া দলের ভাইস চেয়ারপারসন হন। এর পরের বছর ১০ মে তিনি চেয়ারপারসন হন।

এদিকে কারাগার সূত্রগুলো জানায়, মামলায় খালেদার সাজা হলে তাকে ঢাকার পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে নারী সেল ও ডেকেয়ার সেন্টারে রাখা হতে পারে। কারাগার কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে এই ঘরগুলোর সংস্কার কাজ শেষ করেছে।

এছাড়াও গাজীপুরের কাশিমপুরে অবস্থিত নারী কারাগারেও ভিআইপি সেল প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তবে ঢাকা থেকে কাশিমপুরে নেওয়ার পথের ঝুঁকি বিবেচনায় তাকে সাময়িকভাবে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারেই রাখা হতে পারে। গতকাল থেকেই সেখানকার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

খালেদার আইনজীবী ও বিএনপির নেতারা বলেছেন, তারা হাইকোর্টে রায় চ্যালেঞ্জ করবেন।

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

5h ago