কারাগারে খালেদা জিয়ার প্রথম কয়েক ঘণ্টা

অনেক বছর ধরে এই রুমটি জেল সুপারের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হতো। গতকাল (৮ ফেব্রুয়ারি) তা হয়ে যায় ভিআইপি প্রিজন সেল।
খালেদা জিয়ার জামিনের মেয়াদ

অনেক বছর ধরে এই রুমটি জেল সুপারের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হতো। গতকাল (৮ ফেব্রুয়ারি) তা হয়ে যায় ভিআইপি প্রিজন সেল।

দেশের সবচেয়ে পুরনো কারাগারের এই রুমটিতেই এখন বিএনপির চেয়ারপারসন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

গতকাল জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের সাজা হওয়ার পর এখানে তাঁকে আনা হয় দুপুর ৩টা ২০ মিনিটের দিকে। এরপর কারা কর্মকর্তারা তাঁকে এই ৩০০ বর্গফুট আয়তনের কক্ষটিতে নিয়ে আসেন। এ সময় তিনি কারা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। কারা সূত্রে জানা যায়, কারাগারে নিয়ে আসার পর একজন চিকিৎসক খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে তাঁকে সুস্থ দেখতে পান।

কারাগারের উপ-মহাপরিদর্শক তৌহিদুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, প্রশাসনিক ভবনের নিচতলায় এই কক্ষটিতে বিএনপি প্রধানকে সাময়িকভাবে রাখা হবে। তাঁকে অন্য কোনো কারাগারে রাখার বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষ পরে সিদ্ধান্ত নিবে।

তিনি আরো জানান, “খালেদা জিয়া জেল সুপারের তত্ত্বাবধানে থাকবেন। তাঁর সার্বক্ষণিক দেখভালের জন্যে একজন উপ-জেল সুপার এবং একজন নার্সকে রাখা হয়েছে।”

জেল কোড অনুযায়ী এই সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে প্রথম শ্রেণির কারাবন্দির মর্যাদা ও সব ধরণের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে। তাঁর সেলের পাশে উপ-জেল সুপার মোহাম্মদ আশরাফ থাকবেন।

খালেদা জিয়ার কক্ষটিতে কোন এয়ার কণ্ডিশনার নেই। কেননা, ২০১৬ সালের জুলাইয়ে কারাগার কেরানীগঞ্জে স্থানান্তর হওয়ার পর এই ভবনটি ব্যবহৃত হচ্ছিলো না। তবে তাঁর রুমে ফ্যান, সোফা চেয়ার, টেবিল এবং একটি সেমি-ডাবল বিছানা রয়েছে। টেলিভিশন ও ফ্রিজের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এছাড়াও, এখানে রান্না করার ব্যবস্থাও রয়েছে। রুমটির সঙ্গে লাগোয়া রয়েছে বাথরুম।

কারা সূত্রে জানা যায়, কারা মহাপরিদর্শক গত সন্ধ্যায় খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেছেন।

গতকাল সূর্য ডোবার পরপরই তাঁকে ভাত, সবজি ও মাছ খেতে দেওয়া হয়েছিলো। এছাড়াও, তাঁর পছন্দের খাবারের বিষয়ে তিনি জেল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করতে পারবেন। সেলের আশে-পাশে খালেদা জিয়ার হাঁটা-চলার অনুমতি রয়েছে। তাঁকে খবরের কাগজ এবং বই পড়তে দেওয়া হবে।

প্রথম শ্রেণির কারাবন্দিদের সকালের নাস্তা হিসেবে রুটি, সবজি, ডিম এবং চা বা কফি দেওয়া হয়। দুপুর ও রাতের খাবার হিসেবে দেওয়া হয় ভাত, মাছ ও মাংস।

কারাগারের চারপাশে নিরাপত্তা জোরদার করার পাশাপাশি খালেদা জিয়ার সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার জন্যে ২৫জন নিরাপত্তারক্ষী নিয়োজিত রয়েছে।

Comments