শ্রীদেবীর মৃত্যু ঘিরে রহস্য ঘনীভূত; অনিশ্চিত দেহ ফেরা

Sridevi
বলিউডের কিংবদন্তি অভিনেত্রী শ্রীদেবী। ছবি: সংগৃহীত

বলিউডের কিংবদন্তি অভিনেত্রী শ্রীদেবীর মৃত্যু ঘিরে ক্রমশ রহস্যের পাক ঘনীভূতই হচ্ছে। গত রবিবার প্রত্যাশিত হলেও তাঁর দেহ পৌঁছায়নি মুম্বাইয়ে। সোমবার হয়ে মঙ্গলবার- আজও (২৭ ফেব্রুয়ারি) তাঁর দেহ ফেরা অনিশ্চিত।

এদিকে ভারত ও দুবাইয়ের গণমাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের খবরে পাঠক-দর্শক সর্বপরি শ্রী-ভক্তরা হয়ে পড়ছেন বিভ্রান্ত-বিরক্ত।

দুবাই পুলিশের টুইট; সজ্ঞাহীন হয়ে বাথটাবে পড়েছিলেন শ্রীদেবী- সে কারণেই পানিতে ঢুবে মৃত্যু হয়েছে তাঁর।

ভারতীয় গণমাধ্যমের এক অংশের খবর, মঙ্গলবার সন্ধ্যা হয়ে যেতে পারে শ্রীদেবীর দেহ মুম্বাইয় পৌঁছতে।

আবার আরেক অংশের দাবি, রহস্য ঘনীভূত হওয়ায় দুবাই পুলিশ দ্বিতীয় দফায় ময়নাতদন্ত করতে পারে অভিনেত্রীর দেহ। ফলে মঙ্গলবারও একইভাবে মুম্বাইয়ের মাটি ছুঁতে পারছেন না বনি-পত্নী।

দুবাইয়ের গণমাধ্যমগুলোর দাবি, গোটা বিষয়টি এখন আদালতের ওপর নির্ভর করছে। দুবাই পাবলিক প্রসিকিউটারের সবুজ সংকেত পেলে অনিল আম্বানির ১৩ আসনের চাটার্ড জেট শ্রীদেবীর দেহ নিয়ে মুম্বাইয়ের উদ্দেশে দুবাইয়ের আকাশ ছাড়বে।

আবার দুবাইয়ের কয়েকটি টেলিভিশন চ্যানেল তাদের খবরে জানিয়েছে, ময়না তদন্তের রিপোর্টে শ্রীদেবীর দেহে অ্যালকোহলের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। যদিও সংবাদ মাধ্যমে ফাঁস হওয়া ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে বাথটাবে পানিতে ডুবে শ্রীদেবীর মৃত্যু হয়েছে বলে উল্লেখ করা রয়েছে। তবে প্রকাশিত ওই রিপোর্টের গুরুত্বপূর্ণ অংশে বানান ভুল থাকায় ওই তদন্ত রিপোর্টটি আসল না নকল সেটি নিয়ে উঠেছে জোরালো প্রশ্ন।

দুই দেশের গণমাধ্যমের খবর বিশ্লেষণ করে আপাত দেখা যাচ্ছে, শ্রীদেবীর মৃত্যু ঘিরে রহস্য সৃষ্টির পেছনে প্রথম কারণ, গত ২০ ফেব্রুয়ারি ভাগ্নের বিয়ে শেষ হওয়ার পর শ্রীদেবী জুমেইরা এমিরেটস টাওয়ার হোটেলের ২২০১ নম্বর রুমে থেকে গিয়েছিলেন।

দ্বিতীয়ত, বিয়ের অনুষ্ঠান শেষ করে স্বামী বনি কাপুর মেয়ে খুশিকে নিয়ে মুম্বাই ফিরে এসেছিলেন। কিন্তু প্রায় অবাক করার মতো বিষয়; কোনো আগাম নোটিশ না দিয়ে বনি কাপুর মৃত্যুর দিন রাতে শ্রীদেবীর হোটেল রুমে পৌঁছে যান; কেন এমন করলেন বনি কাপুর?

গণমাধ্যমের খবরে এও বলা হচ্ছে, শ্রীদেবীর আঁকা ছবি নিয়ে দুবাইতে একটি চিত্র প্রদশর্নী হবে। সেই প্রদর্শনীর জন্যই ছবি আঁকার সুযোগ নিতেই হোটেলে থেকে গিয়েছিলেন শ্রীদেবী।

কিন্তু শ্রীদেবী বাথরুমে ঢুকে সজ্ঞাহীন হয়ে পড়লেন, সেই বাথরুমের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ ছিল নাকি বাইরে থেকে- সেটি নিয়েও এখন ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। এছাড়াও, হোটেলের সিসিটিভি ফুটেজও সামনে আনা হচ্ছে না। এমন কি শ্রীদেবীর রুমে এই তিনদিন কে কে ঢুকেছিলেন- সেই লিস্টও গোপন করা হচ্ছে। তাছাড়াও শ্রীদেবী কোনো দিনও মদ্যপান করতেন না বলেই তার ঘনিষ্ঠদের দাবি ছিল; সেই শ্রীদেবীর শরীরের ফরেনসিক দল কী করে অ্যালকোহলের অস্তিত্ব খুঁজে পেলেন?

বা অ্যালকোহল পেলেও কী এমন হয়েছিল যে এতো পরিমান মদ্যপান করতে হয়েছিল শ্রীদেবীকে, যার কারণে তাঁর ৫ ফুট ৬ ইঞ্চির শরীর বাথরুমের টাবে পড়ে সজ্ঞাহীন হয়ে গেল?

এসব প্রশ্ন এবং এর উত্তর খুঁজে পেলেই শ্রীদেবীর দেহ দুবাই থেকে ছাড়া হবে সেটা প্রায় নিশ্চিত করেই দাবি করছে দুই দেশের গণমাধ্যম।

এদিকে বিজেপির সাংসদ সুব্রামনিয়ম স্বামী দাবি করেছেন, শ্রীদেবীর মৃত্যুর সঙ্গে আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন দাউদ ইব্রাহীমের যোগ থাকতে পারে। তার আরও দাবি, শ্রীদেবী কোনও দিন মদ্যপ ছিলেন না। তাই এই দাবির কোনো সত্যতা দেখছেন না তিনি।

একই রকম দাবি করেছেন সমাজবাদী পার্টির র্শীষ নেতা অমর সিং। তিনি জানান, শ্রীদেবীকে তিনি সব সময়ই অত্যন্ত সংযমী জীবন যাপন করতেই দেখেছেন। কোনো দিন কোনো পার্টিতে তিনি শ্রীদেবীকে মদ পান করতে দেখেননি। ফলত অতিরিক্ত মদ্যপানে সজ্ঞাহীন হয়ে বাথটাবে পড়ে গিয়ে মৃত্যুর এই তথ্য অমর সিংও মানতে রাজি নন। অমর সিং শ্রীদেবী-বণি কাপুরের পারিবারিক বন্ধুও। 

শেষ খবর হল, শ্রীদেবীর কল লিস্ট খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দুবাই পুলিশ হোটেলের সব স্টাফদের বয়ান রেকর্ড করছে। সিসিটিভির ফুটেজ জব্দ করেছে পুলিশ। এমন কি শ্রীদেবীর স্বামী বনি কাপুরকেও এই বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছিল।

Comments

The Daily Star  | English

Regulator repeatedly ignored red flags

Time after time, the internal safety department of the Civil Aviation Authority of Bangladesh uncovered irregularities in pilot licencing and raised concerns about aviation safety, only to be overridden by the civil aviation’s higher authorities.

8h ago