যশোর রোডের শতবর্ষী গাছ তুলে অন্য জায়গায় লাগানোর পরামর্শ মমতার!

Mamata Banerjee
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। ছবি: স্টার

ইতিহাসের সাক্ষী শতবর্ষী গাছগুলো তুলে নিয়ে অন্য জায়গায় লাগিয়ে যশোর রোড সংস্কারে উদ্যোগের কথা বললেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। এ প্রসঙ্গে তিনি আরোও বলেন, এখন গোটা বাড়ি তুলে অন্য জায়গায় স্থানান্তরিত করা হচ্ছে। তবে গাছ কেন তুলে অন্য জায়গায় লাগানো যাবে না।

যদিও মমতার এই দাবি যুক্তিহীন এবং অবান্তর বলে দাবি করেছেন যশোর রোডের গাছ বাঁচানোর পক্ষে পরিবেশপ্রেমী আন্দোলনকারীদের মুখপাত্র রাহুল দেববিশ্বাস। তাঁর ভাষায়, এভারেস্ট তো এভারেস্টই। তাকে ইচ্ছা করলেই এক জায়গা থেকে তুলে অন্য জায়গায় লাগানো যায় না। তেমনই যশোর রোড যশোর রোড-ই। এর ঐতিহ্য স্থানান্তরিত হয় না।

মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজ্যের প্রশাসনিক বৈঠকে কলকাতার অদূরে উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার বারাসাতের রবীন্দ্রভবনে সভাপতিত্ব করছিলেন রাজ্যটির প্রশাসনিক প্রধান। সেখানে একজন জনপ্রতিনিধি মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে যশোর রোড সংস্কারে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ রয়েছে বলে স্মরণ করিয়ে দেওয়ার পর ওই জনপ্রতিনিধিকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যাতায়াতে যেন কোনো যানজট না হয়। যানজট হয় বলেই সেখানে আমরা উড়াল-সেতু করতে চাইছি। কিন্তু সেটা আদালত আটকে দিয়েছে।”

এসময় মুখ্যমন্ত্রী ওই জনপ্রতিনিধিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “আদালতকে বলো গাছগুলোকে আমরা এক জায়গা থেকে উঠিয়ে অন্য জায়গায় লাগিয়ে দেবো। এখন তো পদ্ধতি আছে। বাড়ি তুলে অন্য জায়গায় বসিয়ে দিচ্ছে। গাছগুলো আমরা তো নষ্ট করছি না। রাস্তা করবো বলে আমরা একটি গাছকে এক জায়গা থেকে তুলে আরেক জায়গা লাগিয়ে দিচ্ছি। আদালতকে সেটা বুঝিয়ে বলতে হবে।”

ওই জনপ্রতিনিধিকে দিকনির্দেশনা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যারা মামলা করেছে তাদের বলো যাতে তারা মামলা তুলে নেন। কথা বলে দেখো, কথা বললে অনেক কিছুই ঠিক হয়ে যায়। নিজের এলাকা- তাই নিজেকেই তো দেখতে হবে সেটা, মুখ্যমন্ত্রী একথাও বলেন।

প্রসঙ্গত, যশোর রোডের সংস্কারের জন্য বারাসাত থেকে বনগাঁ পর্যন্ত সাতটি রেল উড়াল সেতু তৈরির পরিকল্পনা নেয় সরকার। কিন্তু সেতু করতে গিয়ে যশোর রোডে বেশ কিছু ঐতিহাসিক শতবর্ষী গাছ কাটা পড়বে। পুরো প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে প্রায় দুইশর বেশি গাছ কাটা পড়বে। এমন পরিস্থিতিতে বনগাঁর কিছু পরিবেশপ্রেমী মানুষ আদালতের দ্বারস্থ হন এবং আদালত গাছ কাটার স্থগিতাদেশ জারি করেন।

পরিবেশপ্রেমী রাহুল দেববিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, “যশোর রোডের গাছগুলো এতো বড় যে সেগুলো কোনোভাবেই তুলে অন্য জায়গায় লাগানো সম্ভব নয়। তাছাড়াও, তুলতে গেলে যে পরিমাণ জায়গা গর্ত করতে হবে তাতে গোটা রাস্তাই বন্ধ হয়ে যাবে। আর গাছগুলো সরিয়ে নিলে পাখিরা তাদের আবাসস্থল হারাবো। ফলে এই ধরনের উদ্যোগ কোনোভাবেই আদালতের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না।”

ওই পরিবেশপ্রেমী আরো বলেন, গোটা বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে সঠিকভাবে অবগত করা হয়নি। নইলে এই ধরনের দিক নির্দেশনা তিনি দিতেন না।

Comments

The Daily Star  | English

Is the govt backing the wrongdoers?

BNP acting Chairman Tarique Rahman yesterday questioned whether the government is being lenient on the killers of a scrap trader in front of Mitford hospital due to what he said its silent support for such incidents of mob violence.

6h ago