শীর্ষ খবর

জাতির প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান: যুদ্ধাপরাধী-খুনিরা যেন কোনদিন আর ক্ষমতায় আসতে না পারে

ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দেওয়া এক ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ জাতির প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, যুদ্ধাপরাধী-খুনিরা যেন কোন দিন আর ক্ষমতায় আসতে না পারে।
pm
ফাইল ছবি

ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দেওয়া এক ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ জাতির প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, যুদ্ধাপরাধী-খুনিরা যেন কোন দিন আর ক্ষমতায় আসতে না পারে।

তিনি বলেন, “যারা মানবতার বিরুদ্ধে কাজ করেছে, যারা গণহত্যা করেছে, লুটপাট করেছে, অগ্নি-সংযোগ করেছে, আপনাদের কাছে আমার আহ্বান, যুদ্ধাপরাধী-খুনিরা যেন কোন দিন আর ক্ষমতায় আসতে না পারে। যারা স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করেন, উন্নয়নে বিশ্বাস করেন তারা এ ব্যাপারে সজাগ থাকবেন।”

“যারা এতিমের টাকা চুরি করে, দেশের টাকা বিদেশে পাচার করে, যারা দেশের মানুষকে হত্যা করে, যারা আগুন দিয়ে মানুষ পোড়ায়- এরা যেন ক্ষমতায় আর কোনোদিন না আসতে পারে। দেশকে যেন ধ্বংসের দিকে না নিতে পারে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় যেন বাংলাদেশ এগিয়ে যায়, তার জন্যে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানাই,” যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।

একই সঙ্গে তিনি বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস এবং মাদক যেন কোনভাবেই যুব সমাজকে নষ্ট করতে না পারে সে জন্যে সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বানও জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, “এই উদ্যানে দাঁড়িয়ে জাতির পিতা নির্দেশ দিয়েছিলেন ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তুলে এবং যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে শক্রর মোকাবেলা করার জন্যে। তাঁর স্বাধীনতার ঘোষণা সমস্ত বাংলাদেশে ছড়িয়ে যায়। বাংলার মানুষ ঠিকই জাতির পিতার নির্দেশ অনুযায়ী প্রত্যেকটা ঘরকে দুর্গ করে তুলে, যার যা কিছু ছিলো তাই নিয়ে শক্রর মোকাবেলা করেছিলো।”

তিনি বলেন, “আমরা যখন স্বাধীনতা অর্জন করলাম, দেশ যখন শক্রমুক্ত হলো তখন জাতির পিতা একটা যুদ্ধ-বিধ্বস্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলছিলেন। মাত্র সাড়ে তিন বছরে একটা প্রদেশকে একটা রাষ্ট্রে উন্নীত করেছিলেন।”

১৯৭৫ সালের পর স্বাধীনতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধীরা ক্ষমতায় এসেছিলো উল্লেখ করে তিনি বলেন, যারা এদেশের স্বাধীনতা বিশ্বাস করে নাই তাদেরকে কারাগার থেকে মুক্তি দিয়ে মন্ত্রী বানিয়ে ক্ষমতায় বসানো হয়। “যে দেশে স্বাধীনতাবিরোধীরা ক্ষমতায় আসে সে দেশের উন্নয়ন কীভাবে হবে,” প্রশ্ন রাখেন প্রধানমন্ত্রী।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্টের পর ৭ মার্চের ভাষণ বাজানোর কোনো অধিকার ছিলো না। যেখানেই ভাষণ বাজতো সেখানেই তারা বাধা দিতো। আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীদের স্যালুট জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা সকল বাধা উপেক্ষা করে গ্রামে-গঞ্জে এই ভাষণ বাজানো হতো।

“ইতিহাস কেউ মুছে ফেলতে পারে না। ইতিহাসও প্রতিশোধ নেয়। ইতিহাসকে কেউ কখনো নিশ্চিহ্ন করতে পারে না- আজকে তা প্রমাণ হয়েছে। যে জাতির পিতার নামটা আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও সংগ্রামের মধ্য থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিলো, আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস যারা বিকৃত করেছিলো আজকে সারা বিশ্বে প্রমাণ হয়েছে এই ৭ মার্চের ভাষণ আন্তর্জাতিক প্রামাণ্য দলিলে স্বীকৃতি পেয়েছে,” মন্তব্য শেখ হাসিনার।

শেখ হাসিনা বলেন, “এই ভাষণের মাধ্যমে জাতির পিতা বাঙালি জাতির ২৩ বছরের বঞ্চনার এবং মুক্তির জন্যে সংগ্রামের ইতিহাস তুলে ধরেছেন। এ ভাষণে তিনি পাকিস্তানিদের শাসকদের শোষণ-অত্যাচার নির্যাতনের কথা বলার পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য কী কী করণীয় তা বলে দিয়েছিলেন। তিনি বাংলার মানুষের জন্যে তাঁর জীবনাটা উৎসর্গ করে দিয়ে গেছেন।”

দেশের উন্নয়নের প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, “পদ্ম সেতু নিজেদের অর্থায়নে তৈরি করে দিচ্ছি। বাংলাদেশ উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে বাংলাদেশ উন্নয়নের পথে ধাপে ধাপে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা আর কারো কাছে মাথা নত করে চলবো না। আমরা বিশ্ব সভায় মর্যাদার সাথে চলবো। জাতির পিতা আমাদের সেই শিক্ষা দিয়ে গেছেন।”

তাঁর মতে, “আওয়ামী লীগ সরকার পরিচালিত উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ক্ষুধা-দারিদ্রমুক্ত সোনার বাংলাদেশ হিসেবে আমরা গড়ে তুলতে পারবো।”

Comments

The Daily Star  | English

Who are giving us earthquake data?

BMD ill-equipped, still relies on manual system with no seismologist or geologist involved

8h ago