রোহিঙ্গা সংকট: আগামী ১০ মাসে দরকার ৯৫০ মিলিয়ন ডলার

​বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট মোকাবেলায় আগামী ১০ মাসে আরও ৯৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা প্রয়োজন। শরণার্থী রোহিঙ্গা ও কক্সবাজারের যেসব এলাকায় রোহিঙ্গারা অবস্থান করছেন সেখানকার স্থানীয় জনগণের সহায়তার জন্য এই অর্থ ব্যয় করার পরিকল্পনা করেছে জাতিসংঘ ও বাংলাদেশ সরকার।
কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের একটি ক্যাম্প। রয়টার্স ফাইল ছবি

বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট মোকাবেলায় আগামী ১০ মাসে আরও ৯৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা প্রয়োজন। শরণার্থী রোহিঙ্গা ও কক্সবাজারের যেসব এলাকায় রোহিঙ্গারা অবস্থান করছেন সেখানকার স্থানীয় জনগণের সহায়তার জন্য এই অর্থ ব্যয় করার পরিকল্পনা করেছে জাতিসংঘ ও বাংলাদেশ সরকার।

গত বছরের আগস্ট থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত ছয় মাসে রোহিঙ্গাদের জরুরি ত্রাণ সহায়তায় ৪৩৪ মিলিয়ন ডলার প্রয়োজনের কথা বলা হয়েছিল। এর মধ্যে প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ডলার সহায়তা এসেছে দাতাদের কাছ থেকে। এখন আগামী ১০ মাসের জন্য প্রথম ছয় মাসের দ্বিগুণেরও বেশি অর্থ সহায়তার প্রয়োজনীয়তার কথা বলা হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসনের পুরো প্রক্রিয়া পিছিয়ে যাওয়ার যে আশঙ্কা দেখা যাচ্ছে তার মধ্যেই এই বিশাল অংকের সহায়তার কথা বলছে জাতিসংঘ।

ঢাকায় নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি মিয়া সেপ্পো গত ১ মার্চ তার কার্যালয়ে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেছেন, বাংলাদেশ সরকারের সাথে যৌথ উদ্যোগের এই পরিকল্পনার কথা চলতি সপ্তাহেই তারা জেনেভায় উপস্থাপন করবেন। কিন্তু তার আশঙ্কা, এই দফায় তহবিল সংগ্রহ করা আগের বারের চেয়ে আরও কঠিন হতে পারে।

রোহিঙ্গা শিবিরের আশপাশের জনগণের প্রয়োজনীয়তা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “যে যৌথ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে তাতে রোহিঙ্গা শরণার্থী ও তারা যেখানে রয়েছেন সেখানকার স্থানীয় জনগণের আশু প্রয়োজনগুলো এখন খতিয়ে দেখা হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের সাহায্যে যারা প্রথম এগিয়ে গিয়েছিল তারা যেন দারিদ্র্যের চলে না যায় সেটা লক্ষ্য রাখাও খুব জরুরি।”

রোহিঙ্গারা আসার পর খাদ্যদ্রব্যের মূল্যের ঊর্ধ্বগতি, মজুরি কমে যাওয়া ও প্রাকৃতিক সম্পদ ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় কক্সবাজারের স্থানীয় বহু মানুষ বিপদের মুখে রয়েছেন। কক্সবাজারের “রিফিউজি রিলিফ এন্ড রিপ্যাট্রিয়েশন কমিশনার (আরআরআরসি)” যে প্রতিবেদন দিয়েছেন তাতেও স্থানীয়দের এই সমস্যার কথা উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে মোট সহায়তার অন্তত ২৫ শতাংশ স্থানীয়দের জন্য ব্যয় করার সুপারিশ করা হয়েছে।

আরআরআরসি কমিশনার মোহাম্মদ আবুল কালাম জানিয়েছেন, “রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের আশপাশের ৫০০ একরের বেশি বনভূমি সাফ হয়ে গেছে। সেখানকার গাছপালা কেটে চুলার জ্বালানি করা হয়েছে।”

গত ২৫ আগস্ট রাখাইনে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর ৩০টি চৌকিতে বিদ্রোহীদের হামলার পর মিয়ানমারের সেনাবাহিনী নির্বিচারে রোহিঙ্গা নিধন শুরু করে। নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচতে ছয় লাখ ৯০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলোর বলছে, রোহিঙ্গাদের শত শত গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়ার পর বুলডোজার দিয়ে ধুলায় মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে।

আর আগে থেকেই বিভিন্ন সময় বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করা রোহিঙ্গাদের বিবেচনায় নিলে এই সংখ্যাটি প্রায় ১১ লাখে গিয়ে পৌঁছায়। এর মধ্যে ১০ লাখ ৭৬ হাজার ৬৪০ জন রোহিঙ্গাকে নিবন্ধন করা হয়েছে বলে আরআরআরসি’র প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

5h ago