এবার শেষ ওভারে গিয়ে হারল আবাহনী
এবারের ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে আবাহনী মানেই যেন শেষ ওভারের উত্তেজনা। আগের ম্যাচে শেষ ওভারে গিয়ে রোমাঞ্চকর জয়ের পর এবার তারা ৩ রানে হারল প্রাইম দোলেশ্বরের কাছে।
শনিবার মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে শেষ ওভারে জেতার জন্য আবাহনীর দরকার ছিল ১০ রান। উইকেটে তখন শেষ দুই ব্যাটসম্যান। একজনের লিস্ট-এ ক্রিকেটে এই ম্যাচেই অভিষেক, আরেকজনের মাত্র দ্বিতীয় ম্যাচ। তবে জমিয়ে তুললেন তারাই। মাত্র দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নামা আরিফুল ইসলাম সবুজ ভালো হাতেও দেখিয়েছিলেন নিজের সামর্থ্য, ব্যাট হাতে ছোট এক ঝড়ে দলকে নিয়ে যাচ্ছিলেন কিনারের দিকেই। আরফার সানির করা শেষ ওভারের দ্বিতীয় বলে মিড উইকেট দিয়ে উড়িয়ে চার হাঁকান সবুজ। তিন নম্বর বল থেকে নেন আরও ২ রান। বাকি দুই বল থেকে দরকার ছিল ৪ রান। পঞ্চম বলটা কাট করতে গিয়ে হয়ে যান কট বিহাইন্ড। হাতেগোনা কয়েকজন দর্শকের মাঝেও তখন উত্তেজনা।
সকালে টস জিতে আগে ব্যাটিং নিয়েছিল প্রাইম দোলেশ্বর। তাদের শুরুটা হয় নড়বড়ে। সবুক আর মাশরাফি মর্তুজা মিলে মাত্র ৩৯ রানে দোলেশ্বরের তিন টপ অর্ডারকে তোলে নেন। তবে চতুর্থ উইকেটে ফরহাদ হোসেনের সঙ্গে দারুণ এক জুটি গড়ে দলের বিপর্যয়ে হাল ধরেন ফজলে মাহমুদ। এই দুজনের ১৪৭ রানের জুটিতে ভিত পায় দোলেশ্বর। মাহমুদ ৬৮ আর ফরহাদ করেন ৬৩ রান। এই দুজনের জুটি ভাঙেন অভিষিক্ত পেসার সন্দ্বীপ রায়। বড় জুটির পর দোলেশ্বরের বাকিদের অবস্থাও টপ অর্ডারের মতো। আসা-যাওয়ার মিছিলে কেবল অধিনায়ক ফরহাদ রেজা করতে পেরেছেন ২৮ রান । বাকিরা সবাই সবাই দুই অঙ্কের আগে ফিরলে ২৩৩ রানের বেশি করতে পারেনি তারা। আবাহনীর ভারতীয় স্পিনার মানাম শর্মা ৪৪ রান দিয়ে নেন ৪ উইকেট।
মাঝারি লক্ষ্যে শুরুতেই পড়ে বিপর্যয়ের। ওপেনার সাইফ হাসান আর আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান নাজমুল হোসেন শান্ত ফিরে যান ২৬ রানের ভেতর। আরেক ওপেনার এনামুল হক বিজয় সেট হয়েও বিলিয়েছেন উইকেট। ৩৪ রান করে ফরহাদ রেজার বল টাইমিং করতে গড়বড় করে মার্শাল আইয়ুবের হাতে ধরা পড়েন। আরও একবার ব্যর্থ হয়েছেন রান পেতে ভোগতে থাকা মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। এবার ১১ রান করে নিজের ভুলেই হয়েছেন রান আউট।
তবে অধিনায়ক নাসির হোসেনের ফিফটিতে ম্যাচে ছিল আবাহনী। পরে ফিফটি পাওয়া মোহাম্মদ মিঠুন দিচ্ছিলেন যোগ্য সঙ্গত। দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে নাসিরকে তুলে নেন আরাফাত সানি। ওদিকে ক্রমশ চড়া হতে থাকা আস্কিং রানরেট বাড়ানোর চাপে পড়ে খেই হারান মোহাম্মদ মিঠুন। ৬১ বলে ৬০ রানের ইনিংস খেললেও ওভারপ্রতি ১০ করে রান নেওয়ার চাহিদার মধ্যে মিঠুনের ব্যাটিং প্রত্যাশা মেটাতে পারেনি আবাহনীর। মানাম শর্মা, মাশরাফি পর পর নেমে ঝড় তোলার আভাস দিয়েও কাটা পড়েন। অধিনায়ক ফরহাদ রেজার বুদ্ধিদীপ্ত বোলিং চাপ বাড়িয়েছে আবাহনীর। সেই চাপে উইকেট পেয়েছেন আরাফাত সানি। শেষ দিকে আরিফুল ইসলাম সবুজ ১৫ বলে ২১ রানের ইনিংস খেলেও একটুর জন্য তীরে ভেড়াতে পারননি তরী।
Comments