ইয়াসিন-শরিফুলের পেসের ঝাঁজে ইনিংস ব্যবধানে হারল পূর্বাঞ্চল

দুই ওপেনার ছিলেন অবিচ্ছিন্ন, স্কোর বোর্ডে রান ছিল ১১০। দিনের শুরুর এই অবস্থার সঙ্গে শেষের ফারাক যেন আকাশ-পাতাল। অবিশ্বাস্য ব্যাটিং ধসে এক দিনে ২০ উইকেট খুইয়ে উত্তরাঞ্চলের কাছে ইনিংস ব্যবধানে হেরেছে পূর্বাঞ্চল।
Yasin Arafat-Shoriful Islam
এক দিনে প্রতিপক্ষকে দুবার অলআউট করতে দুজন মিলে ১৪ উইকেট নেন ইয়াসিন ও শরিফুল। ছবি: ফিরোজ আহমেদ

দুই ওপেনার ছিলেন অবিচ্ছিন্ন, স্কোর বোর্ডে রান ছিল ১১০। দিনের শুরুর এই অবস্থার সঙ্গে শেষের ফারাক যেন আকাশ-পাতাল। অবিশ্বাস্য ব্যাটিং ধসে এক দিনে ২০ উইকেট খুইয়ে উত্তরাঞ্চলের কাছে ইনিংস ব্যবধানে হেরেছে পূর্বাঞ্চল। তাদের ধসিয়ে উত্তরাঞ্চলের নায়ক দুই পেসার শরিফুল ইসলাম ও ইয়াসিন আরাফাত। 

প্রথম ইনিংসে উত্তরাঞ্চলের ৪১৫ রানের জবাব দ্বিতীয় দিন পর্যন্ত বেশ ভালোভাবে ছুটছিল পূর্বাঞ্চল। দুই ওপেনার লিটন দাস ও তাসামুল হক ১১০ রান তুলে অবিচ্ছিন্ন ছিলেন। সেই অবস্থা থেকে ২১৭ রানে গুটিয়ে ফলোঅনে পড়ে তারা। পরে আরও বেহাল দশা হয় তাদের। দ্বিতীয় ইনিংস ১৭০ রানে গুটিয়ে ইনিংস ও ২৮ রানে হেরেছে মুমিনুল হকরা। পঞ্চম রাউন্ডে এমন বড় জয়ে এবার বিসিএলের শিরোপা জেতায় অনেকটাই এগিয়ে গেল উত্তরাঞ্চল।

পূর্বাঞ্চলের ২০ উইকেটের ১৮টিই নিয়েছেন উত্তরাঞ্চলের তিন পেসার। পেস সহায়ক পিচের ফায়দা তুলতে পারছিলেন না পূর্বাঞ্চলের পেসাররা। আগের রাতের বৃষ্টির পর ঘাসে ভরা সেই পিচের পুরো ফায়দা কীভাবে তুলতে হয় দেখিয়েছেন  উত্তরাঞ্চলের পেসাররা।

প্রথম ইনিংসে সমান ৪ উইকেট ইয়াসিন আরাফাত ও শরিফুল ইসলামের, পরের ইনিংসে এই দুই তরুণ পেসার নেন ৩টি করে উইকেট। মূলত তাদের পেসার ঝাঁজই সামলাতে পারেনি পূর্বাঞ্চলের ব্যাটসম্যানরা। আরেক পেসার শফিউল ইসলাম প্রথম ইনিংসে ১ উইকেট নেওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসে পেয়েছে ৩টি। বৃহস্পতিবার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে পুরো দিনজুড়ে দাপট ছিল তাদেরই।

Yasin Arafat
উচ্চতা কাজে লাগিয়ে পূর্বাঞ্চল ব্যাটসম্যানদের ভুগিয়েছেন ইয়াসিন। ছবি: ফিরোজ আহমেদ
সকালে শুরুটা করে দেন শফিউল। আগের দিন ফিফটি থেকে ১ রান দূরে থাকা তাসামুল ৫৬ রান করে বোল্ড হন শফিউলের বলে। লিটন দাসের সঙ্গে জুটি গড়ার ইঙ্গিত দিতেই কাটা পড়েন অধিনায়ক মুমিনুল। দীর্ঘদেহী পেসার ইয়াসিন এরপর টানা ৪ উইকেট তুলে নেন। ২১ রান করে এলবিডব্লিও হন মুমিনুল, ৬৯ রান করে ফরহাদ হোসেনকে ক্যাচ দেন লিটন। আফিফ হোসেন ৬ রান করেই ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে। ২  রান অলক কাপালীও আফিফের মতো একইভাবে কুপোকাত।

ইয়াসিনের শেষের পর যেন শুরু শরিফুলের। বাঁহাতি এই পেসার দারুণ আগ্রাসনে পরের ৪ উইকেট দখল করে ধসিয়ে দেন পূর্বাঞ্চলের ইনিংস। ধসের মধ্যে এক পাশে মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনকে আউট করে শেষ উইকেটটি নিয়েছেন তাইজুল ইসলাম।

পূর্বাঞ্চলকে ফলো অন করিয়ে যেন আরও ধারালো উত্তরের পেসাররা।  

প্রথম ইনিংসে আগে বোলিং তোপ শুরু করেছিলেন ইয়াসিন, দ্বিতীয় ইনিংস সে দায়িত্ব নিলেন শরিফুল। ১৫ রানেই লিটন ও মুমিনুলকে ফেরান তিনি। ৪৯ রানে আফিফের উইকেটও যায় তার পকেটে। পরের তিনটি নেন ইয়াসিন। বিপর্যয়ে হাল ধরতে পারেননি পূর্বাঞ্চলের টপ অর্ডারের কেউ। অভিজ্ঞ মোহাম্মদ আশরাফুল প্রিমিয়ার লিগে রান পেলেও বিসিএলের দুই রাউন্ডেই হয়েছেন ব্যর্থ। ইয়াসিনের বলে ৮ রান করে এলবিডব্লিও হন তিনি। দুই ইনিংস মিলে আশরাফুলের ব্যাট থেকে আসে ১৯ রান।

শেষের লেজটুকু ৩ উইকেট নিয়ে মুড়ে দেন আরেক পেসার শফিউল ইসলাম।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

উত্তরাঞ্চল ১ম ইনিংস: ৪১৫

পূর্বাঞ্চল ১ম ইনিংস: (দ্বিতীয় দিন শেষে ১১০/০) ৬৩.২ ওভারে ২১৭ (তাসামুল ৫৬, লিটন ৬৯, মুমিনুল ২১, আফিফ ৬, আশরাফুল ১১, কাপালী ২, জাকের ৫, সাইফ ২০, সোহাগ ১৩, আবু জায়েদ ০, খালেদ ০*; শফিউল ১/৫০, ইয়াসিন ৪/৩৯, তাইজুল ১/৬৪, শরিফুল ৪/৩৩, আরিফুল ০/২০)

পূর্বাঞ্চল ২য় ইনিংস: ৩৮.১ ওভারে ১৭০ (তাসামুল ১৫, লিটন ৯, মুমিনুল ০, আফিফ ১৬, আশরাফুল ৮, সাইফ ৩২, কাপালী ০, জাকের ১৬, সোহাগ ৫০, আবু জায়েদ ৫, খালেদ ০*; শফিউল ৩/২৮, তাইজুল ১/৬৫, আরিফুল ০/১৬, শরিফুল ৩/২১, ইয়াসিন ৩/১৬, শান্ত ০/‌১০)

ফল: উত্তরাঞ্চল ইনিংস ও ২৮ রানে জয়ী

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: ইয়াসিন আরাফাত

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

5h ago