‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে নারী নির্যাতন হয়েছে’

​অভিভাবকদের ডেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি সুফিয়া কামাল হল থেকে মধ্যরাতে চারজন ছাত্রীকে বের করে দেওয়ার ঘটনাকে ‘প্রাতিষ্ঠানিকভাবে নারী নির্যাতন’ বলেছেন লেখক ও কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মত এভাবে ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনা ঘটল বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে মানববন্ধন
শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও মর্যাদা রক্ষার দাবিতে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে মানববন্ধন করেন শিক্ষকরা। ছবি: স্টার

অভিভাবকদের ডেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি সুফিয়া কামাল হল থেকে মধ্যরাতে চারজন ছাত্রীকে বের করে দেওয়ার ঘটনাকে ‘প্রাতিষ্ঠানিকভাবে নারী নির্যাতন’ বলেছেন লেখক ও কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মত এভাবে ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনা ঘটল বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন।

গতকাল রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে এক মানববন্ধনে সৈয়দ আবুল মকসুদ এই কথা বলেন। সচেতন শিক্ষকবৃন্দের ব্যানারে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও মর্যাদা রক্ষার দাবিতে এই মানববন্ধন করা হয়। এই শিক্ষকরাই গত ১৮ এপ্রিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে চিঠি লিখে ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি নিয়ে তাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছিলেন।

আবুল মকসুদ অভিযোগ করে বলেন, এটা অত্যন্ত লজ্জার... যে এধরনের ঘটনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটেছে। মধ্যরাতে ছাত্রীদের তাদের হল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু উপাচার্য বলেছেন তারা শুধু ছাত্রীদের তাদের অভিভাবকদের জিম্মায় দিয়েছেন। এটা আমাকে পীড়া দিয়েছে।

আবুল মকসুদ বলেন, দেশে প্রথম বারের মত প্রাতিষ্ঠানিকভাবে নারীরা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, সেটাও আবার হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মত এলাকায়।

মানববন্ধনে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, এর পর বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করার আগে তাদেরকে (শিক্ষক) গ্রেফতার করতে হবে।

‘শিক্ষার্থীদের সকল যৌক্তিক দাবির প্রতি আমরা সমর্থন জানাব। তারা হয়রানির শিকার হলে শিক্ষকরা এর সমুচিত জবাব দিবে।’

মানববন্ধনের সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক এমএম আকাশ বলেন, তাদের দুটি দাবির মধ্যে একটি হলো শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। ছাত্রদের নির্যাতনের মাধ্যমে রাষ্ট্রযন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসন লঙ্ঘন করেছে বলেও এসময় তিনি অভিযোগ তোলেন।

তিনি বলেন, কর্তৃপক্ষ কার্যকর ভূমিকা পালনে ব্যর্থ হয়েছে। আমাদের দ্বারা যারা নির্বাচিত হয়েছে তারা তাদের দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালন করছে না। বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিতে হলের ছাত্রদের বাধ্য করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, কর্তৃপক্ষের উচিত ছিল নির্যাতনের হাত থেকে ছাত্রদের রক্ষা করা। কিন্তু তারা নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করবেন নাকি ছাত্রদের স্বার্থ রক্ষা করবেন এ নিয়ে দ্বিধার মধ্যে রয়েছেন।

মানববন্ধনে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানজিমুদ্দিন খান ছাত্র-শিক্ষকদের নিরাপত্তাসহ মোট ছয়টি দাবির কথা জানান। অন্য দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, সরকারি বা অন্য কোনো বাহিনীর হাত থেকে ছাত্রদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশেষ সেল গঠন করতে হবে; আন্দোলনে হামলার সাথে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনতে হবে; উপাচার্যের বাসভবন ভাঙচুরকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে; ক্যাম্পাসসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে ও ছাত্র-শিক্ষকদের মর্যাদা সমুন্নত রাখতে হবে।

আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক তাসনিম সিদ্দিকী, অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সঙ্গীতা আহমেদ ও মনোবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি নাসরিন ওয়াদুদ মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন।

Comments

The Daily Star  | English

Over 5,500 held in one week

At least 738 more people were arrested in the capital and several other districts in 36 hours till 6:00pm yesterday in connection with the recent violence across the country.

13h ago