মিথ্যে বলে ট্রাম্পকে প্রভাবিত করতে চাইছে নেতানিয়াহু: ইরান

ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বক্তব্যকে ‘মিথ্যা’ আখ্যা দিয়ে সব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে দেশটির শীর্ষ কর্মকর্তারা। তারা বলেছেন, ইরানের সাথে ক্ষমতাধর ছয় দেশের পরমাণু চুক্তির ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে প্রভাবিত করতে এসব মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করেছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী।
মিথ্যে বলে ট্রাম্পকে প্রভাবিত করতে চাইছে নেতানিয়াহু
ইরানের সাথে যুক্তরাষ্ট্রসহ ছয় ক্ষমতাধর দেশের পারমাণবিক চুক্তির সবচেয়ে বড় সমালোচক ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ছবি: রয়টার্স

ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বক্তব্যকে ‘মিথ্যা’ আখ্যা দিয়ে সব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে দেশটির শীর্ষ কর্মকর্তারা। তারা বলেছেন, ইরানের সাথে ক্ষমতাধর ছয় দেশের পরমাণু চুক্তির ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে প্রভাবিত করতে এসব মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করেছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী।

গত সোমবার নেতানিয়াহু বলেছিলেন, ইরান গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। দাবির স্বপক্ষে বেশ কিছু নথিপত্রও নাটকীয় কায়দায় উপস্থাপন করেছিলেন তিনি।

এর জবাবে মঙ্গলবার ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেন, নেতানিয়াহু যা বলেছেন তা তার অতীতের বক্তব্যেরই পুনরাবৃত্তি। ইরানের যে এ ধরনের কোনো কার্যক্রম নেই তার প্রমাণ আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) অনেক আগেই দিয়েছে।

ইরানের বার্তা সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ২০১৫ সালে ছয় দেশের সাথে ইরানের যে চুক্তি হয়েছিল সেটা নিয়ে ট্রাম্পের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে ইসরায়েল। তবে ট্রাম্প যেটাই সিদ্ধান্ত নিক না কেন তার জন্য প্রস্তুত রয়েছে ইরান।

পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, রাশিয়া, জার্মানি, চীন ও যুক্তরাজ্যের সাথে চুক্তি করেছিল ইরান। চুক্তির পর ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে ওবামা প্রশাসন। ট্রাম্প প্রশাসন এখন চাইছে এই চুক্তি থেকে বেরিয়ে গিয়ে ইরানের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে বা আলোচনা শুরু করতে। তিন বছর পুরনো ওই চুক্তির শর্ত অনুযায়ী আগামী ১২ মে’র মধ্যে ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নবায়ন করতে হবে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। অন্যথায় চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাবে যুক্তরাষ্ট্র। আর শুরু থেকেই চুক্তিটির সবচেয়ে বড় সমালোচক ইসরায়েল।

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র  বাহরাম ঘাসেমিও নেতানিয়াহুর বক্তব্যকে ‘প্রোপাগান্ডা’ আখ্যা দিয়েছেন। বুধবার তিনি বলেছেন, ‘একগাদা মিথ্যা কথা ছাড়া নেতানিয়াহু কিছুই উপস্থাপন করতে পারেননি।’ একই দিনে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থাও বলেছে, ইরান নতুন করে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছে এমন কোনো প্রমাণ ২০০৯ সালের পর থেকে পাওয়া যায়নি। তারা আরও বলে, পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কাজ চালানো যায় এমন কিছু স্থাপনা ২০০৩ সাল পর্যন্ত ইরানে ছিল। তবে বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের বাইরে সেখানে তেমন কিছু হয়নি।

নেতানিয়াহু সোমবার ইরানের বিরুদ্ধে ‘প্রমাণ’ উপস্থাপনের সময় বলেন, ‘আপনারা সবাই জানেন ইরানের নেতারা ক্রমাগতভাবে বলে আসছেন তারা কখনই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করেননি... কিন্তু আজ আমি আপনাদের একটি বিষয় স্পষ্ট করতে চাই-ইরান সব সময় মিথ্যা কথা বলেছে।’

সেই সাথে নেতানিয়াহুর অভিযোগ, যেসব নথিপত্রে ইরানের পরমাণু কর্মসূচির কথা উল্লেখ রয়েছে চুক্তির পর থেকে ইরান সেসব নথি গোপন করার চেষ্টা বাড়িয়েছে।  কয়েক সপ্তাহ আগে ইসরায়েলের গোয়েন্দারা আধা টন এরকম গোপন নথির সন্ধান পেয়েছে। গোয়েন্দাদের সাফল্যের প্রশংসা করে এর পর তিনি ৫৫ হাজার পৃষ্ঠার নথিপত্র ও ১৮৩টি সিডিতে রেকর্ড করা আরও ৫৫ হাজার ফাইল উপস্থাপন করেন। নেতানিয়াহুর দাবি এসব নথিতে ইরানের পরমাণু কর্মসূচির তথ্য রয়েছে।

নেতানিয়াহুর এই বক্তব্যের সমর্থন জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, নেতানিয়াহু এর আগেও ইরান সম্পর্কে যা যা বলেছিল অক্ষরে অক্ষরে তার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছিল।

শুরু থেকেই ইরানের সাথে বিশ্বের ক্ষমতাধর ছয় দেশের পরমাণু চুক্তির বিরোধিতা করে আসছিলেন নেতানিয়াহু। তার বক্তব্য হলো, এই চুক্তি দিয়ে ইরানকে পরমাণু অস্ত্র তৈরি থেকে বিরত রাখা সম্ভব হবে না। সূত্র: আল জাজিরা

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

5h ago