ছাত্রদের দাবি মেনে নিয়েছি: প্রধানমন্ত্রী

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের আন্দোলনের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর বলেছেন, ছাত্ররা দাবি জানিয়েছে। আমরা দাবি মেনে নিয়েছি। এখন আর এই বিষয়ে আলোচনার কিছু নেই।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: টিভি ফুটেজ থেকে সংগৃহীত

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের আন্দোলনের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর বলেছেন, ছাত্ররা দাবি জানিয়েছে। আমরা দাবি মেনে নিয়েছি। এখন আর এই বিষয়ে আলোচনার কিছু নেই।

অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য ও সৌদি আরব সফরের বিভিন্ন দিক তুলে ধরতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী আজ এই কথা বলেন।

কোটা সংস্কার প্রসঙ্গে প্রশ্নের উত্তরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যে ছেলেপেলেরা লেখাপড়া করছে বা হোস্টেলে থাকছে, তারা কি বিভিন্ন জেলা থেকে আসেনি? তারা মেধাবী, আমি জানি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আন্দোলনে যারা ছিল, তাদের ছবিটবি সংরক্ষণ করা আছে। তখন দেখা যাবে। ওই জেলার কারা কারা আন্দোলনে ছিল, সেটিও আমরা দেখব। তারপর যদি এসে কান্নাকাটি করে, আমাদের কিছু করার থাকবে না।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘এরপর ছাত্ররা কোটা চায় না। কোটা চায় না, আমি দাবি মেনে নিয়েছি। এখানে ক্ষুব্ধ হওয়ার কিছু নেই। ঠিক আছে, ছেলেমেয়েরা দাবি করেছে, আমি মেনে নিয়েছি। সেটি নিয়ে এখন আলোচনার কী আছে বা প্রশ্ন আনার দরকার কী?’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোটা সংস্কার ছাত্রদের বিষয় না। এটা সরকারের নীতিনির্ধারণী বিষয়।’

এর আগে গত ১১ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে দাঁড়িয়ে কোটা পদ্ধতি বাতিলের ঘোষণা দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, যখন কেউই কোটা চায় না, তখন কোন কোটাই থাকবে না। “কোটা পদ্ধতি বাতিল।”

আজ গণভবনে অনুষ্ঠিত এই সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগের আগামী কাউন্সিলের প্রক্রিয়ার কী হবে জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কাউন্সিলের মাধ্যমে যেন মেধাবী ছাত্ররা সংগঠনের নেতৃত্বে আসতে পারে সেদিকেই সবচেয়ে জোর দেওয়া হবে। কাউন্সিলে ভোট প্রক্রিয়ার কিছু নেতিবাচক দিক রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কাউন্সিল নিয়ম মেনে হবে। প্রথমে সমঝোতার ভিত্তিতে কমিটি গঠনের চেষ্টা হবে। এতে মতৈক্য না হলে ভোট হবে।

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে তিনি সফরের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। পরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর আগে গত ১৫ এপ্রিল ৮ দিনের সরকারি সফরে সৌদি আরব ও যুক্তরাজ্যে যান। সৌদি আরবে এক দিন অবস্থান করে একটি যৌথ সামরিক মহড়ার কুচকাওয়াজ ও সমাপনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন। এরপর কমনওয়েলথ সরকারপ্রধানদের বৈঠকে (সিএইচওজিএম) যোগদানের জন্য ১৬ এপ্রিল লন্ডনে যান প্রধানমন্ত্রী। তিনি ১৭ এপ্রিল ওয়েস্টমিনস্টারের কমনওয়েলথ নারী ফোরামের ‘এডুকেট টু এম্পাওয়ার: মেকিং ইকুইটেবল অ্যান্ড কোয়ালিটি প্রাইমারি এডুকেশন অ্যান্ড সেকেন্ডারি এডুকেশন আ রিয়েলিটি ফর গার্লস অ্যাক্রোস দ্য কমনওয়েলথ’ শীর্ষক অধিবেশনে বক্তব্য দেন। এর পরদিন এশীয় নেতাদের সাথে একটি গোলটেবিল আলোচনায় অংশ নেন। ১৯ এপ্রিল ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে কমনওয়েলথ সরকারপ্রধানদের বৈঠকের (সিএইচওজিএম) আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ও অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে যোগদান করেন। ২০ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী তিনটি ‘রিট্রিট সেশন’ ও শীর্ষ সম্মেলনের সমাপনী কার্যনির্বাহী অধিবেশনে অংশ নেন এবং ২১ এপ্রিল তিনি রয়েল কমনওয়েলথ সোসাইটি (আরসিএস) আয়োজিত শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী সরকারপ্রধানদের জন্য সংবর্ধনা এবং রানির জন্মদিনের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ শেষে ২৩ এপ্রিল দেশে ফেরেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর পর তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে অস্ট্রেলিয়া যান। সিডনিতে ‘গ্লোবাল সামিট অব উইমেন’ প্রধানমন্ত্রীকে গ্লোবাল উইমেনস লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড-২০১৮ প্রদান করে। বাংলাদেশে নারী শিক্ষার প্রসার এবং নারী উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে অগ্রণী ভূমিকা পালনের স্বীকৃতি হিসেবে তাকে সম্মাননা দেওয়া হয়। সফর শেষে গত ২৯ এপ্রিল তিনি দেশে ফেরেন।

Comments

The Daily Star  | English
Is Awami League heading towards a Pyrrhic victory

Column by Mahfuz Anam: Is Awami League heading towards a Pyrrhic victory?

With values destroyed, laws abused, institutions politicised, and corruption having become the norm, will victory by worthwhile for the Awami League?

9h ago