ভোটে জেতালে স্মার্টফোন!
পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপিকে জেতালে তরুণ-তরুণীদের হাতে ক্যাশ-লেস লেনদেনের জন্য স্মার্টফোন তুলে দেওয়া হবে। পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে গিয়ে বিজেপির শীর্ষ নেতা মুকুল রায় এমনই ঘোষণা করেছেন। আর তা নিয়েই শুরু নির্বাচনী বিধিভঙ্গেরও আরেক বিতর্ক।
শনিবার জলপাইগুড়ির জেলার ঘুঘুডাঙা এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণায় সভা করেন মুকুল রায়। তখনই ১৮ বছরের বয়সের নতুন ভোটারদের আকৃষ্ট করতে মোবাইল ফোন দেওয়ার ঘোষণা করেন।
মুকুলের ভাষায়, এখানে যদি জেলা পরিষদের আপনারা বিজেপিকে জেতান। তবে ১৮ বছরের বয়সের সবাইকে স্মার্টফোন দেওয়া হবে। কেননা, আমাদের প্রধানমন্ত্রীও চাইছেন ক্যাশ-লেস সংস্কৃতি গড়ে উঠুক।
এর আগে ত্রিপুরাতে নির্বাচনের সময়ও স্মার্টফোন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বিজেপি। ভারতের রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেছিলেন, চটকদার প্রচারণা ও স্মার্টফোনের প্রলোভন দেখিয়ে তরুণ ভোটারদের রায় নিজেদের পক্ষে টানে গেরুয়া শিবির।
এখন তৃণমূল কংগ্রেস বলছে, নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশের পর এই ধরণের ঘোষণা দেওয়া আদর্শ আচরণ বিধি লঙ্ঘনের সামিল। মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ করা হয়েছে বলে জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল সভাপতি নেতা সৌরভ চক্রবর্তী সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন।
তৃণমূলে নেতা আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও জলপাইগুড়িতে এসে ডানকানের চা বাগান অধিগ্রহণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেওয়া বিজেপির সংস্কৃতি।
শুধু প্রতিশ্রুতিই নয়, পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘিরে পশ্চিমবঙ্গের প্রধান রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতৃত্ব একে অপরের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত আক্রমণ করে নির্বাচনী আচরণ বিধি ভাঙছেন রোজ।
শনিবার উত্তর চব্বিশ পরগনার বসিরহাটের একটি নির্বাচনী সভায় দাঁড়িয়ে মমতা ব্যানার্জির ভাইপো, সাংসদ অভিষেক ব্যানার্জি বিজেপিকে ভাগাড় ও জঞ্জাল পার্টি বলে দাবি করেন। মুকুল রায়ের নাম না করে তরুণ ওই তৃণমূল নেতা বলেন, তৃণমূল যেসব মালকে ভাগাড়ে ফেলে দিয়েছিল বিজেপি তুলে নিয়ে জায়গা দিয়েছে। বিজেপি একটা ভাগাড় পার্টি।
বিজেপি সভাপতি দীলিপ ঘোষও শনিবার শিরোনামে ছিলেন হুমকিমুলক ভাষণ দিয়ে। তিনি এদিন বলেন, আমরা যেমন ৩৫ হাজার বুথে তৃণমূলের পুলিশ ও গুণ্ডাকে ঠেকিয়ে প্রার্থী দিয়েছি। ভোটের দিন আমরা এইভাবেই ঠেকিয়ে ভোটে জিতে আসব।
১৪ মে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে স্থানীয় সরকার অর্থাৎ পঞ্চায়েত নির্বাচন। ১৭ তারিখ ফলাফল গণনা। রাজ্যের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেস, প্রধান বিরোধী বিজেপিসহ বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। যদিও নির্বাচনের নিরাপত্তা বিষয়ক একাধিক মামলায় এখনোও নিষ্পত্তি হয়নি। মামলা চলছে কলকাতা হাইকোর্টের দুটি পৃথক বেঞ্চে।
Comments