সংসদে কোরাম সংকটে ক্ষতি ১২৫ কোটি টাকা

চলতি দশম জাতীয় সংসদে কোরাম সংকটে ১৫২ ঘণ্টা ১৭ মিনিট সময় নষ্ট হয়েছে। সংসদের ১৮টি অধিবেশনে গড়ে ৩০ মিনিট করে সময় অপচয় হয় যা মোট সময়ের ১২ শতাংশ। এই সময়ের অর্থমূল্য প্রায় ১২৫ কোটি ২০ লাখ টাকা।
আজ ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) দশম জাতীয় সংসদের পার্লামেন্ট ওয়াচ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। রাজধানীর ধানমন্ডিতে মাইডাস সেন্টারে টিআইবি কার্যালয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পর সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।
চলতি সংসদের প্রথম অধিবেশন থেকে অষ্টাদশ অধিবেশন পর্যন্ত পরিচালিত গবেষণায় দেখা যাচ্ছে সংসদের মোট ব্যয়িত সময়ের মধ্যে আইন প্রণয়নে মাত্র ৯ শতাংশ সময় ব্যয় হয়েছে। এতে সাংসদদের উপস্থিতি তুলনামূলকভাবে বৃদ্ধি পেলেও মন্ত্রীদের উপস্থিতি হ্রাস পেতে দেখা গেছে। আলোচনার জন্য সাংসদদের জন্য বরাদ্দ সময়ের মধ্যে ৭৮ শতাংশ সময়ই পেয়েছেন সরকার দলীয় সাংসদরা।
টিআইবির এই গবেষণা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনায় সাংসদদের বক্তব্যে নিজস্ব নির্বাচনী এলাকার উন্নয়ন সম্পর্কিত পরিকল্পনার প্রস্তাব ছিল লক্ষণীয়। আক্রমণাত্মক, কটু ও অশ্লীল শব্দের মতো অসংসদীয় ভাষা ব্যবহার অব্যাহত ছিল। এছাড়াও সংসদের বাইরের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ সম্পর্কিত ব্যক্তিগত ও পারিবারিক বিষয় উপস্থাপন, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের নিয়ে বিভিন্ন কটূক্তি হলেও এ ধরনের আলোচনা বন্ধে স্পিকারের কার্যকর ভূমিকার ঘাটতি দেখা গেছে।
বর্তমান সংসদের চলমান চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে টিআইবির প্রতিবেদনে বলা হয়, আন্তর্জাতিক চুক্তিসমূহ রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে উপস্থাপিত না হওয়ার চর্চা অব্যাহত ছিল। আইন প্রণয়নে সদস্যদের বিশেষ করে সরকার দলীয় সদস্যদের কম অংশগ্রহণ, বিরোধী দলের মতামত ও প্রস্তাব গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচিত না হওয়া ও জনমত গ্রহণের চর্চা প্রায় অনুপস্থিত থাকাকে বর্তমান সংসদের চলমান চ্যালেঞ্জ হিসেবে মনে করছে টিআইবি। সেই সঙ্গে সরকারের জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠায় প্রধান বিরোধী দল ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হয়েছে বলেও দুর্নীতিবিরোধী আন্তর্জাতিক সংস্থাটির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
জাতীয় সংসদে ৩৫০ জন সংসদ সদস্য রয়েছেন। সংসদে ন্যূনতম ৬০ জন সদস্য উপস্থিত থাকলে কোরাম গঠিত হয়। সংসদে ৬০ জন সদস্য উপস্থিত না থাকলে কোরাম সংকট হয়। কোরাম সংকট হলে অধিবেশন শুরু হতে পারে না।
Comments