কেন বাংলাদেশি লোক ঢুকেছিল ভোটের দিন: মমতা ব্যানার্জি

পঞ্চায়েত ভোটের দিন অশান্তি সৃষ্টি করতে কেন বাংলাদেশি লোক ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছিল? কেন সেদিন বিএসএফ ঢুকেছিল? উত্তর চব্বিশ পরগনা, বনগাঁ, বাগদা ও বসিরহাট এসব হয়েছে বাংলাদেশ সীমান্তে- এমন প্রশ্ন রাখেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।
Mamata Banerjee
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। ছবি: স্টার

পঞ্চায়েত ভোটের দিন অশান্তি সৃষ্টি করতে কেন বাংলাদেশি লোক ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছিল? কেন সেদিন বিএসএফ ঢুকেছিল? উত্তর চব্বিশ পরগনা, বনগাঁ, বাগদা ও বসিরহাট এসব হয়েছে বাংলাদেশ সীমান্তে- এমন প্রশ্ন রাখেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।

গতকাল (১৮ মে) মমতা ব্যানার্জি মন্তব্য করেন, রাজ্যে আরও অশান্তি বাধাতে কেন্দ্রের বাহিনী বিএসএফ কাজ করেছে। একইভাবে তিনি এও বলেন, ভোটে অশান্তি সৃষ্টি করার জন্য শুধু বাংলাদেশ থেকে নয় পশ্চিমবঙ্গের পার্শ্ববর্তী বিহার ও ঝাড়খণ্ড থেকেও লোক এসেছিল।

গত ১৪ মে পঞ্চায়েত ভোট গ্রহণের দিন রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকও একই দাবি করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, সীমান্তবর্তী ভোট কেন্দ্রগুলোতে ওপার (বাংলাদেশ) থেকে দুষ্কৃতী আনা হয়েছিল। সীমান্তরক্ষী বাহিনীরা তাতে সাহায্য করেছে।

গতরাতে মুখ্যমন্ত্রীর কর্মস্থল নবান্ন থেকে বাড়ির পথে যাওয়ার সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে বলতে গিয়ে এসব বলেন মুখ্যমন্ত্রী ও পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূলের সভানেত্রী মমতা ব্যানার্জি।

এ সময় পঞ্চায়েত নির্বাচনে তাঁর দলের বিপুল জয় গ্রামের মানুষকে উৎসর্গও করেন মমতা।

গতকাল রাজ্যের ২৯১টি ব্লকে তিনস্তরের পঞ্চায়েত নির্বাচনের ভোটের ফল গণনা করা হয়। সেই ফল নিয়ে মমতা বলেন, রাজ্যের ২০ জেলার মধ্যে ১৯ জেলাতেই তৃণমূল কংগ্রেস জয় নিশ্চিত করেছে। ২০১৩ সালে ছিল ১৮টি জেলা। পরে তা ২০টি করা হয়। গতবার মালদা ও উত্তর দিনাজপুর জেলা তৃণমূল দখল করতে পারেনি। এবার সেই জেলাগুলোতেও তৃণমূল কংগ্রেস জয় পেয়েছে। মোট আসনের ৯০ শতাংশ আসনেই তৃণমূল প্রার্থীরা জয় পেয়েছেন।

মমতা আরও বলেন, নির্বাচনে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ১০ জন তারই দলের কর্মী। একজন প্রিজাইডিং অফিসারের রেল দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। প্রত্যেক নিহতের পরিবারকে সরকার সাহায্য করবে বলেও ঘোষণা করেন তিনি।

তৃণমূলের বিরুদ্ধে কংগ্রেস, বিজেপি, সিপিএম এবং মাওবাদীরা মিলেমিশে এই পঞ্চায়েত নির্বাচনে অংশ নিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন মমতা।

পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সমালোচনার জবাব দিয়ে মমতা বলেন, একজন প্রধানমন্ত্রীরও সীমারেখা থাকা উচিত। এ সময় তিনি কর্ণাটকে বিজেপি সরকার গঠনের প্রক্রিয়ারও সমালোচনা করেন। বলেন, যেভাবে ঘোড়া কেনাবেচা হলো তা গণতন্ত্রের জন্য খুবই খারাপ সংকেত।

প্রসঙ্গত, গতকাল (১৭ মে) রাজ্যজুড়ে পঞ্চায়েত ভোটের ফলাফল প্রকাশ করা হয়। প্রায় ৩৪ শতাংশ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তৃণমূলের প্রার্থীরা আগেই জয় পেয়েছিল। ভোটের ফলাফলে এই পর্যন্ত বেসরকারি সূত্রের খবর হচ্ছে, জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েতের সিংহভাগ আসনেই তৃণমূল প্রার্থীরা এগিয়ে রয়েছেন। ভোটের ব্যবধানে আকাশ-পাতাল দূরত্ব হলেও বিজেপি রাজ্যে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে এবং বামফ্রন্ট-কংগ্রেসের অবস্থা তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। তবে নির্দল প্রার্থীরা কোথাও কোথাও বিজেপির থেকেও ভালো করেছে।

এদিকে পঞ্চায়েত ভোটের আগে ও পরে এবং রাজ্যজুড়ে চলমান অশান্তির কারণে পশ্চিমবঙ্গে রাষ্ট্রপতির শাসন দাবি করেছে প্রদেশ কংগ্রেস। গতকাল দুপুরে প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি অধীর চৌধুরী রাজ্যপাল কেশরী নাথ ত্রিপাঠির সঙ্গে দেখা করে এই দাবি জানান। পরে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গেও কথা বলেন।

Comments

The Daily Star  | English

EC gets transfer list of 110 UNOs, 338 OCs

Lists of 110 more UNOs and 338 OCs of different police stations were sent to the Election Commission by the authorities concerned today for transfer ahead of the January 7 national polls

42m ago