ডু প্লেসির ব্যাটে সাকিবদের হারিয়ে ফাইনালে চেন্নাই
অল্প পূঁজি নিয়ে বল হাত আরও একবার দারুণ লড়াই করেছিল সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বোলাররা। তবে তাদের চেষ্টা বিফলে গেছে ফাফ ডু প্লেসির ব্যাটে। দলকে খাদের কিনার থেকে টেনে ফাইনালে নিয়ে গেছেন তিনি। দলের হারের দিনে ব্যাটে-বলে অনুজ্জ্বল ছিলেন সাকিব আল হাসান।
শেষ ওভার থেকে মাত্র ৬ রান দরকার ছিল চেন্নাইর। হাতে থাকা কেবল দুই উইকেট অবশ্য দিচ্ছিল শঙ্কাও। তবে ভুবনেশ্বর কুমারকে সোজা ব্যাটে বাউন্ডারির বাইরে আছড়ে উল্লাস করতে থাকেন ডু প্লেসি। ঘুরে দাঁড়ানোর দারুণ গল্প লিখে ফাইনাল নিশ্চিত করে চেন্নাই।
মঙ্গলবার মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে সানরাইজার্সের দেওয়া ১৪০ রানের লক্ষ্যে ৫ বল হাতে রেখে ২ উইকেটের জয় পায় চেন্নাই। ৪২ বলে অপরাজিত ৬৭ রান করে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন প্রোটিয়া অধিনায়ক ডু প্লেসি। এই জয়ে এক মৌসুম পর আইপিএলে ফেরাই শিরোপার একদম কাছে চলে গেল মহেন্দ্র সিং ধোনির দল। হারলেও এখনো ফাইনালে উঠার সুযোগ আছে সাকিবদেরও। এলিমিনেটর ম্যাচে কলকাতা নাইট রাইডার্স ও রাজস্থান রয়্যালসের মধ্যকার ম্যাচে জয়ী দলের বিপক্ষে পরের লড়াইয়ে নামবে হায়দরবাদ।
পয়েন্ট টেবিলের এক নম্বরে থাকলেও প্রথম পর্বে চেন্নাই সুপার কিংসের বিপক্ষে দুই ম্যাচই হেরেছিল সানরাইজার্স হায়দরবাদ। কোয়ালিফায়ার ম্যাচেও সেই চেন্নাইর সঙ্গে পেরে উঠল না তারা।
দলের বাজে দিনে ব্যাটে-বলে একদম হতাশ করেছেন সাকিব। দলের বিপর্যয়ে ব্যাট করতে নেমেছিলেন। তার কাছে দাবি ছিল বড় ইনিংস। কিন্তু ১০ বলে মাত্র ১২ রান করে ডোয়াইন ব্রাভোর বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন তিনি।
পরে বোলিংয়েও এসেছিল কিছু করে দেখানোর সুযোগ। একাদশ ওভারে যখন বল হাতে পান, তখন ৫০ রানে ৪ উইকেট খুইয়ে রীতিমতো ধুঁকছে চেন্নাই। ওই ওভার অবশ্য বেশ ভালোই করেন বাংলাদেশের তারকা। তার প্রথম ওভার থেকে আসে ৬ রান। ১৪তম ওভারে আবার বোলিং পেয়ে রাখতে পারেননি তাল। তার ওই ওভার থেকে চার-ছয় পিটিয়ে ১৪ রান নিয়ে নেন চাহার-ডু প্লেসি। দুই ওভারে ২০ রান দেওয়ার পর আর সাকিবকে ডাকেননি উইলিয়ামসন।
১৪০ রান তাড়ায় চেন্নাইর ইনিংসের পুরোটাই ডু প্লেসিময়। শেন ওয়াটসনকে নিয়ে ওপেন করতে নেমেছেন। দলের ৮ উইকেট পড়ার পরও থেকেছেন অবিচল। ছক্কা মেরে দান শেষ করে দেন তিনি।
এক সময় সিদ্ধার্থ কাউল, রশিদ খান আর ভুবনেশ্বর কুমারদের দাপটে জয়ের কাছেই চলে গিয়েছিল হায়দরাবাদ। ৬২ রানেই হারিয়ে ফেলেছিল ৬ উইকেট। আরও একবার অবিশ্বাস্য বোলিং করা আফগান লেগ স্পিনার রশিদ খান ৪ ওভারে মাত্র ১১ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট।
সানরাইজার্স বোলারদের হুঙ্কারের মধ্যে একা লড়াই করেছেন ডু প্লেসি। তার ৬৭ রানের ইনিংস ছিল ৫ চার আর এক হালি ছক্কা। ডু প্লেসির সঙ্গে শুরুতে ১৩ বলে ২২ করে সঙ্গত করেছিলেন সুরেশ রায়না। বাকিদের কেউ দাঁড়াতে না পারায় হারতে বসেছিল দল। শেষ দিকে আবার দুই টেল এন্ডারের দারুণ সঙ্গ পেয়েছেন ডু প্লেসি। ৬ বলে গুরুত্বপূর্ণ ১০ করেন চাহার। আর ৫ বলে ১৫ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন শার্দুল ঠাকুর। বোলিংয়ে পঞ্চাশ রান দেওয়ার খেদ মিটিয়েছেন ব্যাট হাতে।
এর আগে সানরাইজার্সের ব্যাটিংয়ের করুন হাল করে ছাড়েন ব্রাভো, এনগিদি, জাদেজারা। ৫০ রানের ভেতর ৪ উইকেট হারানোর পর ৮৮ তে পড়ে ৬ উইকেট। এসবের মধ্যে দলকে টেনে তুলেন কার্লোস ব্র্যাথওয়েট আর ইউসুফ পাঠান। বিশেষ করে ব্র্যাথওয়েটের ২৯ বলে ৪৩ রানের ইনিংসেই কিছুটা লড়াইয়ের পূঁজি পেয়েছিল কেন উইলিয়ামসনের দল। ডু প্লেসির তেতে থাকার দিনে যা অবশ্য যথেষ্ট হয়নি।
Comments