বিশ্বকাপে যেভাবে চালু হয় লাল কার্ড-হলুদ কার্ড

আজকাল তো ক্রিকেটেও কার্ডের প্রচলন শুরু হয়েছে। তবে অবাক করা ব্যাপার হলেও সত্যি ১৯৭০ সালের আগে ফুটবলেই ছিলো না কোন ধরণের কার্ড। নানা ঘটনার পর সময়ের প্রয়োজনেই শুরু হয় এর প্রচলন। আর এর পেছনের গল্পটাও দারুণ।
red-card
২০০৬ বিশ্বকাপের ফাইনালে ইতালির মাতেরেজ্জিকে ঢুস দিয়ে লাল কার্দেড দেখেন ফ্রান্সের জিদান। ছবি : এএফপি

আজকাল তো ক্রিকেটেও কার্ডের প্রচলন শুরু হয়েছে। তবে অবাক করা ব্যাপার হলেও সত্যি ১৯৭০ সালের আগে ফুটবলেই ছিলো না কোন ধরণের কার্ড। নানা ঘটনার পর সময়ের প্রয়োজনেই শুরু হয় এর প্রচলন। আর এর পেছনের গল্পটাও দারুণ।

বলা হয় ফুটবল মানেই নান্দনিক শৈলীর গল্প। কিন্তু মাঝে মাঝে এটা যেন তৈরি হয় কুরুক্ষেত্রে। আর তখন রেফারীদের নিতে হয় শক্ত পদক্ষেপ। কিন্তু ১৯৭০ এর আগে বেশ অসহায়ই ছিলেন রেফারিরা। যেমনটা হয়েছিলো ‘ব্যাটল অব সান্তিয়াগো’র মতো ম্যাচে। খেলোয়াড়দের নিয়ন্ত্রণ করতে হিমশিম খেয়েছিলেন রেফারি কেন এস্টন। সে ম্যাচ শেষেই মাথায় তার ঘুরপাক খেতে থাকে কিভাবে খেলোয়াড়দের নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।

ভাবতে ভাবতে চলে যায় আরও চার বছর। ১৯৬৬ বিশ্বকাপ। কোয়ার্টার ফাইনালে মুখোমুখি আর্জেন্টিনা ও ইংল্যান্ড। ম্যাচের এক পর্যায়ে বেশ কঠিন এক ফাউল করেন আন্তোনিও রাতিন। তাকে মাঠ থেকে বেরিয়ে যাবার নির্দেশ দিলেন রেফারি রুডি ক্রেইটলেন। ইংরেজিতে রাতিন রেফারির কথা না বুঝে দাঁড়িয়ে রইলেন মাঠেই। পরে হাতের ইশারায় বুঝতে পারলেন। এমন ঘটনা তখন ঘটতো প্রায়শই।

তবে রাতিন যখন মাঠ ছাড়ছিলেন তখন নালিশ জানান, এমন ফাউল তো ইংলিশ খেলোয়াড়রাও করেছে। দুইজন খেলোয়াড়ের করা ফাউলের কথা উল্লেখ করেন তিনি। তবে ইংলিশ দুই খেলোয়াড়ের ফাউল একই রকম হলেও ভয়াবহতা কিছুটা কম ছিলো। কিন্তু এ যুক্তি মানতে নারাজ আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। শেষ পর্যন্ত মানলেও ক্ষোভটা থেকেই যায়।

আর এ ব্যাপারটি ভাবায় এস্টনকে। ব্যাটল অব সান্তিয়াগোতে এমনই এক ভয়ংকর অভিজ্ঞতা তার রয়েছে। ভাবতে ভাবতেই গাড়ি চালাচ্ছিলেন তিনি। কিংস্টন হাইস্ট্রিটে ট্র্যাফিক সিগনালে আটকা পরে গাড়ি। আর সিগনালে তাকিয়েই বুদ্ধিটা মাথায় খেলে যায়। সবুজ বাতি মানে চলতে থাকো। লাল বাতি মানে থেমে যাও। মাঝে ক্ষণিকের জন্য হলুদ বাতি জ্বলে। মানে সতর্ক থাকো, এখনই জ্বলবে সবুজ বাতি। তখনই ভাবলেন মাঠেও তো খেলোয়াড়দের এভাবে সতর্ক করা যেতে পারে।

নিজের ভাবনাটা ফিফার কাছে জানান এস্টন। আর ফিফাও তার কথার গুরুত্ব দেয়। ১৯৭০ সালে প্রথমবার মেক্সিকো বিশ্বকাপে পরীক্ষামূলক ভাবে ব্যবহার করা হয়। তবে সে বছর কেউ লাল কার্ড পায়নি। ১৯৭৪ সালে পশ্চিম জার্মানির বিপক্ষে চিলির কার্লোস কাসজেলি বিশ্বকাপ ইতিহাসের প্রথম লাল কার্ডটি দেখেন। এরপর এর উপকারিতা দেখে নিয়মিতই ব্যবহার হয়ে আসছে ফুটবলে।

সম্প্রতি সবুজ কার্ডের প্রচলন করেছে ফিফা। তবে এটা সতর্ক কিংবা বহিষ্কার করার জন্য নয়। পুরষ্কার হিসেবেই দেওয়া হয়। মাঠে কোন ঘটনা রেফারির চোখ এড়িয়ে গেলে পরে যদি কোন খেলোয়াড় সত্যটা স্বীকার করেন, তাহলে এ কার্ড দেখানো হয়। ২০১৭ সালের ১০ অক্টোবর ইতালির সিরি বি’তে প্রথমবারের মতো সবুজ কার্ড দেখেন ভিসেনজারের স্ট্রাইকার গালানো।

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

5h ago