দল বিশ্লেষণ: বিশ্বকাপের অন্যতম দাবিদার ফ্রান্স

আর মাত্র ৯ দিন পর রাশিয়ায় শুরু হতে যাচ্ছে ফুটবলের মহাযজ্ঞ। এরমধ্যেই ফুটবল উন্মাদনা শুরু হয়ে গেছে ভক্তদের মধ্যে। উত্তেজনার পারদ দিন দিন বাড়ছেই। পছন্দের দলগুলো কিংবা তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলো কেমন করবে এ নিয়ে ভাবনার শেষ নেই। আজ ফ্রান্সের স্কোয়াড, বিশ্বকাপে তাদের সম্ভাবনা থেকে শুরু করে শক্তি-দুর্বলতার দিকগুলো তুলে ধরা হলো-
france
ফ্রান্স দল। ছবি : রয়টার্স

আর মাত্র ৯ দিন পর রাশিয়ায় শুরু হতে যাচ্ছে ফুটবলের মহাযজ্ঞ। এরমধ্যেই ফুটবল উন্মাদনা শুরু হয়ে গেছে ভক্তদের মধ্যে। উত্তেজনার পারদ দিন দিন বাড়ছেই। পছন্দের দলগুলো কিংবা তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলো কেমন করবে এ নিয়ে ভাবনার শেষ নেই। আজ ফ্রান্সের স্কোয়াড, বিশ্বকাপে তাদের সম্ভাবনা থেকে শুরু করে শক্তি-দুর্বলতার দিকগুলো তুলে ধরা হলো-

ডাকনাম : লি ব্লু।

কোচ: দিদিয়ের দেশম

অধিনায়ক: হুগো লরিস

র‍্যাংকিং:

বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ : ১৪ বার।

সেরা সাফল্য: চ্যাম্পিয়ন- ১৯৯৮।

যেভাবে বিশ্বকাপের মূল পর্বে এসেছে:?

নেদারল্যান্ডস ও সুইডেনের সঙ্গে একই গ্রুপে থাকায় বাছাই পর্ব বেশ চ্যালেঞ্জিংই ছিলো ফ্রান্সের। এরপর শুরুটাও ভালো হয়নি তাদের। দুর্বল বেলারুশের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র। কিন্তু বুলগেরিয়া, নেদারল্যান্ডস, সুইডেন ও লুক্সেমবার্গের সঙ্গে টানা চারটি ম্যাচ জিতে শীর্ষে উঠে আসে দলটি। কিন্তু সুইডেনের কাছে ফিরতি পর্বে হেরে ছন্দপতন।

পরের ম্যাচেই নেদারল্যান্ডসকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে আবার ছন্দে ব্লুজরা। কিন্তু এরপর দুর্বল লুক্সেমবার্গের সঙ্গে আবার গোলশূন্য ড্র। ফলে মূল পর্ব নিশ্চিত করতে অপেক্ষা করতে শেষ ম্যাচ পর্যন্ত। বেলারুশকে ২-১ গোলে হারিয়ে এ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হয়েই রাশিয়া বিশ্বকাপের টিকেট কাটে দলটি।

সূচি :

১৬ জুন: অস্ট্রেলিয়া

২১ জুন: পেরু

২৬ জুন: ডেনমার্ক

স্কোয়াড :

গোলরক্ষক - হুগো লরিস, স্টিভ মানদান্দা, আলফোনসে আরিওলা।

ডিফেন্ডার - লুকাস হার্নান্দেজ, প্রেসনেল কিমপেম্বে, বেঞ্জামিন মেন্দি, বেঞ্জামিন পাভার্দ, আদিল রামি, জিব্রিল সিদিবে, স্যামুয়েল উমতিতি, রাফায়েল ভারানে।

মিডফিল্ডার - এনগালো কন্তে, ব্লেইস মাতুইদি, স্তিভেন এনজোনজি, পল পগবা, ক্লোরেনতিন তোলিসো।

ফরোয়ার্ড - উসমান ডেম্বেলে, নাবিল ফেকির, অলিভিয়ে জিরু, আঁতোয়া গ্রিজমান, থমাস লেমার, কিলিয়ান এমবাপে, ফ্লোরিয়ান থাওভিন।

সম্ভাব্য একাদশ : (৪-৩-৩) লরিস, মেন্দি, উমতিতি, ভারানে, সিদিবে, পগবা, কন্তে, মাতুইদি, এমবাপে, গ্রিজমান, ডেম্বেলে।

বিশ্বকাপের ফাইনালে যাওয়ার সমীকরণ :

‘সি’ গ্রুপে ফেভারিট হিসেবেই মাঠে নামবে ফ্রান্স। এ গ্রুপে তাদের সঙ্গে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া, পেরু ও ডেনমার্ক। তাই শেষ ষোলোতে পৌঁছাতে বড় বাধায় পড়তে হচ্ছে না দলটিকে। আর দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচ তারা মুখোমুখি হতে পারে নাইজেরিয়ার। গত বিশ্বকাপেও দ্বিতীয় রাউন্ডে সুপার ঈগলদেরই পেয়েছিলো তারা। এছাড়াও আইসল্যান্ড কিংবা ক্রোয়েশিয়াও হতে পারে তাদের প্রতিপক্ষ।

আর কোয়ার্টার ফাইনালে তাদের সম্ভাব্য প্রতিপক্ষ হতে পারে পর্তুগাল। এ বাধা উতরাতে পারলে সেমিতে পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলই হতে পারে তাদের সম্ভাব্য প্রতিপক্ষ। আর ফাইনালের শিরোপা লড়াইয়ে স্পেন, জার্মানি কিংবা আর্জেন্টিনাকে পেতে পারে দলটি। 

সেরা তারকা:

পল পগবা : ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড তারকা পল পগবাই ফ্রান্সের মধ্যমণি। দারুণ বল নিয়ন্ত্রণ করেন, পায়ের কাজও চমৎকার। যে কোন প্রান্ত থেকে বল ড্রিবলিং করতেও কোন ভয় পান না। তবে চলতি মৌসুমের বেশ লম্বা সময়ই ইনজুরির কারণে মাঠের বাইরে ছিলেন। এছাড়াও কোচ হোসে মরিনহোর সঙ্গেও সম্পর্কটা ভালো না থাকায় নিয়মিত ছিলেন না এ তারকা। তবে ফ্রান্সের মাঝমাঠের নিয়ন্ত্রণ নির্ভর করবে পগবার পা জোড়ার উপরই।

আঁতোয়া গ্রিজম্যান : গ্রিজম্যানের গোলের উপর অনেকটাই নির্ভর করে ফ্রান্স। গত কয়েক বছর ধরেই দুর্দান্ত খেলে আসছেন অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদের এ খেলোয়াড়। সম্প্রতি জিতেছেন ইউরোপা লিগের শিরোপা। রাজি থাকলে খুব শিগগীরই দেখা যাবে মেসি-সুয়ারেজের বার্সেলোনায়। লিগে ৩০ ম্যাচে করেছেন ১৯ গোল, আর ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় ৮টি। 

কিলিয়ান এমবাপে : মোনাকো থেকে গত মৌসুমটা ধারে পিএসজিতে খেলেছেন এমবেপে। ১৬৬ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে চলতি মৌসুমে অবশ্য পাকাপাকিভাবে হয়ে যাবেন প্যারিসের ক্লাবটির। ১৯ বছরের এ সোনার ছেলে যুব ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের সেরা খেলোয়াড়। চলতি মৌসুমে ৪৪ ম্যাচে করেছেন ২১ গোল। তাই ফ্রান্সের তুরুপের তাস হতে পারেন এ তরুণও।

শক্তি: আক্রমণভাগ দারুণ শক্তিশালী ফ্রান্সের। উসমান ডেম্বেলে, আঁতোয়া গ্রিজমান, কিলিয়ান এমবাপের সঙ্গে থাকবেন অলিভিয়ে জিরু। আর মাঝমাঠ নিয়ন্ত্রণে আছে পগবার মতো খেলোয়াড়। এমনকি ডিফেন্সও দারুণ শক্তিশালী। মেন্দি, উমতিতি, ভারানের মতো তারকা খেলোয়াড়রা রয়েছেন এ বিভাগে।

দুর্বলতা : শৃঙ্খলা ও অভিজ্ঞতা। একাদশের বেশিরভাগ খেলোয়াড়ই তরুণ। আর ফ্রান্সের চিরাচরিত সমস্যা শৃঙ্খলা তো থাকছেই। যৌন কেলেংকারি হতে শুরু করে নানা ধরণের অপকর্মে লিপ্ত হতে দেখা গিয়েছে দেশটির খেলোয়াড়দের। পেট্রিক এভরার মতো খেলোয়াড়রা দর্শক পিটিয়ে নিষিদ্ধ হয়েছিলেন। দলকে শক্ত হাতে নিয়ন্ত্রণ না করতে পারলে বেশ ঝামেলাতেই পড়তে হতে পারে দেশমকে।

 

Comments

The Daily Star  | English

Food inflation above 10% for half a year, why?

Experts say raising policy rate would have little impact on lowering food prices

3h ago