চীনের ‘রেশমপথ’ পুনর্জাগরণ প্রস্তাবে ভারতের ‘না’

প্রাচীন রেশমপথের কথা ইতিহাসের শিক্ষার্থীদের জানা রয়েছে। তৎকালীন বিশ্বে সেই পথ ধরেই সৃষ্টি হয়েছিল প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য তথা এশিয়া, ইউরোপ এবং আফ্রিকার কিছু অংশের মধ্যে আন্তমহাদেশীয় বাণিজ্য। এর সঙ্গে ছিল রাজনৈতিক যোগসূত্রও।
SCO
১০ জুন ২০১৮, চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা (এসসিও)-এর ১৮তম শীর্ষ বৈঠকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে স্বাগত জানান। ছবি: এপি

প্রাচীন রেশমপথের কথা ইতিহাসের শিক্ষার্থীদের জানা রয়েছে। তৎকালীন বিশ্বে সেই পথ ধরেই সৃষ্টি হয়েছিল প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য তথা এশিয়া, ইউরোপ এবং আফ্রিকার কিছু অংশের মধ্যে আন্তমহাদেশীয় বাণিজ্য। এর সঙ্গে ছিল রাজনৈতিক যোগসূত্রও।

প্রাচীনকালে জল ও স্থল পথে সেই বাণিজ্য সক্রিয় রাখতে মূল ভূমিকা রেখেছিল চীন। কেননা, মূলত মহাপ্রাচীরের দেশ থেকে আমদানি করা হতো উৎকৃষ্টমানের রেশম। আর রেশম আনার সেই পথই পরিচিত পায় ‘রেশমপথ’ বা ‘সিল্করুট’ হিসেবে।

পরবর্তীতে, বিভিন্ন রাজনৈতিক ডামাঢোলের মধ্যে হারিয়ে যায় সেই রেশমপথ। নুতনভাবে সেই পথকে আবারও জাগিয়ে তুলতে বা চীনের বাণিজ্য আরও বাড়ানোর সুপ্ত বাসনা নিয়ে বর্তমান বিশ্বের দ্বিতীয় অর্থনৈতিক মহাশক্তি এই দেশটি উদ্যোগ নিয়েছে ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড় ইনিশিয়েটিভ’-এর; সংক্ষেপে এটিকে বিআরআই বলা হয়।

গত ৯ জুন চীনের পূর্বাঞ্চলীয় শহর শিংদাও-এ শুরু হয় আট সদস্যের সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার (এসসিও) শীর্ষ বৈঠক। দুই দিনের সেই বৈঠকের শেষ দিনে প্রাচীন ‘রেশমপথ’ পুনর্জাগরণ প্রকল্পকে যোগ করে ১৭-পৃষ্ঠার একটি ঘোষণাপত্র আসে আয়োজকদের পক্ষ থেকে। সেই প্রস্তাব সব সদস্যরাষ্ট্র গ্রহণ করলেও শুধু ভারতই এর বিরোধিতা করে।

বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা জানায়, চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং এসসিও-এর ১৮তম শীর্ষ বৈঠকে সদস্যদেশগুলোর মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধির জন্যে বিআরআই-এর যে প্রস্তাব দেন তা সংস্থার সাতটি সদস্যরাষ্ট্র মেনে নিয়েছে। সেই প্রস্তাবিত প্রকল্পে কাশ্মিরের পাকিস্তান অংশের অন্তর্ভূক্তি নিয়ে বিরোধিতা করেছে সংস্থাটির একমাত্র সদস্যরাষ্ট্র ভারত।

এর আগে, সম্মেলনে যোগ দেওয়া ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সংস্থাটির সদস্য দেশগুলোর মধ্যে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের পক্ষে কথা বলেন। তবে তিনি সেই যোগাযোগের বিষয়টিকে সুনির্দিষ্ট করতে বলেন। সে বিষয়ে অন্য দেশের ভৌগলিক সার্বভৌমত্বের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার উপেদেশও দেন তিনি।

সম্মেলনের প্লেনারি অধিবেশনে মোদি বলেন, “সংস্থার সদস্যদেশগুলোর সঙ্গে সব ধরণের যোগাযোগকে আমরা অগ্রাধিকার দেই।” তিনি সড়ক যোগাযোগের সাফল্যও কামনা করেন তাঁর বক্তৃতায়।

কিন্তু, সংস্থাটির ঘোষণাপত্রে ভারতের আপত্তি সেই প্রস্তাবিত ‘রেশমপথ’ আবারও সচল করতে কোন বাধা সৃষ্টি করবে কিনা তা এখনই বলা যাচ্ছে না।

উল্লেখ্য, ২০০১ সালে মধ্যএশিয়ার ছয়টি দেশ নিয়ে চীনের সাংহাই শহরে প্রতিষ্ঠিত হয় সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা। প্রথম দিকে, সংস্থাটির সদস্য দেশগুলো ছিল চীন, রাশিয়া, কিরগিজ প্রজাতন্ত্র, কাজাখস্তান, তাজিকিস্তান এবং উজবেকিস্তান। ২০১৭ সালে ভারত এবং পাকিস্তানকে সংস্থাটির সদস্য হিসেবে নেওয়া হয়।

এই সংস্থার সদস্যরাষ্ট্রগুলোর জনসংখ্যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৪২ শতাংশ এবং বৈশ্বিক জিডিপিতে তাদের অবদান শতকরা ২০ ভাগ।

Comments

The Daily Star  | English

S Alam sons: They used fake pay orders even to legalise black money

Ashraful Alam and Asadul Alam Mahir, two sons of controversial businessman Mohammed Saiful Alam, deprived the state of Tk 75 crore in taxes by legalising Tk 500 crore in undisclosed income, documents obtained by The Daily Star have revealed.

5h ago