শেষ মুহূর্তের গোলে মিশরের হৃদয় ভাঙল উরুগুয়ে
দলের সেরা তারকা মোহাম্মদ সালাহ ফিরতে পারলেন না ইনজুরি থেকে। তার উপর শক্তির বিচারে অনেক এগিয়ে উরুগুয়ে। তাই রক্ষণভাগ ধরে রেখেই খেলেছিল মিশর। ৮৯ মিনিট পর্যন্ত আগলেও রেখেছিল। কিন্তু শেষ মিনিটে দুর্ভাগ্য ভর করে ফারাওদের। ডিফেন্ডার হোসে মারিয়া গিমেনেজের গোলে ১-০ গোলে স্বস্তির জয় পায় উরুগুয়ে।
তবে পুরো ম্যাচে দুইবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন উরুগুয়েকে দারুণভাবে আটকে রেখে দারুণ প্রশংসাই পায় মিশর। দলের সেরা তারকাকে ছাড়া মাঝে মধ্যেই কাউন্টার অ্যাটাকও ভালোই করেছিল তারা। ম্যাচের শুরুতে সুবিধা করে উঠতে পারেনি কোন দলই।
৮ মিনিটে লুইস সুয়ারেজের কাছ থেকে বল পেয়ে দারুণ চেষ্টা করেছিলেন এডিসন কাভানি। কিন্তু তার শট ডান দিকে ঝাঁপিয়ে পরে লুফে নেন মিশর গোলরক্ষক মোহামেদ এল শেনাউই। দুই মিনিট ভালো সুযোগ পেয়েছিল মিশরও। নিজেদের অর্ধ থেকে উড়ে আসা বল ঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ নিতে পারেননি ত্রেজেগুয়ে। ফলে তার দুর্বল শট ধরে নিতে কোন সমস্যায় পড়তে হয়নি উরুগুয়ের গোলরক্ষক ফার্নান্দো মুসলেরাকে।
প্রথমার্ধে গোল করার দারুণ সুযোগ এসেছিল একবারই। ২৩ মিনিটে কর্নার থেকে বল পেয়ে হেড করে লক্ষ্যভেদ করতে চেয়েছিলেন দিয়াগো গডিন। কিন্তু ঠিকভাবে করতে না পারায় গোলপোস্টের ছয় গজের মধ্যে ফাঁকায় বল পেয়ে যান সুয়ারেজ। তবে তার ডান পায়ের জোরালো শট লক্ষ্যে থাকেনি। বারপোস্ট ঘেঁষে বাইরে চলে গেলে হতাশা বারে দুইবারের চ্যাম্পিয়নদের। এরপর এ অর্ধে আর তেমন কোন বড় আক্রমণ করতে পারেনি কোন দলই। ফলে গোলশূন্য ভাবেই শেষ হয় প্রথমার্ধ।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই এগিয়ে যেতে পারতো উরুগুয়ে। নিজেদের অর্ধ থেকে উড়ে আসা বল দারুণভাবে নিয়ন্ত্রণ করে সুয়ারেজের উদ্দেশ্যে ঠেলে দিয়েছিলেন কাভানি। দারুণ শট নিয়েছিলেন বার্সা তারকা। গোলরক্ষক এল শেনাউই দারুণভাবে ফিরিয়ে দেন সে আক্রমণ।
৭১ মিনিটে আগুয়ান আহমেদ ফাতহি দারুণ এক শট নিয়েছিলেন বারে। তবে বাঁ প্রান্তে ঝাঁপিয়ে ফিরিয়ে দেন উরুগুয়ে গোলরক্ষক। কাউন্টার অ্যাটাকে দিনের সবচেয়ে সহজ সুযোগ পেয়েছিলেন সুয়ারেজ। কাভানির বাড়ানো বলে গোলরক্ষককে একা পেয়ে গিয়েছিলেন তিনি। শেষ মুহূর্তে গোলরক্ষককে কাটাতে গিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলেন সুয়ারেজ। শট নেন গোলরক্ষক বরাবরই। ফলে এগিয়ে যাওয়ার সহজ সুযোগ মিস করে উরুগুয়ে।
৮১ মিনিটে দারুণ শট নিয়েছিলেন মোহাম্মদ এলনেনি। কিন্তু গোলবারের সামান্য উপর দিয়ে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। দুই মিনিট পর সুয়ারেজের হেড থেকে বল পায়ে দুর্দান্ত শট নিয়েছিলেন কাভানি। গোল যেন প্রায় হয়েই গিয়েছিল। শেষ মুহূর্তে বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে অসাধারণ দক্ষতায় ফিরিয়ে দেন গোলরক্ষক এল শেনাউই।
৮৭ মিনিটে ডি বক্সের সামান্য বাইরে ফ্রি কিক পায় উরুগুয়ে। তাতে দারুণ এক শট নিয়েছিলেন কাভানি। কিন্তু দুর্ভাগ্য তা দের। বল বাড়ে লেগে ফিরে আসলে আবারও হতাশায় ডোবে দলটি। কিন্তু সৌভাগ্যের দরজাটা খোলে নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে। কর্নার থেকে পাওয়া বলে দারুণ হেডে লক্ষ্যভেদ করেন গিমেনেজ।
এরপর যোগ করা পাঁচ মিনিটে গোল শোধের জন্য বেশ মরিয়া হয়ে খেলে মিশর। দারুণ চেপে ধরেও গোল আদায় করতে ব্যর্থ হলে হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় মিশরকে। ১-০ গোলের স্বস্তির জয়ে পূর্ণ ৩ পয়েন্টের সন্তুষ্টি নিয়ে মাঠ ছাড়ে উরুগুয়ে।
Comments