রোমাঞ্চ ছড়ানো ম্যাচে রোনালদোর হ্যাটট্রিক
কি হয়নি এই ম্যাচে। একবার এগিয়ে গেছে পর্তুগাল তো আবার ফিরেছে স্পেন। পরে যখন স্পেন এগিয়ে থেকে প্রায় ম্যাচ শেষ করে দিচ্ছিল ম্যাচ তখনই আবির্ভাব ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর। দুর্দান্ত এক হ্যাটট্রিকে বিশ্বকাপ শুরু করেছেন তিনি। রোমাঞ্চ ছড়িয়ে ৩-৩ গোলে ড্র হয়েছে স্পেন-পর্তুগাল ম্যাচ।
৯০ মিনিট হতে আর বাকি মিনিট দুই। ডি বক্সের সামান্য বাইরে থেকে ফ্রি কিক পেলেন রোনালদো। দল ৩-২ গোলে পিছিয়ে। বিরতির আগেই করেছিলেন দুই গোল। দলকে সমতায় ফেরানোর চ্যালেঞ্জ আছে, আছে হ্যাটট্রিকের হাতছানি। সরাসরি ফ্রি-কিক নিলে ডান পায়ের শর্টস একটু গুটিয়ে নেন,দু'পা ছড়িয়ে দাঁড়ানোর ভঙ্গিটাও ট্রেডমার্ক। এবারও তাই করলেন। পরে যা হলো তা চোখ জুড়িয়ে দেখার মতো। সবার মাথার উপর দিয়ে অর্ধ চন্দ্র এঁকে যেন পাঠিয়ে দিলেন জালে। মোহাবিষ্ট করে রাখার মতো গোল। রোনালদোর হাত ধরেই এবারের বিশ্বকাপ দেখল প্রথম হ্যাটট্রিক।
পুরো ম্যাচে স্পেন খেলেছে সম্মিলিত ছন্দে। তাদের হয়ে গোল দুই গোল করেছেন ডিয়াগো কস্তা, আরেকটি নাচো। আর পর্তুগালের যেন একজনই খেলোয়াড়। দলের ত্রাতা, দর্শকের বিনোদনের খোরাক যার পায়ে। খেললেনও তিনি অনেকদিন মনে রাখার মতো।
রোনালদোর তিন গোলের প্রথমটি খেলা শুরু হতেই। প্রথমবার বল পায়ে নিয়েই আক্রমণে যান পর্তুগিজ অধিনায়ক। ফল পেতেও দেরি হয়নি। তিন মিনিটের সময় বাঁদিক থেকে বিপদজনকভাবে বক্সে ঢুকে পড়েছিলেন। তাকে আটকাতে ফাউল করে বসেন নাচো। পেনাল্টি থেকে দলকে এগিয়ে নেন রোনালদো। এই গোলের মধ্য দিয়ে ইতিহাসের চতুর্থ ও পর্তুগালের প্রথম ফুটবলার হিসেবে আলাদা চার বিশ্বকাপে গোল করার রেকর্ডে নাম লেখান বর্ষসেরা এই ফুটবলার।
গোল পাওয়ার পর তেতে উঠে স্পেনও। মুহুর্মুহু আক্রমণে ব্যতিব্যস্ত করে রাখে পর্তুগিজ ডিফেন্স। এসবের মধ্যে পালটা আক্রমণে গিয়ে সুযোগ তৈরির চেষ্টায় ছিলেন রোনালদো। কাজও হয় তাতে। বিরতির এক মিনিট আগে বক্সের খানিকটা বাইরে থেকে রোনালদোর নেওয়া শট হাতে লাগিয়েও ছেড়ে দেন স্প্যানিশ গোল রক্ষক ডেভিড ডি গিয়া। দ্বিতীয় গোল করে অনেকটা দাপটে বিরতিতে যায় পর্তুগাল।
৫৫ মিনিটে আবার স্পেনকে খেলায় ফেরান কস্তা। বক্সের বাইরে পাওয়া ফ্রি কিক ডান প্রান্ত দিয়ে গেলে সেখান থেকে সার্জিও বুসকেটসের হেড যায় কস্তার পায়ের সামনে। টোকা মেরে বল জালে জড়িয়ে দেন তিনি। মিনিট তিনেক পরই হাফ ভলিতে দারুণ এক গোল করে নাচো পেনাল্টির ফাউলের প্রায়শ্চিত্ত করেন। প্রথমবার ম্যাচে এগিয়ে যায় স্পেন। সে দাপট ধরে রাখছিল তারা।
এগিয়ে থেকে খেলাই শেষ করে দিচ্ছিল স্প্যানিশরা। হার যখন প্রায় নিশ্চিতের দিকে তখনই মোড় ঘুরে দেন পাঁচ বারের ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলার। খেলার অন্তিম দিকে তার আক্রমণ আটকাতে ফাউল করে বসেন পিকে। ডি-বক্সের সামান্য বাইরে থেকে পাওয়া ফ্রি কিকে রোনালদোর অনিন্দ্য সুন্দর গোল এবারের বিশ্বকাপকেই যেন নতুন মাত্রায় রাঙিয়ে দিয়েছে।
Comments