জার্মানিকে ভড়কে দেওয়া লোজানোই কি এবারের বড় আবিষ্কার?

প্রতি আসরেই কোন না কোন নতুন তারকার জন্ম দেয় বিশ্বকাপ। গতবারই যেমন সবাইকে ছন্দময় ফুটবলে মাতিয়ে পাদপ্রদীপের আলোয় চলে এসেছিলেন কলম্বিয়ার হামেস রদ্রিগেজ। বিশ্বকাপের পরপরই সুযোগ পেয়েছিলেন রিয়াল মাদ্রিদের মতো ক্লাবে, সেখান থেকে পরে গিয়েছেন বায়ার্ন মিউনিখেও। এই বিশ্বকাপেও যে ব্যতিক্রম হবে না, তা বলেই দেয়া যায়। কিন্তু কে হবেন সেই উদীয়মান তারকা? গতকালের ম্যাচের পর সেই দাবিটা কিন্তু জোরেশোরেই জানিয়ে রাখলেন মেক্সিকোর হার্ভিং লোজানো।
Hirving Lozano
দারুণ গোলে জার্মানিকে হারানোর নায়ক মেক্সিকোর লোজানো। ছবিঃ রয়টার্স

প্রতি আসরেই কোন না কোন নতুন তারকার জন্ম দেয় বিশ্বকাপ। গতবারই যেমন সবাইকে ছন্দময় ফুটবলে মাতিয়ে পাদপ্রদীপের আলোয় চলে এসেছিলেন কলম্বিয়ার হামেস রদ্রিগেজ। বিশ্বকাপের পরপরই সুযোগ পেয়েছিলেন রিয়াল মাদ্রিদের মতো ক্লাবে, সেখান থেকে পরে গিয়েছেন বায়ার্ন মিউনিখেও। এই বিশ্বকাপেও যে ব্যতিক্রম হবে না, তা বলেই দেয়া যায়। কিন্তু কে হবেন সেই উদীয়মান তারকা? গতকালের ম্যাচের পর সেই দাবিটা কিন্তু জোরেশোরেই জানিয়ে রাখলেন মেক্সিকোর হার্ভিং লোজানো।

বিশ্বকাপ শুরুর আগেই আলোচনায় ছিলেন লোজানো। ডাচ ক্লাব পিএসভি আইন্দহোফেনের হয়ে প্রথম মৌসুমেই নিজের জাত চিনিয়েছেন মেক্সিকান এই তরুণ। ২৯ ম্যাচে ১৭ গোল করে নজর কেড়েছেন সবার। শুধু গোল করার দক্ষতাই নয়, উইংয়ে গতি দিয়েও আলাদা করে চোখে পড়েছেন লোজানো। আর গতকালকের জার্মানির বিপক্ষে জয়সূচক গোলের পর নজরে পড়ে গেছেন পুরো বিশ্ববাসীরই।

মেক্সিকান ক্লাব পাচুকায় যোগ দিয়েছিলেন ২০০৯ সালে। এরপর চার মৌসুম খেলে ১২০ ম্যাচে করেছেন ৩১ গোল। গত মৌসুমেই যোগ দিয়েছিলেন পিএসভিতে, প্রথম মৌসুমেই করেছেন বাজিমাত।

জাতীয় দলে আসার আগে মেক্সিকোর অনূর্ধ্ব ২০ ও অনূর্ধ্ব ২৩ দলে খেলে এসেছেন লোজানো। ২০১৫ সালের কনক্যাকাফ অনূর্ধ্ব ২০ টুর্নামেন্টে মেক্সিকো দলের সদস্য ছিলেন লোজানো। প্রথম ম্যাচেই মেক্সিকোর ৯-১ গোলের জয়ে করেছিলেন দুই গোল, ছিল চার অ্যাসিস্ট। বাকি টুর্নামেন্টে আরও তিন গোল ও এক অ্যাসিস্ট করেছিলেন। মেক্সিকোকে শিরোপা জেতানোর পথে সর্বোচ্চ ৫ গোল নিয়ে জিতেছিলেন গোল্ডেন বুটও।

মেক্সিকোর ২০১৬ অলিম্পিকের স্কোয়াডেও ছিলেন লোজানো। প্রথমবারের মতো জাতীয় দলে ডাক পান বর্তমান কোচ হুয়ান কার্লোস ওসোরিওর অধীনেই, ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে। সেনেগালের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচ দিয়ে জাতীয় দলে অভিষেক, প্রথম ম্যাচেই করেছিলেন অ্যাসিস্ট। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের তৃতীয় ম্যাচে কানাডার বিপক্ষে ৩-০ গোলে জেতা ম্যাচে মেক্সিকো  জাতীয় দলের হয়ে নিজের প্রথম গোল করেন লোজানো।

তবে লোজানোকে দলে নেয়ায় শুরুর দিকে বেশ সমালোচনার মুখেই পড়তে হয়েছিল কোচ ওসোরিওকে। বিশ্বকাপে মেক্সিকান দলের দায়িত্বে থাকা ওসোরিও নিজেই জানিয়েছেন সে কথা, ‘আমার মনে হয় এখন অনেকেই বলবেন, মেক্সিকো জাতীয় দলের একাদশে হার্ভিংয়ের মতো খেলোয়াড়ের জায়গা অবধারিত। কিন্তু দুই বছর আগে চিত্রটা এমন ছিল না। আমি সবসময়ই ওকে দলে আনার সিদ্ধান্তের দায়ভার নিজের উপর নিয়ে এসেছি, সমালোচনাও সহ্য করেছি। আমার মনে আছে, প্রথম যখন হার্ভিংকে দলে আনি আমি, অনেকেই বলেছিলেন, এই ছেলের গতি ছাড়া আর কিছুই নেই।’

তবে সব বিতর্ক পেছনে ফেলে এসে হার্ভিং লোজানো এখন মেক্সিকো সমর্থকদের মধ্যমণি। শুধু মেক্সিকোর নয়, এবারের বিশ্বকাপেরই অন্যতম বড় আবিষ্কার হতে পারেন লোজানো, এমনটা বলছেন অনেক ফুটবল বিশেষজ্ঞই। লোজানোর জাতীয় দল সদস্য এরিক গুতিয়েরেজ যেমন বলছেন, এই বিশ্বকাপের উদীয়মান তারকা হয়ে যেতে পারেন লোজানো, ‘আমি বিশ্বাস করি, লোজানো যেভাবে বিকশিত হয়ে উঠেছে, এবারের বিশ্বকাপের অন্যতম আকর্ষণীয় আবিষ্কার হতে পারে সে। আমরা দুজন দুজনকে ছোটবেলা থেকে চিনি। ও খুবই সাহসী একজন ফুটবলার। আশা করছি ওর দারুণ একটা বিশ্বকাপ কাটবে, আর মেক্সিকোকে আরও সামনে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে।’

এরই মধ্যে ইংল্যান্ড ও স্পেনের বড় বড় কিছু ক্লাব লোজানোকে নিজেদের নজরে রেখেছে। বিশ্বকাপ মাতাতে পারলে হয়তো বিশ্বকাপ শেষেই বড় কোন ক্লাবে দেখা যেতে পারে ২২ বছর বয়সী প্রতিভাবান এই ফুটবলারকে! 

 

Comments

The Daily Star  | English

US must intervene to stop Gaza carnage

Says ‘helpless’ UN chief as 16 more die in the Palestinian enclave

1h ago